খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: পাঁচতারা ওয়েস্টিন হোটেলে যুব মহিলা লীগ নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার গেস্টদের নাম ও যাবতীয় বিল-ভাউচারের কপি চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদক উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ ওইসব তথ্য চেয়ে রাজধানীর গুলশানের ওয়েস্টিন ঢাকা হোটেলের স্বত্বাধিকারীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন সোমবার। দুদক সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
রোববার এই কর্মকর্তাকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়ার পরদিনই ওই হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য চাওয়া হলো। পাপিয়া সম্পতি ও তাদের ব্যক্তিগত সহকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা তিনটি মামলার কপিও সোমবার পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ডিবির কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন দুদকের এই কর্মকর্তা।
সূত্র জানায়, ওয়েস্টিন হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো দুদকের চিঠিতে পাপিয়ার ভাড়া করা স্যুট, কক্ষ, সুইমিংপুল, খাওয়া, মদসহ অন্যান্য বিল-ভাউচারের সত্যায়িত কপি পাওয়া গেছে। ওই হোটেলে যেসব গেস্ট, বন্ধু-বান্ধব পাপিয়ার কাছে গেছেন তাদের নামের তালিকাও চাওয়া হয়েছে। তারা কোনো কক্ষ ভাড়া নিয়ে অবস্থান করে থাকলে ওইসব কক্ষের নম্বরসহ সংশ্নিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে।
ওয়েস্টিন হোটেলে পাপিয়ার তৈরি রঙ্গমঞ্চে কতো টাকা খরচ হয়েছে, ওই টাকা কিভাবে অর্জন করেছেন, টাকার উৎস্য কি- এসব তথ্য খঁজে বের করতে হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে আরও তথ্য চাওয়া হতে পারে।
জানা গেছে, হোটেলের ওইসব তথ্য ও ডিবি থেকে সংগ্রহ করা মামলার কপি স্টাডি করবেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। পরে পাপিয়া দম্পতির নামে-বেনামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, ব্যাংক-ব্যালান্সের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তাদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ পাওয়া গেলে আইনের আওতায় আনা হবে।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে এই সম্পতির বিরুদ্ধে অসামাজিক, অনৈতিক কাজে যুক্ত থেকে অবৈধ অর্থ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া যায়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা টের পেয়ে বিদেশে পালানোর সময় ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শামিমা নূর পাপিয়া, তার ব্যক্তিগত শেখ তায়্যিবা, পাপিয়ার স্বামী সুমন চৌধুরী ও তার ব্যক্তিগত সহকারী সাব্বির খন্দকারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১। তাদের কাছ থেকে জাল টাকা, ডলারসহ প্রায় সাড়ে ৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর গুলশানের পাঁচতারা হোটেল ওয়েস্টিনে পাপিয়ার আস্তানায় হানা দিয়ে এই দম্পতির অবৈধ কর্মকাণ্ডের তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা হয়।
রাজধানীর একাধিক পাঁচতারকা হোটেলে নারীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করা ও বিত্তশালীদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে।
পাপিয়ার নামে রাজধানী ঢাকা ও নরসিংদীতে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি রয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজধানীর ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডে পাপিয়ার বাসায় র্যাব অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বেশকিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করেছে।
যুব মহিলা লীগের বহিস্কৃত নেত্রী পাপিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকার বিমানবন্দর ও শেরেবাংলা নগর থানায় পৃথক তিনটি মামলা করেছে র্যাব। দুদকের অনুসন্ধানে অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কমিশন আইনে মামলা করা হবে।
খবর২৪ঘন্টা/নই