সাংবাদিকতা পেশা সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং। সংবাদ সংগ্রহ এবং প্রকাশের সময় সাংবাদিকদের প্রায়শই নানান বিপদ,দুর্ঘটনা, হুমকির সম্মুখীন হতে হয়। বিভিন্ন ব্যক্তি/ব্যক্তি বর্গ বা মহলের অনিয়ম, দূর্ণীতি, শোষণ-নিপীড়ন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদকব্যবসায়ীদের নৈরাজ্য ইত্যাদি সংবাদ প্রকাশের পরও সংবাদকর্মীদের উপর ধেয়ে আসে প্রাণনাশের হুমকি, হামলা-মামলা। অনেক সময় সংবাদকর্মী দের পরিবারকেউ রেহাই দেওয়া হয় না। তাদের উপরও চলে নানান অত্যাচার। এই সমস্ত মানসিক-শারীরিক অত্যাচারের ভয়ে অনেক সংবাদকর্মীই নিরপেক্ষ ভাবে ক্ষমতাশীল বা অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশে দ্বিধাবোধ করেন। বিভিন্ন চাপে পরে তারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করতে অনীহা প্রকাশ করেন। সাম্প্রতিক কালে নিরপেক্ষ বা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে ব্যর্থতার জন্য সংবাদমাধ্যম এবং সংবাদকর্মীরা সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছেন। তবে, এমন কিছু সংবাদকর্মীও রয়েছেন যারা হামলা-মামলা, অত্যাচার-নিপীড়ন কে অগ্রাহ্য করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন। তারা সকল প্রকার চাপ কে তোয়াক্কা না করে সর্বদা সত্য প্রকাশে বদ্ধপরিকর থাকেন। এমন সংবাদকর্মীদের কথা তাদের সংগ্রামের কথা সকলের জানা উচিত। যেন সংবাদকর্মীদের উপর ‘ চাটুকারিতা ‘ করার যে তকমা লেগেছে তা যেন কিছুটা মলিন হয়। সাধারণ মানুষ যেন জানতে পারে সংবাদকর্মীরা কত ত্যাগ স্বীকার করে সমাজ ও দেশের কথা বিবেচনা করে নিজেদের কর্তব্যবোধ থেকে সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশ করেন।
এমনই একজন সাংবাদিক হলেন রাজশাহীর অন্যতম একজন সংগ্রামী ও নিপীড়িত সিরিয়র সাংবাদিক নজরুল ইসলাম জুলু।
রাজশাহীর স্থানীয় স্বনামধন্য “দৈনিক বার্তা” পত্রিকায় কাজের মাধ্যমে শুরু হয় তার সংবাদকর্মী হিসেবে আত্মপ্রকাশ। রাজশাহীর কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিকদের অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি এই পেশায় নিজেকে নিযুক্ত করেন। শুরু থেকেই নিয়ে ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য তিনি অত্যন্ত পরিশ্রম করেছেন। শুরুতে তিনি “ফটো সাংবাদিক ” হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ছবি সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাত-বিরেতে ঘুরে বেড়িয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছবি তুলেছেন জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্য।
তার কর্মজীবন অত্যন্ত বর্ণাঢ্য বলা যায়। উনি রাজশাহীর স্থানীয় পত্রিকা সহ স্বনামধন্য এবং বহুলপ্রচলিত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক যেমন – দৈনিক বার্তা, দৈনিক আজকের কাগজ, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক কালেরকণ্ঠ, দৈনিক ঘোষণা, আইএনবি বার্তা সংবাদ সংস্থা, , খবর বাংলাদেশ ইত্যাদি প্রত্রিকায় কাজ করেছেন।
বিভিন্ন গোলাগুলি ও বোমাবর্ষণের মধ্যে সরাসরি উপস্থিত থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছবিও তুলেছেন। তার ধারণকৃত ছবির মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা তুলে ধরেছেন। স্থিরচিত্র ধারণ করতে গিয়ে অনেকবার আহত হয়েছেন; কয়েকবার ভেঙে ফেলা হয়েছিল তার ক্যামেরা। স্থিরচিত্র প্রকাশিত হওয়ার পর পেয়েছেন প্রাণনাশের হুমকি। তারপরও দাপটের সাথে নির্ভীক সৈনিকের মতো কাজ করে গেছেন।
