দুর্গাপুর প্রতিনিধি: দুর্গাপুরে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ ফেরত লোকদের নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন দুর্গাপুর উপজেলাবাসী। গত কয়েক দিনে ৭০জন লোক ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে দুর্গাপুর উপজেলায় এসেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ আগত এই লোকদের তালিকা প্রস্তুত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাছে প্রেরণ করেছেন। বর্তমানে উপজেলায় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ ফেরত লোকজন কেউ আত্মগোপনে আবার কেউ প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ প্রশাসন হানা দিলে সাময়িকের জন্য তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এছাড়াও উপজেলা প্রতিদিন ২০-৩০ (মিনি ট্রাক) মাছ যায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। প্রশাসন কঠোর হলেও প্রতিদিন রাত্রিকালীন সময়ে গড়ে এসব মাছের ট্রাক যাচ্ছে ঢাকা ও নারায়ণঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এসব লোকজন প্রতিদিন ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ যাতায়াত নিয়ে উপজেলায় করোনার ঝুঁকি বেড়েছে বলে আশষ্কা করছেন স্থানীয়রা। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ হতে দুর্গাপুর এসেছেন ৭০জন ব্যক্তি। এদের একটি তালিকা তৈরি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সম্প্রতি সময়ে দুর্গাপুর উপজেলায় প্রায় অর্ধশতাধিক লোক ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন। এদের কেউ এনজিও কর্মী, গামেন্টর্স কর্মী ও বিভিন্ন ধরনের চাকুরীজীবি রয়েছেন। তারা কৌশলে মাছের ট্রাক ও বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে এলাকায় আসছেন। এর মধ্যে দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামের রয়েছেন ৫-৬জন। ওই এলাকার সোনাইর পুত্র রুবেল হোসেন। তিনি গত সপ্তাহ খানেক আগে নারায়ণগঞ্জ এসেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে থানার পুলিশ রুবেলের বাড়িতে হানা দেয়। এবং তাকে বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিতে থাকতে বলেন। তিনি কিছু ওইসব নিদের্শ পালন করছেন না অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। উপজেলার আলিয়াবাদ গ্রামে নারায়ণগঞ্জ থেকে হাসান ও তার দুলাভাই। তারা আসার পর থেকেই সর্দিজ্বরে আক্রান্ত বলে অভিযোগ করছেন প্রতিবেশীরা। এছাড়াও ওই গ্রামে ঢাকা থেকে এসেছেন আনসারের সদস্য ইসরাফিল, গামেন্টস কর্মী জুবায়ের রনি, তার স্ত্রী ও ছোট বাচ্চা। হাটকানপাড়া থেকে প্রতিদিন ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ যাতায়াত করছেন। এদের কানপাড়া এলাকার জাকির, আক্কাস, সমসের। এরা সবাই ট্রাক ড্রাইভার। গত দুই দিন আগে উপজেলার পাইকতলী গ্রামে ঢাকা এসে দুইজন। হাসান ও তার স্ত্রী। আসার পর থেকেই তারা সর্দিজ্বরে আক্রান্ত বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এদিকে, দুর্গাপুর পৌর সদর সিংগা গ্রামে গত রাতে নারায়ণগঞ্জ দুই জন এসেছেন এদের আলাল মেয়ে আখি ও স্বামী। এছাড়াও পৌর এলাকার রৈপাড়া গ্রামের শামীম নামের এক ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ বাসায় এসেছেন। এলাকাবাসীয় অভিযোগ, ভিত্তিতে স্থানীয় উপজেলার ওইসব বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে হোম কোয়ারেন্টিতে থাকতে বলাও তারা কিছু মানছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খুরশীদা বানু কনা বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন এমন লোকজনের তালিকা করা হয়েছে। থানার পুলিশ ওই সব বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে তাদের হোম কোয়ারেন্টিন মানতে নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। এরপর তারা বিভিন্ন জায়গায় হোম কোয়ারেন্টিন মানছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এখন থেকে যারা হোম কোয়ারেন্টিন মানছে না তাদের জরিমানা করা হবে বলে জানান ওসি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহসীন মৃধা বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ হতে আগত লোকজন হোম কোয়ারেন্টিন রুলস ভঙ্গ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমন কি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন (স্কুল ভবনে) আটকিয়ে রাখা হবে। এই সংকটময় অবস্থায় ইউএনও মহসীন মৃধা সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
খবর২৪ঘন্টা/নই
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।