আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনে ফের মহামারি রূপ ধারণ করছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। দেশটির রাজধানী বেইজিংয়ে বেড়েই চলছে ভাইরাসটির সংক্রমণ। গত কয়েকদিনের মধ্যে শহরটিতে আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসেবেই একশ’ ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে নতুন করে করোনায় কারো মৃত্যু না হলেও পরিস্থিতি ক্রমেই আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের এই সংস্থাটি।
ধারণা করা হচ্ছে শহরের শিনফাদি পাইকারি বাজার থেকে এ সংক্রমণ ছড়িয়েছে। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে শনিবারই বাজারটি বন্ধ করা হয়। বাজারটিতে যারাই গেছেন, তাদেরকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে চেকপোস্ট।শহরে ঢোকা এবং বের হওয়ার রাস্তায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেইজিং থেকে বাইরে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। চীনের অন্তত ১০ টি শহর থেকে বেইজিংয়ে ঢোকাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বেইজিংয়ের বহু স্কুল, খেলার মাঠ। প্রাথমিক স্কুলগুলো খোলার সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। শপিংমল এবং অফিসগুলোতে আবার বহাল করা হয়েছে দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করার বিধি, বহাল হয়েছে জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা।
এদিকে চীনে ফের করোনা ফিরে আসায় ইউরোপের দেশগুলোর সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেয়া ও লকডাউন বিধিনিষেধ শিথিলের দিকে ইঙ্গিত করে এসব দেশেও কোভিড-১৯ সংক্রমণ ফের শুরুর বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে ডব্লিউএইচও।
সোমবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসিস বলেন, ‘যেসব দেশ ইতোমধ্যে সংক্রমণ কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে সেসব দেশের সরকারগুলোকেও সম্ভাব্য সংক্রমণ পুনরুত্থানের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
চীনে নতুন সংক্রমণ শুরুর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এর উৎপত্তি এবং বিস্তার এখনো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
সংস্থাটির ইমার্জেন্সি পরিচালক ড. মাইক রায়ান বলেন, চীন দ্রুত এবং ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়ায় নতুন সংক্রমণ সীমিত রাখা গেছে। তিনি বলেন, ‘তারপরেও বেইজিং একটি বিশাল, বহুমাত্রিক এবং সংযুক্ত শহর, সে কারণে উদ্বেগ থেকেই যায়।’ তবে পরিস্থিতির ওপর নিবিড় নজর রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক টেড্রোস আধানোম গেব্রিয়াসিস জানান, করোনাভাইরাসের মহামারিতে নতুন করে আক্রান্তদের ৭৫ শতাংশই আক্রান্ত হচ্ছে দশটি দেশে। এর বেশিরভাগই আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায়। এছাড়া আফ্রিকা, পূর্ব ইউরোপ, মধ্য এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান তিনি।খবর২৪ঘন্টা /এবি