দুধর্ষ সন্ত্রাসী “বাংলা ভাই”, ” শাইখ আব্দুর রহমান ” ও তার সহচরীদের নানান সন্ত্রাস, ত্রাস,তাদের শোডাউনের স্থিরচিত্র ক্যামেরাবন্দি করে বাংলাদেশের জনগণের সামনে তা প্রকাশ করেছেন। বাংলা ভাইয়ের কর্মকাণ্ড ক্যামেরাবন্দী করতে ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন। একপর্যায়ে বাংলা ভাইয়ের অনুসারীর হাতে ধরাও পরেন। তাও তিনি পিছু হটেন নি। গাছে ঝুলিয়ে নিরীহ মানুষকে পিটিয়ে মারা, রাস্তায় রাস্তায় শোডাউন, রাজশাহী শহরের বুকে দলবল নিয়ে গাড়িবহরে শক্তিপ্রদর্শন সহ বাংলা ভাই সংক্রান্ত বিভিন্ন খবর আর স্থির চিত্র উনি প্রকাশ করেছিলেন সাহসিকতার সাথে। পরবর্তীতে উনি সংবাদমাধ্যমে লেখালেখি শুরু করেন।
সংবাদকর্মীদের কে বিভিন্ন সংবাদপ্রকাশের জন্য বিভিন্ন মহলের হাতে নিপীড়িত হতে হয়। নজরুল ইসলাম জুলুও তার ব্যতিক্রম না। নানান অরাজকতা, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, মাদকব্যবসা, ইত্যাদি বিষয়ে তিনি সব সময় সরব ছিলেন। সত্য প্রকাশে কখনও আপোষ করেননি কারও সাথে।মাথা নত করেননি কোনো অপশক্তির কাছে। সব সময় সত্য কে তুলে ধরেছেন তার স্থিরচিত্র ও সংবাদের মাধ্যমে।
বিভিন্ন ক্ষমতাবান ব্যক্তি বর্গের অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে তাকে হামলা মিথ্যা মামলার মুখোমুখি হতে হয়েছে অনেকবার। স্বার্থান্বেষী মহলের স্বার্থে ঘা লাগার জন্য যোগসাজশ করা হয় তার বিরুদ্ধে। তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে আঘাত করা হয়। আঘাত হানা হয় তার পরিবারের বিরুদ্ধেও। মিথ্যা মামলা দেয়া হয় সত্য লেখার জন্য। বাংলাদেশে একজন প্রকৃত সংবাদকর্মী এইভাবেই বিভিন্ন সময়ে সরকারের আমলে সত্য সংবাদ প্রকাশের জন্য লাঞ্চিত হোন।
নজরুল ইসলাম জুলু নগরীর বিভিন্ন অরাজকতা, বিশৃঙখলা, চাদাবাজি, সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম, ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে খবর এবং এত লাঞ্চনা হামলা-মামলার পরও প্রকাশ করে যাচ্ছেন। ২০১৬ সালে নজরুল ইসলাম জুলু বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের জন্য নিজের অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম খবর২৪ঘন্টা ডট কম প্রকাশ করেন। তিনি ও তার সংবাদ মাধ্যম খবর২৪ঘন্টা ডট কম
নগরীর মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম হ্রাস, বিভিন্ন সন্ত্রাসী মূলক অপরাধ নিরসনের লক্ষ্যে মহানগর পুলিশকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। পুলিশের মাদক বিরোধী কার্যক্রমে সহযোগিতা করার জন্য তিনি ও তার প্রতিষ্ঠান পেয়েছেন স্বয়ং রাজশাহীর তৎকালীন শামসুদ্দিন আহমেদ পুলিশ কমিশনার এর কাছ থেকে বিশেষ সম্মাননা ও প্রশংসা পত্র পান তিনি। এযাবৎকালে তিনি সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন ১৫ টি প্রশংসা করতে পেরেছেন।
তার অনলাইন মাধ্যম খবর২৪ঘন্টা ডট কম এর মাধ্যমে সব সময় সত্য প্রকাশ করেন। দল মত ব্যতিরেকে সকল খবর প্রকাশ করেন নির্ভীকতার সাথে। সকল অরাজকতার বিরুদ্ধে লেখেন। তার মতো একজন নির্ভীক সংবাদকর্মীর অভাব রয়েছে। দেশে যদি প্রকৃত নির্ভীক সংবাদকর্মী থাকতো তাহলে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসীরা আজ মাথা গজিয়ে উঠতে ভয় পেত।
বি এ