খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: যশোরের শার্শা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও পুলিশ সোর্সের বিরুদ্ধে রাতের আঁধারে বাড়িতে ঢুকে এক নারীকে (৩২) গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) বিকেলে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন নির্যাতনের শিকার ওই নারী।
এরআগে, ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ ওই নারীর স্বামীকে আটক করে পুলিশ। এরপর সোমবার (০২ আগস্ট) রাত আড়াইটার দিকে ৫০ হাজার টাকা দাবিতে এসআই ও পুলিশ সোর্স ওই নারীকে গণধর্ষণ করেন।
এদিকে, মঙ্গলবার বিকেলে ওই নারী নিজেই ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে আসেন। কিন্তু পুলিশের মাধ্যমে না আসায় তার শারীরিক পরীক্ষা করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী এক সময় চোরাচালানি পণ্য আনা নেওয়ার কাজ করতেন। বর্তমানে ওই কাজের সঙ্গে তিনি আর জড়িত নেই। সর্বশেষ ২৫ আগস্ট শার্শার গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খায়রুল আমার স্বামীকে আটক করে ৫০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে চালান দেন। গত সোমবার রাত আড়াইটার দিকে এসআই খায়রুল, পুলিশের সোর্স কামরুল, লতিফসহ বেশ কয়েকজন আমার বাড়িতে যান। প্রথমে দরজা খুলতে রাজি হইনি। এক পর্যায়ে স্বামীকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবে সে বিষয়ে কথা বলতে এসেছে জানালে দরজা খুলে দিই।
তখন এসআই খায়রুল জানান, ৫০ হাজার টাকা দিলে মামলা হালকা করে দিবে। আমি কোনো টাকা দিতে পারবো না জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে পুলিশের সোর্স কামরুল, এসআই খায়রুলসহ ২/৩ জন আমাকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানালে, তারা হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য আসতে বলে। এজন্য থানায় না গিয়ে হাসপাতালে চলে এসেছি।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আরিফ আহমেদ বলেন, ওই নারী জরুরি বিভাগে এসে জানান তিনি পুলিশ কর্তৃক গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তখন বিষয়টি আমাকে জানানো হয়। পরে ওই নারীকে আমার দপ্তরে ডেকে বিস্তারিত শুনি। তাকে জিজ্ঞাসা করলে জানান শারীরিক পরীক্ষা করাতে চান। ভর্তি হবেন না। কিন্তু ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশের রেফারেন্স ছাড়া আমরা পরীক্ষা করতে পারি না। বিষয়টি কোতয়ালি থানার ওসিকে জানানো হয়েছে। তিনি এসে ভিকটিমকে নিয়ে গেছেন।
কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা ওই নারীকে নিয়ে আসিনি। এটা শার্শা থানার ব্যাপার।
শার্শা থানার ওসি এম মশিউর রহমান বলেন, ওই নারীর স্বামীকে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ এসআই খায়রুলকে গ্রেফতার করে। এরপর আর ওই বাড়িতে খায়রুল যাননি। অথচ তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করছেন ওই নারী। আর কামরুল ওই নারীর স্বামীর চাচাতো ভাই। স্থানীয় রাজনৈতিক দলাদলির কারণে ওই মহিলাকে কেউ ইন্ধন দিচ্ছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা দরকার। ওই নারীর স্বামীর বিরুদ্ধে চারটি মাদক মামলা রয়েছে। তারপরও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন