আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ফাঁস হওয়া ফোনালাপের তদন্ত দাবি করেছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এটি নির্দোষ ফোনালাপ বলে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। এতে আলোচিত বিষয়গুলো সম্পর্কে নিরপেক্ষ তদন্ত, জনগণের কাছে সত্য তুলে ধরা এবং জবাবদিহিতা অত্যন্ত জরুরি।’
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘আইনমন্ত্রী ও উপদেষ্টার ফোনালাপে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। আলোচ্য বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ও সরকারের আইটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের নাম উচ্চারণ, উচ্চ আদালতের দুজন বিচারপতির নাম উল্লেখ ও এর প্রভাব এবং সচিবালয়ে প্রশাসনের স্বাভাবিক কার্যকলাপে অনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং প্রভাব বিস্তার সংক্রান্ত।’
অডিও ফাঁসের ঘটনায় তদন্ত হবে বলে এর আগে নিজেই জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সচিবালয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নেতাদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ২০ কোটি টাকার অনুদান তুলে দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘অবশ্যই এটি তদন্তে পদক্ষেপ নেয়া হবে। ব্যাপারটা হচ্ছে যারা এটা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করছে, তারা এতটাই দেউলিয়া যে একটি ইনোসেন্স কনভারসেশনকে পুঁজি বানানো হচ্ছে।
‘ব্যাপারটা হচ্ছে, টেলিফোনে আমি একজন উপদেষ্টার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলাম। তিনি একটা ব্যাপারে আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টার একটা প্রজেক্ট, যেটা হচ্ছে তার ব্রেইন চাইল্ড। এটা তদন্ত করা হবে। কিন্তু এটাকে গুরুত্ব দেয়া মনে হয় সঠিক হবে না।’
নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটিকে ‘সার্কাসটিক’ উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘অনুসন্ধান কমিটিতে নাম প্রেরণ এবং নির্বাচন কমিশন গঠন একেবারেই অর্থহীন।’
১৩তম নির্বাচন কমিশন গঠন করতে সার্চ কমিটি এরইমধ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠনসহ ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে নাম নিয়েছেন।
সার্চ কমিটির কাছে এখনো কোনো নাম দেয়নি বিএনপি। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার দাবিতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে দলটি।
এদিকে বিএনপির নাম প্রস্তাবের জন্য সার্চ কমিটি সময় বাড়িয়েছে। এই সুযোগ গ্রহণ না করে এমন অবস্থানের কথা জানালেন দলের মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি মনে করে জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারগুলোর নির্বাচনে এই সত্য প্রমাণ হয়েছে।’
ক্ষমতাসীন সরকারকে অবৈধ সরকার উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন পরিচালনা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। একটি অংশীদারিত্বমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক পার্লামেন্ট ও সরকার প্রতিষ্ঠাই বর্তমান সংকট উত্তরণের একমাত্র পথ।’
ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখার নীল নকশার অংশ হিসেবে পুনরায় নির্বাচন কমিশন গঠনে সরকারি তৎপরতা সেই চক্রান্তেরই অংশ বলেও মনে করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা।
বিএ