খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: কোনো চুক্তি ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগ করা— ‘নো-ডিল ব্রেক্সিট’—রুখতে একজোট হয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বিরোধী দলের পার্লামেন্ট সদস্যরা (এমপি)। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সরকারি টোরি দলের কয়েকজন বিদ্রোহী এমপিও। যার ফলাফল, ‘নো-ডিল ব্রেক্সিট’ রুখতে আইন তৈরির পক্ষে পার্লামেন্টে হওয়া ভোটাভুটিতে হেরে গেছে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সরকার। অবশ্য এটাই চূড়ান্ত ভোটাভুটি নয়। তবে বলা যায়, ‘নো-ডিল ব্রেক্সিট’ রুখে দেওয়া সংক্রান্ত বিল পাস করানোর প্রথম ধাপ পেরোল বিরোধী দল।
পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে সরকার বিরোধীদের এ জয়ের ফলে ব্রিটেনের ইইউ ছাড়ার (ব্রেক্সিট) তারিখ আরো পেছানোর জন্য বিল আনতে পারবে বিরোধীদল কমন্স। এদিকে পাল্টা জবাব হিসেবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের আগেই সাধারণ নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্টে প্রস্তাব উত্থাপন করবেন তিনি।
এদিকে বিরোধী দলীয় নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, নির্বাচনের আগেই ‘নো-ডিল ব্রেক্সিট’ থামাতে পার্লামেন্টে বিল পাস করাতে হবে। সরকারকে হারাতে পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে বিরোধী দলের পক্ষে অবস্থান নেন মোট ২১ জন টোরি এমপি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কয়েকজন সাবেক মন্ত্রীও।
এদিকে ভোটের পর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, সরকার দলীয় যেসব এমপি বিরোধী দলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন তাঁদের শিক্ষা দিতে সংসদীয় কমিটি থেকে বহিষ্কার করার ভাবা হচ্ছে।
এদিকে সরকার দলীয় বিদ্রোহী এমপিদের মধ্যে অন্যতম কেন ক্লার্ক জানিয়েছেন, তিনি মনে-প্রাণে এখনো ‘একজন মূলধারার কনজারভেটিভ’, তবে দলের সব সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন না। এ ছাড়া বরিস জনসনের সরকারকে তিনি কনজারভেটিভ দলের এ যাবৎকালের চরম ডানপন্থি মন্ত্রিসভা বলেও অভিহিত করেন।
এদিকে ‘নো-ডিল ব্রেক্সিট’ রুখতে বিল পাস করানোকে ব্রেক্সিট বিষয়ে ইইউর সঙ্গে সমঝোতার পথে বাধা বলে মনে করছেন বরিস জনসন। আগামী মাসেই সাধারণ নির্বাচন দেওয়া ছাড়া উপায় দেখছেন বলে জানিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের জনগণকেই ঠিক করতে হবে, কোন পথে এগোনো উচিত।’
এদিকে পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে সরকারী দল হেরে যাওয়ায়, ১৯ অক্টোবরের মধ্যে ‘নো-ডিল ব্রেক্সিট’-এর পক্ষে বিল পাস না হলে, ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারী পর্যন্ত ব্রেক্সিট ঠেকিয়ে রাখতে প্রধানমন্ত্রীকে বাধ্য করতে পারবে বিরোধী দল।
আগামী ১৭ অক্টোবর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইইউর একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তার দুদিন আগে ১৫ অক্টোবর সাধারণ নির্বাচন দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
তবে নির্বাচন আহ্বানের জন্য জনসনকে বিরোধী দল লেবার পার্টির সাহায্য নিতেই হবে। কেননা তাঁকে পার্লামেন্টের ৬৫০ এমপির মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ এমপির ভোট পেতে হবে।
কিন্তু করবিন জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগেই ‘নো-ডিল ব্রেক্সিট’ থামানোর বিল পার্লামেন্টে পাস করাতে হবে। করবিন দাবি করেন, ‘দেশের বেশিরভাগ মানুষই নো-ডিল ব্রেক্সিটের বিপক্ষে।’
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন