খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ ওঠে দুজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এবং ইমামের বিরুদ্ধে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রয়াত সাবেক মন্ত্রীকে নিয়ে ‘কটূক্তি’ করেছিলেন। এই অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু গ্রেপ্তারদের ক্ষমা করে দিয়ে তাদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন খোদ মোহাম্মদ নাসিমের পুত্রবধূ সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষিকা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিপক্ষে তার অবস্থানের কথাও তুলে ধরেছেন।
২০ জুন তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দেন। সেখানে লিখেছেন, ‘ভীষণ মনোঃকষ্ট নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম নিজের বাবার অপমানে। তাতে গণতন্ত্র ব্যাহত হয়েছে। তারপর আমি নিজে চোখটা বন্ধ করে অনেকক্ষণ ভাবলাম যে বাবা থাকলে কি করতেন। উত্তরটা পেয়ে গেলাম। তিনি হাসতেন, বলতেন ক্ষমা করতে। গ্রেপ্তার বা শাস্তি কিছুই চাইতেন না। এরকমই মানুষ ছিলেন তিনি। আমি নিজেও কখনো পারিবারিক কিছু কখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনিনি। একটা ছবি পর্যন্ত না। নিজে ১৩ দিন আইসিইউতে ছিলাম। বাবাকে হারালাম। তারপর এসব নিষ্ঠুর আচরণ। তাই উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম।’
গত ১৩ জুন তিনি মারা যান সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এর আগে তিনি বেশ কিছুদিন বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন৷ করোনায় আক্রান্ত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী নাসিম৷ পরে তিনি করোনামুক্ত হলেও স্ট্রোক করেন৷ এতে তার অবস্থার অবনতি ঘটে৷ মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর৷
সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী আরো লিখেছেন, ‘কোনো শাস্তি বা মামলা আমরা চাই না। এই আইনের বিরুদ্ধে আমি নিজেও দাঁড়িয়েছি। আর কোনো দলকানা মানুষও আমি নই। বাবা তাঁর শেষ সময় পর্যন্ত দেশের জন্যে কাজ করেছেন। তারপরও যদি তাঁর কোনো ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে আপনারা তাঁকে ক্ষমা করবেন। কন্যা হিসেবে আমি দোয়া চাই ওনার জন্যে। হিংসা বিদ্বেষ কখনো ভালো কিছু হতে দেয় না। সকল শিক্ষক মুক্তি পান, ভালো থাকুন। গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই করা মানুষটা যেনো জান্নাতবাসী হোন। আমাকেও ক্ষমা করবেন সাময়িক উত্তেজনার জন্যে। আমিও যেনো আমার সীমিত সামর্থ্য মানুষের পাশে থাকতে পারি। ভালো থাকবেন আপনারা।’
প্রসঙ্গত, শনিবার মধ্যরাতে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক সিরাজাম মুনিরাকে আইসিটি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার করে তাজহাট থানা পুলিশ। এছাড়া বুধবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক কাজী জাহিদুর রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়ার্টার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
একই অভিযোগে মঙ্গলবার হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার হোসেনপুর গ্রাম থেকে সিকান্দার হোসাইন আকবরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি মসজিদে ইমামতি করেন।
খবর২৪ঘন্টা/নই