খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: দেশে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি করোনাভাইরাসজনিত কোভিড-১৯ রোগে চিকিৎসক ও নার্সরাও আক্রান্ত হচ্ছেন এবং তা প্রতিদিনই বাড়ছে।
দেশে করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পর থেকে গত ৪৪ দিনের মাথায় আজ সোমবার পর্যন্ত দেশে ১৭০ জন চিকিৎসক ও ৮০ জন নার্স এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন দুজন চিকিৎসক। একজন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার রাতে বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশনের (বিডিএফ) প্রধান সমন্বয়ক ডা. নিরূপম দাশ গণমাধ্যমকে চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আজ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে ১৭০ জন ডাক্তার, ৮০ জন নার্স মিলে ২৫০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।’
এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ৯৪ জন ডাক্তার, প্রাইভেট হাসপাতালে ৩৩ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) আটজন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) আটজন ডাক্তার আক্রান্ত হয়েছেন।
নিরূপম দাশ বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে ১৪৩ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। রাজধানী ঢাকার মধ্যে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ২৫ জন, বিএসএমএমইউতে আছেন আটজন, ঢাকা মেডিকেল কলেজে ছয়জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নয়জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) আছেন আটজন, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে একজন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জে ১৪ জন, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আক্রান্ত হয়েছেন ২২ জন। ময়মনসিংহে সাতজন, গাজীপুরের কালীগঞ্জে ১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বাকিরা দেশের অন্যান্য জেলায় আক্রান্ত। এ ছাড়া সেবা দিতে গিয়ে ৮০ জন নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের সংস্পর্শ আসায় প্রায় চারশর অধিক স্বাস্থ্যকর্মী কোয়ারেন্টিনে চলে গেছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, ‘ডাক্তার, নার্স আক্রান্ত হওয়ার কারণ মূলত পর্যাপ্ত পিপিইর অভাব। আমি যে ইউনিটে কাজ করি সেখানে প্রতিনিয়ত খুবই স্পর্শকাতর রোগীকে পাঠানো হয়। এখানে ডাক্তারদের খুবই উদ্বেগের সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে। আমাদের এখনো পিপিই দেওয়া হয়নি। আমাদের তো পরিবার সংসার জীবন আছে। একদিকে বলা হচ্ছে, পর্যাপ্ত সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে; অপরদিকে আমরা পাচ্ছি না। এ তো রীতিমতো সুসাইড করার মতো অবস্থা।’
বিডিএফের প্রধান সমন্বয়ক ডা. নিরুপম দাশ বলেন, ‘যে হারে চিকিৎসকরা আক্রান্ত হচ্ছেন তাতে আমাদের ভয় হলো কিছুদিন পরে চিকিৎসা দেওয়ার মতো চিকিৎসক থাকবেন কি না। এতে স্বাস্থ্য খাত ভেঙে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।’ চিকিৎসকদের এভাবে আক্রান্ত হওয়ার পেছনে নিম্নমানের পিপিই আর রোগীদের তথ্য লুকানোর প্রবণতাকে দায়ী করছেন চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা।
খবর২৪ঘন্টা/নই
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।