1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
আবাসন ও কর্মসংস্থান সংকটে রাজশাহীর হরিজন পল্লীর বাসিন্দারা - খবর ২৪ ঘণ্টা
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১১ অপরাহ্ন

আবাসন ও কর্মসংস্থান সংকটে রাজশাহীর হরিজন পল্লীর বাসিন্দারা

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৯
রাজশাহী মহানগরীর হাতেমখাঁয় অবস্থিত হরিজন পল্লী

ওমর ফারুক :
হিন্দু সমাজের প্রচলিত জাতিভেদ প্রথার কারণে সাধারণ মানুষদের থেকে আলাদা হয়ে থাকা রাজশাহী মহানগরীর হেতেমখাঁ সবজিপাড়ায় অবস্থিত হরিজন পল্লীর মানুষরা আবাসন ও কর্মসংস্থান সংকটে দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এখানে বসবাসকারী হরিজন পল্লীর মানুষের সমস্যা দেখতে গিয়ে জনপ্রতিনিধি ও অনেক সংস্থা বিভিন্ন সময় সমাধানের আশ্বাস দিলেও তা আজও আশ্বাসের মধ্যেই রয়ে গেছে। যার কারণে শত বছরেও তাদের জীবনমানের উন্নয়ন হয়নি। প্রতিনিয়ত ভুগতে হয় আবাসন ও কর্মসংস্থান সংকটে। ছোট জায়গার উপর গড়ে উঠা হরিজন পল্লীর মানুষরা প্রতিনিয়ত

জীবনের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে আছেন। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে সরজমিনে নগরীর হেতেমখাঁ সবজিপাড়ায় অবস্থিত হরিজন পল্লীতে গিয়ে দেখা যায় এসব মানুষের দুঃখ-দুর্দশা। হরিজনদের পেশা মূলত মেথর ও ঝাড়– দেওয়া অর্থাৎ রাস্তা পরিস্কার করা। এরা রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনসহ নগরের বিভিন্ন অফিসে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে সেটি জনসংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল। কর্মসংস্থানের অভাবে অনেকেই খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করেন। সমাজের অবহেলিত ও দলিত সম্প্রদায় হওয়ায় এদের দিকে তেমন কেউ খেয়াল রাখে না। এরা পান না কোন সরকারী সাহায্য সহযোগীতা। বাড়তি কোন সুযোগ-সুবিধাও নেই। শুধু আশ্বাসের মধ্যেই আঁটকে থাকে এদের জীবনমান উন্নয়নের

গল্প। তাইতো এই পল্লীর মধ্যে অচেনা লোক দেখা মাত্রই ভরত নামের একব্যক্তি বলেন উঠেন, জরিপ করে কি লাভ? এ পর্যন্ত শুধু জরিপ হয়েছে কিন্ত কেউ কিছু দেয়নি। তাই তথ্য দেওয়ারও প্রয়োজন নেই। এ রকম অনেকেই লিখে নিয়ে গেছেন কিন্ত কেউ সাহায্য করেনি।
হরিজন পল্লী ঘুরে দেখা গেছে, প্রত্যেকটি বাড়িতে একাধিক পরিবার বসবাস করে। ছোট ছোট ঘরের মধ্যে ৫/৬ জন মানুষের বাস। স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। দিনের বেলা কোনভাবে কাটালেও রাতে শোয়ার সময় এদের কষ্ট বেড়ে যায় বহুগুণে। কারণ বাবা-মা, ভাই-বোন ও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একই ঘরের মধ্যে ঘুমাতে হয় এসব মানুষদের। এমনকি এক বাড়িতে ২২ জন মানুষও বাস করে এমন পরিবারও রয়েছে। প্রায় ২০ বিঘা জমির উপর গড়ে উঠা হরিজন

পল্লীর ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। কিন্ত এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের কোন সংকট না থাকলেও শিক্ষার্থীর সংকট প্রকট। কারণ প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত এই বিদ্যালয়ে প্রায় ৩৩ থেকে ৩৫ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। কারণ হিসেবে জানা গেছে, এখানকার অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানকে এই বিদ্যালয়ে না

পাঠিয়ে বাইরের বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছে। একজন অভিভাবকের দেখাদেখি অন্য অভিভাবকও ছেলেমেয়েকে বাইরের স্কুলে ভর্তি করানোর কারণে শিক্ষার্থী কমে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে স্কুলের পাঠদান কার্যক্রম হুমকির মধ্যে পড়বে বলেও শঙ্কা করছেন সেখানকার বাসিন্দারা। তবে কেন অভিভাবকরা তাদের

সন্তানদের এ স্কুলে না পড়িয়ে বাইরে স্কুলে পড়াশোনা করাচ্ছেন সে বিষয়ে কারো কাছ থেকেই সদুত্তর পাওয়া যায়নি। হরিজন বিজয় বয়েজ ক্লাবের সভাপতি ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শ্রী হরিলাল বাবু বলেন, হরিজন পল্লীতে প্রায় ২৫০ পরিবার বসবাস করে। ২৫০ পরিবার মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার মানুষের বসবাস এই পল্লীতে। শত বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পল্লী রয়েছে। তখন জনসংখ্যা কিছুটা কম ছিল। বর্তমানে বেশি হয়ে গেছে। পল্লীর মানুষরা ঝাড়–দার ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করে। সিটি কর্পোরেশন

ও অন্যান্য অফিসে কাজ করে। নারী-পুরুষ উভয় মিলে ৬৫/৬৬ জন মানুষ স্থায়ী চাকুরীজীবী আছে। এরমধ্যেই মুসলমান রয়েছে ৮টি পরিবার। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকলেও আবাসন ও কর্মসংস্থানের সংকট অনেক বেশি। আবাসন সংকটের কারণে শান্তিতে থাকতে পারেন না তারা।
তিনি আরো বলেন, এখানে গত সিটি ভোটের আগে বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এসে আবাসন সংকট দুর করতে কোয়ার্টার করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। এরপর আর সেটি সামনে এগোয়নি। গত বছর তিনি আবার আসলে জানান, মাঝখানে তিনি মেয়র না থাকার কারণে কাজটি করতে পারেন নি। বিষয়টি দেখা হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৩ জন শিক্ষার্থী আছে। আর এখানে ৫ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। বিদ্যালয়ে কেন এত কম শিক্ষার্থী এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা সেটি বুঝতে পারছিনা। শিক্ষার্থী দিন

দিন কেন কমে যাচ্ছে। আমাদের এখানকার মানুষদের নিয়ে অনেক জরিপ হয়েছে। অনেকে কথাও দিয়েছেন কিন্ত কেউ কোন সুযোগ-সুবিধা এনে দিতে পারেনি। শুধু আশ্বাস পেয়েছি। অনেকে কোয়ার্টার পাওয়ার আশায় বাড়ি করতে পারছেন না। তিনি সরকার ও রাজশাহীর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের জীবনমান উন্নয়ন ও আবাসন সংকট দুর করা এবং কর্মসংস্থান সমস্যার সমাধানের জন্য অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, হরিজন পল্লীর মানুষদের জন্য

কোয়ার্টার করে দেওয়ার পরিকল্পনা সিটি কর্পোরেশনের রয়েছে। তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকার সমস্যা দুর করার জন্য চাকুরীর ব্যবস্থা করা হবে। কোয়ার্টার ফ্রি না টাকা দিয়ে পরিবারগুলো পাবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সেটি এখনো ঠিক হয়নি। মুসলিম পরিবারদের নিয়ে কোন পরিকল্পনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটি ভবিষ্যতে কর্পোরেশন ভেবে দেখবে।

এস/আর

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST