পাবনা ব্যুরো: পাবনার চাটমোহর উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া খাতুনের সাথে প্রতারণা করে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সেজে এ ঘটনা ঘটায় চক্রটি। এ বিষয়ে সাবেক ওই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
আলাপকালে সুফিয়া খাতুন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌর শহরের লাইসেন্স পরিদর্শক বাকি বিল্লাহ তাকে মোবাইলে ফোন দিয়ে বলেন, ‘আপা আপনার বেকারিতে এসিল্যান্ডসহ ভোক্তা অধিকারের লোকজন যেতে পারে। কারখানা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখেন। তাছাড়া জরিমানা করতে পারে।’ এর দুই মিনিট পর ০১৯১০-৫৪১৯৩৯ এই নাম্বার থেকে নিজেকে ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সুফিয়া খাতুন পরিচালিত বালুচর এলাকায় (উপজেলা সংলগ্ন) ‘বিপাশা বিস্কুট বেকারী’তে চাটমোহরের ইউএনওসহ অভিযান চালানো হবে বলে জানানো হয়।
তবে ২০ হাজার টাকা দিলে দিলে বেকারীতে যাবেন না বলে জানানো হয়। এরপর ভয় পেয়ে সুফিয়া খাতুন ওই নাম্বারে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা দেন। এর কিছুক্ষণ পর তাকে আরও ১০ হাজার টাকা চাইলে সুফিয়া খাতুনের সন্দেহ হয়। এ সময় তিনি ইউএনওর সাথে কথা বলতে চাইলে ফোনের মাধ্যমে একজনকে নকল ইউএনও সাজিয়ে কথা বলিয়ে দেয় ওই প্রতারক চক্র। পরে সন্দেহ হওয়ায় ইউএনও সরকার মোহাম্মদ রায়হানের সরকারি নাম্বারে ফোন দিলে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন তিনি। পরে সুফিয়া খাতুনকে তার অফিসে ডেকে পাঠান ইউএনও সরকার মোহাম্মদ রায়হান।
এরপর বিস্তারিত শুনে পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক বাকি বিল্লাহকেও ডেকে ফোন দেয়া এবং ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে বাকি বিল্লাহ ফোন দিয়ে সতর্ক করে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। পরে ইউএনও তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে চাইলে ওই ২০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার দেওয়ার কথা বলেন তিনি। তবে শুক্রবার পর্যন্ত ওই টাকা ফেরত দেননি বাকি বিল্লাহ। এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে সুফিয়া খাতুন কারো নাম উল্লেখ না করে চাটমোহর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত বাকি বিল্লাহ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে আমার মোবাইলে বিভিন্ন বেকারীর তালিকা চাইলে আমি তালিকা দেই। এরপর বেকারীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত যেতে পারে মর্মে সুফিয়া আপাকে সতর্ক করার জন্য ফোন দিয়েছিলাম। তবে কারা টাকা নিয়েছে বা কারা জড়িত এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’ তাহলে ইউএনওর সামনে টাকা ফেরত দিতে চাইলেন কেন এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ইউএনও স্যার আমার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে আামি ভয় পেয়ে টাকা ফেরত দিতে চেয়েছি।’
ইউএনও সরকার মোহাম্মদ রায়হান বলেন, এসিল্যান্ডের নাম ভাঙ্গিয়ে কীভাবে ফোন দেয় সে? ‘সতর্ক করার কাজ ওই লাইসেন্স পরিদর্শকের না। প্রতারণার সাথে প্রাথমিকভাবে বাকি বিল্লাহ’র সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে এবং পুলিশি তদন্তে সব বেড়িয়ে আসবে বলেও জানান তিনি।
চাটমোহর থানার ওসি সেখ নাসীর উদ্দিন বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি। মোবাইলের সূত্র ধরে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং এ ব্যাপারে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খবর২৪ঘন্টা/নই