রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিপরিক্ষায় ৪৯ জন শিক্ষার্থী নূন্যতম পাস নম্বর না পেয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪৬ জনই ভর্তি হয়েছেন পোষ্য কোটায়। ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত কমিটি বিশেষ বিবেচনায় তাদের ভর্তির সুযোগ দিয়েছে।
গত বছরের ২১ ও ২২ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। চলতি বছরের ফেব্রæয়ারি মাসে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য এবার ১০০ নম্বরের এমসিকিউ ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হয়। পাস করার জন্য শিক্ষার্থীদের দুইটি মিলে ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পোষ্য কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানেরা ভর্তির সুযোগ পান। তাদের সন্তানদের জন্য বিভাগপ্রতি পাঁচ শতাংশ আসন বরাদ্দ আছে। ভর্তি পরীক্ষায় ‘এ’ ইউনিটে (মানবিক) ২২ জন, ‘বি’ ইউনিটে (ব্যবসায় শিক্ষা) ৬ জন এবং ‘সি’ ইউনিটের (বিজ্ঞান) ১৮ জন শিক্ষার্থী পাস না করেও পোষ্য কোটার মাধ্যমে বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। ভর্তি হওয়া ওই ৪৬ জন শিক্ষার্থীদের কেউই ন্যূনতম পাস নম্বর পাননি।
প্রসঙ্গত, এর আগে জানুয়ারি মাসে ‘বি’ ইউনিটের তিনজন পরীক্ষার্থী পাস না করেও বিশেষ বিবেচনায় ভর্তির সুযোগ পান।
এ বিষয়ে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মুখ্য সমন্বয়ক অধ্যাপক একরামুল হামিদ বলেন, ‘পোষ্য কোটায় ভর্তির জন্য প্রতিবছর প্রায় ৭০টি করে আসন থাকে। এ বছর প্রায় ৪০টির মতো আসন ফাঁকা ছিল। পাশাপাশি কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের সন্তানের ভর্তির জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। এসব কারণেই ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্তে তাদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’
‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মুখ্য সমন্বয়ক অধ্যাপক আহসান কবির বলেন, ‘ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্তে বিশেষ বিবেচনায় ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এমনটা প্রতিবছরই হয়।’
জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী গতকাল বিকেলে বলেন, ‘এইভাবে ভর্তির সুযোগ কবে দেওয়া হয়েছিল তা এই মূহুর্তে আমার মনে নেই।’
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক এস এম আবু বকর বলেন, ‘পাস না করেও বিশেষ বিবেচনায় ভর্তির সুযোগ দেওয়ার কথা আমি শুনিনি। তবে আমি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী কোটায় ভর্তির কমিটিতে ছিলাম। সেখানে এমন কিছু হয়নি।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে ভর্তির জন্য সাধারণ মেধার পাশাপাশি পাঁচ ধরনের কোটা রয়েছে। এর মধ্যে – ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী কোটায় মোট ৫০ জন, শারীরিক প্রতিবন্ধী কোটায় মোট ৫০ জন, মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটায় প্রতি বিভাগের আসন সংখ্যার পাঁচ শতাংশ, এবং বিকেএসপি কোটায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে মোট আসনের ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। তবে অন্য চারটি কোটায় পাস নম্বর না পেয়ে কারও ভর্তির সুযোগ পাওয়ার কথা জানা যায়নি।
এমকে