বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় চলতি বোর মৌসুমে ধান সংগ্রহ অভিযান মুখ থুবড়ে পড়েছে। চলতি বছরের মে মাসের ১২ তারিখ থেকে ধান, চাল, গম সংগ্রহ অভিযান শুরু হলেও কৃষকরা আসছে না ধান দিতে খাদ্য গুদামে। এবার বেকায়দায় পড়েছেন খাদ্য বিভাগের লোকজন। খাদ্য বিভাগের স্থানীয় কর্তকর্তারা লটারীতে বাছাইকৃত কৃষকদের তথ্য সংগ্রহ করে সরকারি খাদ্য গুদামে বিশেষ করে ধান নিয়ে আসার জন্য বার বার অনুরোধ সত্তে¡ও এবছর কৃষরা সাঁড়া দিচ্ছেন না। যদিও এই অভিযান চলবে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত। এ পর্যন্ত মাত্র বাগমারা খাদ্য গুদামে ১৩ টনের মতো ধান সংগ্রহ হয়েছে। খোঁজ নিয়ে যানা যায়, খোলা বাজারে এবার ধানের দাম বেশি। ফলে চাষীরা গুদামে আর ধান দিচ্ছেন না। করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি ত্রাণে চালের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়েছে। চাল সরবরাহে মিল মালিকরা সরকারি প্রণোদনা পাচ্ছেন। তাই মিল মালিকরা বাজার থেকে ধান কিনে চাল তৈরী করছেন। এ কারণে বেড়ে গেছে বোরো ধানের দাম। তাই চাষীরা খাদ্য গুদামে ধান না দিয়ে বাজারে বিক্রি করছে। যে কারণে খাদ্য বিভাগের বোরো ধান সংগ্রহ অভিযান মুখ থুবড়ে পড়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর বোরো ফলন ভালো হওয়ায় দ্বি-গুণ লক্ষ্যমাত্রা ধারণ করা হয়েছিল এবং মোটামুটি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিতও হয়েছে। তারপরও সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে এবার কৃষক বা চাষীরা তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। স্থানীয় খাদ্য বিভাগের কর্তকর্তারা বলছেন, চাষীরা সরকারিভাবে ধান বিক্রি করছে না। আর চাষীরা বলছেন, এ বছর বাজারে ধানের দাম সরকারি দামের তুলনায় সামান্য কিছু কম। আবার সরকারি খাদ্য গুদামে ধান দিতে গেলে কৃষরা পড়েন নানা বিড়ম্বনায়। তাই দাম কিছু কম হলেও চাষীরা গুদামে ধান না দিয়ে বাজারেই বিক্রি করছে। বাগমারার গনিপুরের কৃষক আব্দুল আহাদ জানান কয়েক বছর ধরে গুদামে গুদামে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম এতো বেশি ছিল যে, প্রকৃত চাষীরা কেউ ধান দিতে পারেনি। বিড়ম্বনার শিকার চাষীরা এই মৌসুমে আর গুদাম মুখী হচ্ছেন না। বাগমারায় এবার ধান সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ১শ ৩৭ মে.টন । এ পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ১৩ টন। বাগমারার খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভবানীগঞ্জ এলএসডি আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমরা লটারীতে বাছাইকৃত কৃষকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে তাদেরকে সরকারি নির্ধারিত মূল্যে ধান সরবরাহের জন্য বলা হলেও কৃষকরা কোনো সাঁড়া দিচ্ছেন না। দেখা যায় ধান ব্যবসায়ীরা কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান সংগ্রহ করছে। এতে কৃষক পরিবহন খরচ ও আর্দ্রতা যাচাইয়ের হয়রানির হাত থেকে বাঁচার জন্যই তারা গুদাম মুখী হচ্ছে না। তার পরও ধীর গতিতে হলেও ধান সংগ্রহ অভিযান চলছে।খবর২৪ঘন্টা /এবি