স্পোর্টস ডেস্ক:সবশেষ টেস্ট খেলেছেন প্রায় বছরদেড়েক আগে, ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৮ সালের নভেম্বরে। এর আগে টেস্টে তার অভিষেক ২০১৭ সালের নিউজিল্যান্ড সফরে। কিন্তু গত তিন বছরে টেস্ট ক্যারিয়ারে এ দুইটি ম্যাচই খেলেছেন বাঁহাতি তরুণ নাজমুল হোসেন শান্ত।
এবারের পাকিস্তান সফরটি তার জন্য হয়ে এসেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণের মঞ্চ হিসেবে। যেখানে প্রথম দফায় বেশ ভালোই লড়াই করছেন শান্ত। দলের অন্যান্যদের ব্যর্থতার ভিড়ে পাকিস্তানি বোলারদের জবাবটা বেশ ভালোই দিচ্ছেন শান্ত, ব্যাটিং করছেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে।
তবু ম্যাচের প্রথম ইনিংসের প্রথম সেশনটা পাকিস্তানেরই বলতে হবে। যেখানে ৩৩ ওভার ব্যাটিং করে ৩ উইকেট হারিয়ে ৯৫ রান করতে পেরেছে বাংলাদেশ। ১০৪ বলে ৪৪ রান নিয়ে অপরাজিত রয়েছেন শান্ত। দ্বিতীয় ইনিংসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ খেলতে নামবেন ২৯ বলে ১৭ রান নিয়ে।
দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও তামিম ইকবাল প্রথম দুই ওভারেই সাজঘরে ফিরে যাওয়ার তৃতীয় উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়েছিলেন মুমিনুল ও শান্ত। যেখানে পুরোটা সময়েই নড়বড়ে ছিলেন মুমিনুল। তিনি সাজঘরে ফেরেন ২২তম ওভারে, ৫৯ বলে ৩০ রান করে। এরপর প্রথম সেশনের বাকিটা সময় কোনো বিপদ ঘটতে দেননি শান্ত ও মাহমুদউল্লাহ।
এর আগে রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। পিচ রিপোর্টে বলা হয়েছে প্রথম সেশনে বোলারদের জন্য থাকতে পারে বাড়তি সুবিধা। যা কাজে লাগানোর জন্যই মূলত বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পাকিস্তান।
স্বাগতিকদের নিমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ব্যাটিংয়ের শুরুটা একদমই ভালো করতে পারেননি বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ও সাইফ। তবে প্রথম ওভারের প্রথম বল মিডউইকেট থেকে ৩ রান নিয়ে ইঙ্গিতটা ইতিবাচকই দিয়েছিলেন তামিম। যা ধরে রাখতে পারেননি এ অভিজ্ঞ ওপেনার।
শাহিন শাহ আফ্রিদির করা সে ওভারের তৃতীয় বলে দৃষ্টিকটু শটে আউট হন সাইফ। ফুল লেন্থের ডেলিভারিতে কোনো রকমের ফুট মুভমেন্ট ছাড়াই ব্যাট এগিয়ে দেন তিনি। বাইরের কানায় লেগে যা চলে যায় দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো আসাদ শফিকের হাতে। যার সুবাদে উড়ন্ত সূচনা পায় পাকিস্তান।
তাদের শুরুটা আরও দুর্দান্ত করে দেন মোহাম্মদ আব্বাস। দ্বিতীয় ওভার করতে এসে চতুর্থ বলেই তিনি আউট করেন তামিমকে। হালকা ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিটি সরাসরি আঘাত হানে তামিমের প্যাডে। আম্পায়ার প্রথমে নট আউট দেন। তবে রিভিউ নিয়ে সিদ্ধান্ত বদলে নেয় পাকিস্তান।
এরপরই উইকেটে আসেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। আর প্রথম ওভারে সাইফের বিদায় আগেই এসেছিলেন নাজমুল শান্ত। দুজন মিলে নেমে পড়েন চাপ সামাল দেয়ার মিশনে। তবে তাদের জুটিটা ছিলো পুরোপুরি নড়বড়ে। বিশেষ করে অধিনায়ক মুমিনুলের ব্যাটিং।
ইনিংসের ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে নাসিম শাহর দ্রুতগতির বাউন্সারটি যেনো দেখতেই পাননি মুমিনুল হক। চোখ সরিয়ে নেন বলের লাইন থেকে, মুহূর্তের মধ্যে সেটি গিয়ে লাগে তার ব্যাটের ওপরের দিকে, অল্পের জন্য গালিতে দাঁড়ানো ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে চলে যায় বাউন্ডারিতে- মুমিনুলের ৫৯ বলের ইনিংসের প্রতীকী দৃশ্যই বলা চলে এই এক ডেলিভারির ঘটনাকে।
যেখানে পুরোপুরি আধিপত্য বিস্তার করেছেন পাকিস্তানি পেসার নাসিম শাহ। কিন্তু কোনোমতে নিজেকে বাঁচিয়ে ৪ রান পেয়ে গেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মুমিনুল। ঠিক এভাবেই বাজে শুরুর পর প্রথম ঘণ্টাটা কাঁটিয়ে দেন মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
তবে মুমিনুলের তুলনায় বেশি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ব্যাটিং করছেন শান্ত। শাহিন শাহ আফ্রিদিকে দুর্দান্ত এক কভার ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জানান দিয়েছেন নিজের আত্মবিশ্বাসের কথাও। অন্যদিকে মুমিনুল খুঁজে পাননি ছন্দ। নাসিম শাহর শর্ট লেন্থের ডেলিভারিতে বেশ বিপাকেই পড়তে দেখা গেছে তাকে। যার ধারাবাহিকতায় নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি টাইগার অধিনায়ক।