1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
করোনার প্রভাব: রাজশাহীতে বেকার দিন কাটাচ্ছেন দিনমজুর শ্রমিকরা - খবর ২৪ ঘণ্টা
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন

করোনার প্রভাব: রাজশাহীতে বেকার দিন কাটাচ্ছেন দিনমজুর শ্রমিকরা

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৯ মারচ, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা ভাইরাস আতঙ্কে স্থবির হয়ে পড়েছে উত্তরের শহর রাজশাহী। করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করতে জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে কাজ করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানুষকে বাড়ি থেকে বাইরে বিনা প্রয়োজনে না বাড়ানোর জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রশাসনের এমন ভূমিকায় সচেতন অনেক মানুষ এখন আর বাইরে বের হচ্ছে না এজন্য শুনশান নীরবতা রয়েছে এই নগরে। তারপরও পরিবারের সদস্যদের মুখে দুই বেলা দুই মুঠো ভাত তুলে দেয়ার জন্য সকাল হলেই নির্ধারিত স্থানে গিয়ে কাজের জন্য অপেক্ষা করছেন দিনমজুর ও শ্রমিকরা। এসব শ্রমিকরা টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে করোনাভাইরাস এর ভয়াবহ তা সম্পর্কে শুনলেও যেন পিছুটান নেই তাদে। কারণ বাড়িতে বসে থাকলে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের পেট চালানো দায় হয়ে পড়বে। অবশ্য রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নগরে বাস করা নিম্নআয়ের ২০ হাজার পরিবারকে ৩০ টি ওয়ার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সামগ্রী হিসাবে ১০ কেজি করে চাল ও ৫০০ গ্রাম ডাল দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে কিছু সহায়তা দেয়ার কথা শোনা গেছে। তবে সেটি নিম্নআয়ের মানুষের জনসংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে মানুষকে রক্ষা করতে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তার অংশ হিসেবে উত্তরের নগরী রাজশাহী থেকে দূরপাল্লার সকল বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ট্রেন চলাচল এবং গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর আস্তে আস্তে কর্মহীন হয়ে পড়েন শ্রমিকরা। গত কয়েকদিন আগেও কাজ করেছেন তারা। কিন্তু এখন আর তেমন কাজ পাচ্ছেন না শ্রমিকদের বেকার সময় কাটাতে হচ্ছে। কাজ না পেলেও এসব দিনমজুররা কাজের সন্ধানে ঠিকই সকালবেলা বের হচ্ছেন কাজের সন্ধানে। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, নগরের এসব দিনমজুর ও শ্রমিক শ্রেণীর মানুষজন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে কাজের সন্ধানে নগরের রেলগেট, কোট স্টেশন মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে বসে থাকেন। যারা কাজ করে নেন তারা এসব স্থানে গিয়ে পছন্দমত শ্রমিকদের মজুরি ঠিক করে কাজে নিয়ে যান। নির্দিষ্ট একটি সময়ে কাজ করে যা পান তা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে চাল-ডালসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে নিয়ে আসেন। কিন্তু এতদিনের অভ্যাসে যেন ভাটা পড়েছে করোনাভাইরাস এর প্রভাবের কারণে। অনেকেই এখন আর কাজ পাচ্ছেন না। কাজ না পেলেও তারা নিয়মিত কাজের সন্ধানে বের হয়ে বসে বসে অপেক্ষা করেন। এমনি এক দৃশ্য দেখা গেছে রাজশাহী মহানগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট রেলগেট এলাকায়। গত শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাজের সন্ধানে কয়েকজন শ্রমিক বসে আছেন। তবে তারা সতর্ক তাই মাস্ক পড়তে ভুলেননি। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে এসব শ্রমিকগণ মাস্ক পরে বসে রয়েছেন। এদিন সকাল থেকে ২-৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কাজ পাননি তারা। এমনটাই জানিয়েছিলেন বসে থাকা শ্রদ্ধা শ্রমিকরা।
কথা হলে শ্রমিকরা জানান, সকাল হলেই তারা ডালি কোদাল নিয়ে কাজের সন্ধানে রেলগেট পয়েন্টে এসে বসে থাকেন। যাদের কাজ করার লোক প্রয়োজন হয় তারা তাদের মজুরি নির্ধারণ করে কাজে নিয়ে যান। কিন্তু গত ১০-১৫ দিন থেকে কাজে কিছুটা কম পাচ্ছেন। বিশেষ করে গত ৪-৫ দিন ধরে তারা তেমন কাজ পাচ্ছেন না। কাজ না পাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের মুখে দুবেলা দুমুঠো ভাত তুলে দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। আরো জানান, তাদের মত অনেক শ্রমিক দিন এনে দিন খায় তাদের তেমন সঞ্চায়ী অর্থ নেই। কাজ না পেলে দিন চালাতে কষ্ট হয়। নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক শ্রমিক বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে সতর্ক থাকার জন্য লিফলেট লিফলেট মাস্ক ফ্রি পেয়েছি। তবে কেউ অর্থ দেয়নি। মাস্কের সাথে সাথে অর্থ প্রয়োজন। শুধু মাস্ক দিয়ে কি হবে সরকারসহ সমাজের বিত্তবানদের কাছে এই দুঃসময়ে আমাদের মত নিম্নশ্রেণীর মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
আমরা কাজ করে খায় কারো সহায়তা আশা করি না তবে দায়ে পড়ে সাহায্য কামনা করছি। সমাজের যারা বিত্তবান আছেন তারা এগিয়ে আসলে এই মজুর শ্রেণীর কষ্ট থাকবে না। কাজ পাচ্ছেন না তাহলে বসে আছেন কেন দীর্ঘ সময় ধরে এমন প্রশ্নের জবাবে এক শ্রমিক বলেন, যদি কাজ পাই তাই বসে আছি। কাজ পেলে কিছু অর্থ পাওয়া যাবে সেই অর্থ দিয়ে পরিবারের জন্য চাল ডাল কেনা যাবে এই আশায় বসে আছি।
এদিকে, নগরীর কোট স্টেশন মোড়েও প্রতিদিন কাজের সন্ধানে লোকজন বসে থাকে। তবে গত কয়েকদিন ধরে খুব কম সংখ্যক শ্রমিককে কাজের সন্ধানে বসে থাকতে দেখা গেছে। অন্য শ্রমিকের মাধ্যমে নিজের কাজ ঠিক করে নেই এমন কয়েকজনের সাথে কথা হলে নাম না প্রকাশ করার শর্তে তারা বলেন, কয়েকদিন ধরে কাজ কম পাচ্ছি এখন। যারা কাজের জন্য শ্রমিক নেন তারা এখন কাজ করাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তাই সংসার ছেলেমেয়ে নিয়ে বিপদে পড়েছি। আরেকজন বলেন, আমি গতকাল কাজের জন্য নির্ধারিত স্থানে গিয়েছিলাম কিন্তু কাজ পাইনি। এ অবস্থায় দিনমজুরদের পাশে দাঁড়াতে সমাজের বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
শুধু এই শ্রমিকরাই নয় সমাজের অসংখ্য দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা কাজ না পেয়ে বেকায়দা অবস্থার মধ্যে পড়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। শুধু মহানগর নয় জেলার নয়টি উপজেলাতেও কোন ভাইরাসের প্রভাবে দিনমজুর শ্রমিকরা বেকার সময় পার করছেন। যদিও রাজশাহী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নয়টি উপজেলায় খাদ্য সামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেই বরাদ্দকৃত খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শুুর হয়েছে ।

এমকে

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST