বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের তালতলী গ্রামে অবৈধ ভাবে স্থাপিত ইটভাটা গুলো গুড়িয়ে দেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে রাজশাহীর পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। গতকাল বুধবার সকালে রাজশাহীর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মামুনুর রশীদ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য পুলিশসহ ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ইটভাটা গুলো গুড়িয়ে দেয়ার কার্যক্রম শুরু করেন। এই নিয়ে স্থানীয় জনসাধানের মাঝে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষপাতমূলক আচরনের জন্য ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজেষ্ট্রেট জানান, বাগমারা উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের তালতলী গ্রামের অবৈধ আব্দুস সোবহানের আটভাটা মহামান্য হাইকোর্ট বন্ধের আদেশ দেন। মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ পালনের জন্য বাগমারায় ইটভাটা গুলোতে অভিযান শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে উপজেলার অবৈধ ইটভাটা গুলো ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বন্ধ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ইটভাটার মালিক আব্দুস সোবহানের ছেলে মকবুল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ইটভাটা গুলো ভাঙ্গার পূর্বে তাদেরকে একটি নোটিশ দেয়া প্রয়োজন ছিল । নোটিশ না দিয়ে ইটভাটায় অভিযান চালানোর জন্য তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ইটভাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযোনে প্রায় ৯ টি ইটভাটায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ লক্ষাধীক টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। মির্জাপুরের এ এস এম ইটভাটার মালিক আব্দুস সোবহান, সুলতানপুরের এম এম বি ইট ভাটার মালিক আব্দুস সালাম, আওরঙ্গবাদ এলাকার এ, কে, ব্রীকস এর মালিক আব্দুল কাদের, শ্রীপুর এম, কে, ওয়াই ইট ভাটার মালিক মনিরুল ইসলাম, ভাগনদি এলাকার জে, বি, কে ইটভাটার মালিক বাদশা, কাতিলা এলাকার
এ, জেড, কে ইটভাটার মালিক জাহাঙ্গীর আলম, হাটমাদনাগর এলাকার এম,এ, এম ইটভাটার মালিক বাবু, ধামিন কামনগর এলাকার হিরো ব্রীকস এর মালিক অমর সরকার ও হাসনিপুর এলাকার টাটা ব্রীকস এর মালিক মতিউর রহমান জানান, ্এভাবে আগাম কোন নোটিশ না দিয়েই পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহীর কর্তৃপক্ষ ইাইকোর্টের আদেশ আছে জানিয়ে তড়িঘড়ি করে ভাটা গুলো গুড়িয়ে দিয়েছে। এতে করে আমাদের ৯ টি ইট ভাটার প্রায় ২০
থেকে ২৫ লক্ষাধীক টাকার ক্ষতি সাধন করেছে। তারা আরো অভিযোহ করে জানান, আমরা সরকারি বিধি মোতাবেক ভ্যাট ও ইনকাম ট্যাক্্র প্রদান করে ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে আমরা ইটভাটা গুলো পরিচালনা করে আসছি। এছাড়াও আমরা যথাযত নিয়ম মেনে ইটভাটার লাইসেন্স পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি। ভাটা মালিকরা আরো অভিযোগ করে বলেন, যেখানে সরকার ড্রাম চিমনীর ইটভাটা সম্পূর্ন অবৈধ ঘোষনা করে সেগুলো বাতিল করেছে। অথচ বাগমারা এলাকায় বর্তমানে প্রায় ১৫ থেকে ২০ টি ড্রাম
চিমনির ইটভাটা পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব অবৈধ ইটভাটার মালিকরা পরিবেশ অধিদপ্তরকে ভাটা প্রতি বছরে দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা উৎকোচ প্রদান করে থাকে। সে কারণে তারা ওই সব ড্রাম চিমনীর ভাটা গুলোতে অভিযান পরিচালনা করা থেকে বিরত রয়েছে। অথচ পরিবেশের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকারক হওয়ায় ওই সব ড্রামচিমনীর এলাকার কৃষক ও স্থানীয় জনতা পরিবেশ অধিদপ্তরে একাধিক বার অভিযোগ দিলেও রহস্যজনক কারণে পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহীর ডিডি মামুনুর রশিদ মামুন অভিযোগ গুলো আমলে নেননি। তার বিরুদ্ধে ভাটা মালিকরা আরো অভিযোগ করে
বলেন, রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শত শত অবৈধ ড্রাম চিমনি ভাটা সহ অন্যান্য ভাটা থাকলেও রহস্যজনক কারণে রাজশাহী জেলার পরিবেশ অধিদপ্তর ওই সমস্ত এলাকায় আভযান না চালিয়ে শুধু বাগমারা এলাকাতেই তাদের অভিযান সীমবদ্ধ রখেছে। এর আগেও চলতি মাসের ৩ তারিখেও তারা আরো তিনটি ভাটায় অভিযান চালিয়ে সেগুলো গুড়িয়ে দিয়েছে। তাদের মতে, এভাবে একের পর এক ইটভাটা গুড়িয়ে দেওয়ায় বাগমারায় প্রতি হাজার ইটের দাম দশ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যাবে এবং সরকার সহ জনসাধারনের সার্বিক উন্নয়ন ও নির্মান কাজ হুমকীর মুখে পড়বে এবং বেকার সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারন করবে ।
অপর দিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষপাত মূলক ভাবে ড্রাম চিমনী ভাটা ব্যাতিরেখে বিনা নোটিশে একের পর এক পরিবেশ বান্ধব অটো ও হাওয়া ভাটা সমূহ গুড়িয়ে দেওয়ায় বাগমারার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোজজনের ,মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপরে জানতে চাইলে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিউল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমাকে এখন পর্যন্ত কেউ অবগত করেনি। তবে ক্ষতিগ্রস্থ ইটভাটার মালিকরা আমার অফিসে এসে তাদের অভিযোগ লিখিত ভাবে জানিয়েছে। আমি বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করব।
খবর২৪ঘণ্টা, এমকে
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।