ওমর ফারুক :
রাজশাহী মহানগরীতে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম দ্বিগুণ হারে বেড়ে গেছে। আলু থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। অথচ সপ্তাহ খানেক আগেই সবকিছুর দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ছিল। এ নিয়ে বাজার করতে আসা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
ক্রেতারা বলছেন, কোন ছাড়াই ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামত দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর বিক্রেতাদের দাবি করছেন, পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ইচ্ছা করেই দাম বাড়ানো হয়নি।
হঠাৎ করেই সবজির দাম দ্বিগুণ হয়ে যাওয়াতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষজন। কারণ সবজিসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম যে হারে বাড়ছে সেই হারে মানুষের আয় বাড়েনি।
নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজার কাঁচা বাজার, লক্ষীপুর কাঁচা বাজার, কোর্ট স্টেশন বাজার, শালবাগান বাজার, নওদাপড়া বাজার, বিনোদপুর, শিরোইল কাঁচা বাজার, ভদ্রা বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সপ্তাহ খানেক আগেই রাজশাহী মহানগরীর বাজারগুলোতে পুরাতন আলু ১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে সেই আলু ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলুর দাম ছিল, ১৫ থেকে ১৮ টাকা কেজি দরে বর্তমানে সেই আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। বেগুণ ছিল ২০ টাকা কেজি বর্তামেন ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, টমেটো ছিল ২০ টাকা কেজি বর্তমানে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, ফুলকপি ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজি ছিল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি, বাঁধাকপি ১৫ টাকা থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস, করলা ছিল ৪০ টাকা কেজি বর্তমানে দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে, সিম প্রতি কেজি ছিল ২০ টাকা বর্তমানে ৪০ টাকা। পেঁয়াজের দাম মাঝখানে কমলেও আবার কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে গেছে। এ ছাড়া শাকের দামও কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
বুধবার দুপুরে নগরীর সাহেব বাজারে সবজি কিনতে আসা রনক নামের এক নারী ক্রেতা বলেন, কয়দিন আগেও সবজির দাম কম ছিল। কিন্ত হঠাৎ করেই দাম বেড়ে গেছে। যেভাবে দাম বাড়ছে সেভাবেতো মানুষের আয় বাড়েনি। তাই দাম নিয়ন্ত্রণে তিনি বাজার মনিটরিং করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
নগরীর কোর্ট স্টেশনে বাজার করতে আসা আব্দুল্লাহ নামের অপর এক ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, সবজির দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে সবজি কেনাই দায় হয়ে পড়বে। এভাবে দাম বাড়ালেতো হবে না। তাই তিনি বাজার মনিটরিং করে সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
তবে নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক পাইকারি ব্যবসায়ী ক্রেতাদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইচ্ছা করে দাম বাড়ানো হচ্ছে না। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে তাই বেশি দামে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। খুচরা ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
নাইম নামের এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের কিছু করার নাই। পাইকারি বাজারের দাম বাড়তি। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
রাজশাহী জেলা মার্কেটিং অফিসার শামিমুল হক বলেন, দাম বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। কিছুটা দাম বেড়েছে। পুরাতন আলু শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে দাম বেড়েছে। ফুলকপির মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে দাম বাড়ছে। অন্যান্য সবজির ক্রেত্রেও একই হচ্ছে। প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করা হয়।
খবর২৪ ঘণ্টা/এমকে