বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের কনোপাড়া গ্রামের বিবাদমান দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা, বাড়িঘর ভাংচ‚ড় ও আটকের ঘটনা ঘটেছে। আকটকৃতরা হলেন, কনোপাড়া গ্রামের কাটারী দুলালের ছেলে রণি (২২), জে.এম.বি ক্যাডার মোজাহার আলীর ছেলে সুফেল (২৪), জে.এম.বি ক্যাডার ওরফে খুনি মান্নানের ছেলে জিল্লুর রহমান (২২), আব্দুস সামাদের ছেলে সুজন (২৫), লূৎফর রহমানের ছেলে আশরাফ (৩৫) রকি (২৬) পিতা অজ্ঞাত ও ইউনুছ আলীর ছেলে রানা (২০) কে পুলিশ আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৪ ডিসেম্বর কনোপাড়া গ্রামের মকছেদ আলীা লিজকৃত সবসার দীঘি ও পুকুরে একই যোগে বিষ প্রয়োগ করে কোটি টাকার অধীক মাছের ক্ষতি সাধনের ঘটনায় মামলার জের ধরে পূর্বে থেকেই দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তারই ধারাবাহিকতায় বেশ কয়েকবার উভয় পক্ষের মধ্যে মারপিট ও মামলা
মোকদ্দমার ঘটনা ঘটে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকদিন আগে দু’পক্ষের মধ্যে যশোর বিলের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে মারামারি, বাড়িঘর ভাংচূড় এর ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা মোকদ্দমা চলতে থাকে। উক্ত পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য গত ৭জানুয়ারি মঙ্গলবার বাগমারা থানায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব ও বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অনিল সরকারের নেতৃত্বে উভয় পক্ষকে নিয়ে বাগমারা থানায় একটি আপোষ মীমাংসা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আপোষ মীমাংসা বৈঠকে উভয় পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে একটি আপোষ মীমাংসা করে দেয়া হয় এবং উভয় পক্ষ এলাকায় শান্ত পরিস্থিতি বজায় রেখে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করবে বলে প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করে আপোষ মীমাংসা মেনে নেয়। এর পর বুধবার দিবাগত রাতে জে.এম.বি ক্যাডার আ: মান্নান, ইসমাইল হোসেন, নিজামুল হক ডাবলু, মোজাহার, আজাহার আলী, সাইদুর রহমান, বাচ্চু, সাবেক মেম্বার চাঁন্দ মোহাম্মদ এর হুকুমে প্রায় ৩০-৩৫ জন অবৈধভাবে সংগটিত হয়ে মাথায় হ্যালমেট ব্যবহার করে ধারালো দেশীয়
অস্ত্র, চাপাতি, হাসুয়া ও হাতুড়ী নিয়ে আজাহার আলী, হিটলার, লালু, আফজাল, আতাব, রাজু, মিজানুর, টুটুল, বাচ্চু, জালাল, মকলেছ, গরীবুল্লাহ্, রহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, বাবুল হোসেন বাবু, শিবলী বেগম এর নেতৃত্বে তাদের সঙ্গীয় ক্যাডার নিয়ে প্রতিপক্ষ মকছেদ আলীসহ তার গ্রæপের লোকজনের উপরে আক্রমনের উদ্দেশ্যে সংগঠিত হয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বাড়ীঘর ভাংচ‚ড়, টাকা পয়সা লুটপাট, ভয়-ভীতি ও প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে মকছেদ আলীর লোকজনের উপর ধাওয়া করে। এতে ভয় পেয়ে মকছেদ আলীসহ তার লোকজনেরা দিক-বিদিক পালিয়ে গিয়ে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে তাহেরপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লূৎফর রহমানের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার সংবাদ পেয়ে ক্যাডার বাহিনীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সাধারণ জনতা ধারালো অস্ত্রসহ জনি, সুফেল ও জিল্লুর রহমানকে ঘিরে ধরে রাখে। পরে পুলিশ তাদেরকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ
সুপার সুমন দেবের নেতৃত্বে বিশাল একটি পুলিশ বাহিনী রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে সাধারণ জনগণের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। সাধারণ জনগণকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শান্ত থাকার জন্য আহŸান জানান। সেই সাথে তিনি বলেন, অপরাধের সাথে যারা জড়িত থাকবে তাদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। আপনারা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করবেন। এব্যাপারে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পরিস্থিতিকে শান্ত করার জন্য দু’পক্ষের ৭জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আটককৃতদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আর/এস