ওমর ফারুক :
বরাদ্দ জনবলের অর্ধেক দিয়ে চলছে রাজশাহী মহানগরীর ঘোড়ামারা পোস্ট অফিসের কার্যক্রম। চাহিদা অনুযায়ী জনবল না থাকায় পারিবারিক সঞ্চয়ী টাকা উঠাতে বা অন্যান্য লেনদেন করতে গিয়ে গ্রাহকদের চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এতে করে গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেক সময় গ্রাহকরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও টাকা উঠাতে পারেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেসব সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী অবসরে চলে গেছেন তারা পেনশনের বা পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের টাকা উঠাতে পোস্ট অফিসেন যান। বিশেষ করে প্রতিমাসের ১ থেকে প্রায় ১০ তারিখ পর্যন্ত গ্রাহকদের ভিড় বেশি থাকে। গ্রাহকরা গিয়ে প্রথমে টোকেন জমা দেয়। টোকেন জমা দেওয়ার পর দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে কেটে গেলেও তারা টাকা তুলতে পারেন না। লাইনেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
এর কারণ হিসেবে লেনদেন করতে আসা গ্রাহকরা বলছেন, যারা সঞ্চয়ীপত্র শাখায় কাজ করে তারা কম্পিউটার চালনায় অদক্ষ। অদক্ষতার কারণে এসব কর্মচারীরা দ্রুততার সাথে গ্রাহকের টাকা তোলার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে না। এ জন্যই গ্রাহকদের বেশি সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
যারা পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের টাকা উঠাতে তাদের অধিকাংশই বয়ষ্ক ও নারী। তাদের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকাও কষ্টকর হয়ে যায়।
নজরুল নামের এক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, আমি সকাল ৯টায় পারিবারিক সঞ্জয়পত্রের টাকা উঠাতে গিয়েছিলাম। কিন্ত দুপুর পার হয়ে গেলেও সেই টাকা হাতে পায়নি। কারণ এই শাখায় যারা কাজ করে তারা কম্পিউটার চালনায় অদক্ষ। এ জন্য প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে তাদের বেশি সময় লাগে।
আরেন বয়ষ্ক নারী নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, আমি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় টাকা উঠাতে গিয়ে দুপুর ২টায় টাকা পেয়েছি। এত সময় কষ্ট করে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।
পোস্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ শাখায় সহকারী পোস্ট মাস্টারসহ ৫ জন কাজ করেন। এরমধ্যে দু’জন অপারেটর রয়েছে। ৫ জন কর্মচারী এ শাখা দেখার পরেও গ্রাহকরা দ্রæত সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
ঘোড়ামারা পোস্ট অফিসে বরাদ্দ জনবলের অর্ধেকই নেই। অফিসে ১ জন পোস্ট মাষ্টার, ১ জন সহকারী পোস্ট মাস্টার, ১ জন হিসাবরক্ষক, ১ জন ট্রেজারার, ১ জন নাইটগার্ড, অপারেটরের ১৩টি পদ থাকলেও ৭ জন রয়েছে ৬টি পদ খালিয়ে রয়েছে। আর ১১ জন পোস্টম্যানের বিপরীতে রয়েছে ৫ জন।
গ্রাহকদের ভোগান্তি ও কর্মচারীদের গাফিলতি অদক্ষতার কথা অস্বীকার করে ঘোড়ামারা পোস্ট অফিসের মাস্টার সোহেলী সুলতানা বলেন, সপ্তাহে দুইদিন বেশি ভিড় থাকে। এ দু’দিন ছাড়া অন্যদিনগুলোতে তেমন ভিড় থাকে না। যখন সবাই একসাথে সবাই আসে তখন সিরিয়াল অনুযায়ী টাকা দিতে হয়। টাকা-পয়সার ব্যাপারের কারণে একটু সতর্কতার সাথে কাজ করতে হয় কর্মচারীদের। এ জন্য সামান্য দেরি হয়। তবে গ্রাহকদের দ্রæততার সাথে কাজ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কাউকে হয়রানি বা ভোগান্তির মধে ফেলার চেষ্টা করা হয় না।
তিনি আরো বলেন, ঘোড়ামারা পোস্ট অফিসে অর্ধেক জনবলের পদ খালি রয়েছে। এই অফিসে যতজন জনবল থাকার কথা রয়েছে তার অর্ধেক রয়েছে। অর্ধেকে লোক নেই। যার কারণে একটু সমস্যা হয়। সঞ্চয়ী শাখায় ১ জন অপারেটর অন্য শাখা থেকে টেনে দেওয়া হয়েছে। আমরা গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে