শেরপুর(বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরের বিকাল বাজার এলাকায় পৌর কিচেন মার্কেটের নির্মাণ কাজ শেষ ও হস্তান্তর হওয়ার আগেই তড়িঘড়ি করে দোকানঘর পজিশন বরাদ্দে অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার তোরজোড়ের অভিযোগ উঠেছে পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে এলাকাবাসী ও ব্যবসায়রা ফুসে উঠেছে। যে কোন সময় আন্দোলনের রুপ নিতে পারে। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার প্রেক্ষিতে দোকান-পজিশন বরাদ্দের দাবী জানিয়েছে সচেতনমহল ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
পৌরসভা কার্যালয়ের দেয়া তথ্য সুত্রে জানা যায়, ঐহিত্যবাহি শেরপুর পৌরসভার বিকাল বাজার এলাকায় বিশ^ব্যাংকের অর্থায়নে ৫তলা পৌর কিচেন মার্কেট নির্মাণ কাজ ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হয়। এ মার্কেট নির্মাণে প্রাক্কলিত ব্যায় ১৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলেও ধার্য হয়েছে ১৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। টেন্ডারের মাধ্যমে বগুড়ার মের্সাস কবির ট্রেডার্স এ কাজটি পান। সেই অনুযায়ী ঠিকাদার একরামুল কবীর সন্টু ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। পৌর কিচেন মার্কেট নির্মাণ কাজের ২০২০ সালের জানুয়ারী মাস পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়া হলেও পরবর্তীতে দেশের কয়েকমাস ধরে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির ভয়াবহতার কারণে এ নির্মাণ কাজের পুনঃ সময়সীমা চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে এ মার্কেট নির্মানের কাজ শেষ হতে এখনো প্রায় ৪মাস সময় লাগবে বলে সচেতনমহল ও ব্যাসায়ীরা অভিযোগ তুলেছেন।
এদিকে ওই মার্কেটের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওই মার্কেঠটি হস্তান্তর না করতেই অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে দোকানঘর পজিশন বরাদ্দের জন্য পায়তারায় মেতে উঠেছে পৌর প্রশাসন। ৫ তলা বিশিষ্ট মার্কেটের প্রকারভেদে ২৫২ টি দোকানের অনুকুলে গত ২৩ জুলাই বরাদ্দ বিজ্ঞপ্তি দেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে পৌর কিচেন মার্কেটের ইজারা গ্রহনকারীদের জন্য আবেদন ফরম বিক্রয় ও দাখিলের জন্য ১৮ আগষ্ট পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। এদিকে পৌর কিচেন মার্কেটের ৩০ ভাগ কাজ শেষ না হতেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওই মার্কেটটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর না করতেই পৌরকর্তৃপক্ষ দোকানঘর বরাদ্দ দেয়ার প্রক্রিয়ায় ফুঁসে উঠেছে সংশ্লিষ্ট মার্কেটের তৎকালীন ব্যবসায়ী ও সচেতনমহল।
ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ১০ আগস্ট রোববার দুপুরে উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) জামশেদ আলাম রানা পৌর কিচেন মার্কেটের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। এসময় পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার, পৌর প্রকৌশলী, কাউন্সিলর, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধি সহ স্থানীয় গণ্যমান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী হুয়ামুন কবীর জানান, পৌর কিচেন মার্কেট নির্মানের কাজ প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে, বাঁকী কাজ নির্ধারিত তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে আশাবাদি। তাছাড়া কাজ শেষ হলে হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবেনা।
এ প্রসঙ্গে পৌর মেয়র আলহাজ¦ আব্দুস সাত্তার বলেন, তৎকালীন পৌর বিকাল বাজারের ব্যবসায়ী বিভিন্ন রাস্তাপথে ব্যবসা বাণিজ্য করে আসছে। তাইতো তাদের কথা ভেবেই নব নির্মিত পৌর কিচেন মার্কেটের দোকান পজিশন বরাদ্দ দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।
এ প্রসঙ্গে শেরপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) জামশেদ আলাম রানা বলেন, কতিপয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই মার্কেটের কাজ তদারকি ও পরিদর্শন করেছি। তবে কাজ শেষ না হওয়া অবধি পজিশন বরাদ্দ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারকদের কাছে সুপারিশ করা হবে।
খবর২৪ঘন্টা/নই