আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা বাড়ে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের জমিজমা, বাড়িঘর দখল করে। এমনকি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের সময়টাতেও তাদের ওপর বেশি অত্যাচার হয়েছে ধর্মের ভিত্তিতে, তাদের জমিজমা দখল করে নিয়েছে।
সম্প্রতি নড়াইলের সাহাপাড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাটের বিষয়ে বিএনপির প্রতিনিধিদলের তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ সব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আ.লীগের নির্বাচনী প্রচারণা যখন থাকে, তখন তারা বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের রক্ষক দাবি করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আ.লীগ ক্ষমতায় আসার পরে তাদের ওপরই অত্যাচারটা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ওপর ক্রমান্বয়ে এবং ক্রমাগতভাবে অত্যাচার-নির্যাতন বেড়েই চলছে। দেখা যায় যে সম্পূর্ণভাবে তাদের লোকেরাই এ ঘটনাগুলোর সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
ঠাকুরগাঁও এলাকায় রাজবংশী সম্প্রদায়ের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমার নিজের নির্বাচনী এলাকায় রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ প্রচুর, এক লাখ সাত হাজার ভোটারই আছেন রাজবংশী লোকেরা। তাঁদের মধ্যে একজন আমার ছাত্রই ছিলেন। নাম ছিল অমর রায়। সে খুব চমৎকার একটা কথা বলত বক্তৃতা দেওয়ার সময়— আমাদের দেশি ভাষায় ‘হামরা হচ্ছি বিহার দিনের পগরি। মানে, বিয়ের দিনের পাগড়ি হচ্ছি আমরা।
একটা দিনই পাগড়িটা পরা হয়, আর কখনো পরা হয় না। নির্বাচনের দিনই ওই পাগড়িটা পরতে হয়, ভোট দেওয়ার সময় নৌকাকে ভোট দিতে হয়। আর বাকিটা সময় আমাদের খোঁজ থাকে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসলে বিষয়টা তা নয়। এখানে আ.লীগ তাদের মনে করে সংখ্যালঘুরা তাদের সম্পত্তি, তারাই এঁদের রক্ষক, তারা ভোটটোট যা কিছু দেবে, আ.লীগকে দিতে হবে। আর যা কিছু অত্যাচার-নির্যাতন এবং তাদের সম্পদকে লুট করা, এটাও তাদের।’
বিএনপির মহাসচিব সদ্য প্রকাশিত জনশুমারিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, আজকে পত্রিকায় এসেছে, এবারের জনশুমারিতে দেখা গেছে, গতবারের (২০১১ সাল) চেয়েও হিন্দু সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা কমে গেছে। শতকরা প্রায় এক ভাগের বেশি। হিসাবে দেখা গেছে, প্রায় ৭৫ লাখ।
সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনাগুলো জনদৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখন গোটা দেশের মানুষ একটাই কথা বলছে যে এ দেশের কোনো নির্বাচন হতে পারে না আ.লীগ সরকারে থাকলে।
নির্বাচন কমিশন নিজে এখন বলতে বাধ্য হচ্ছে যে রাজনৈতিক একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে, সব দলের অংশগ্রহণ না হলে, সে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। ঠিক এই সময়ে এই দাবিকে পাশ কাটিয়ে দেওয়ার জন্য এটাও একটা কৌশল।
বিএ/