খবর ২৪ ঘণ্টা ডেস্ক: জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল চালক হাবিবুর রহমানকে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন এক পুলিশ কনস্টেবল, অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষী, স্বাস্থ্য বিভাগের পিওন এবং আওয়ামী লীগ নেতাসহ মোট সাতজন। মাত্র ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে তারা ওই মোটরসাইকেল চালককে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে জানা যায়।
বুধবার বিকেলে বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের পপুলার স্কুল এলাকায় এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত মাছ ব্যবসায়ী হালিম হাওলাদার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আলতাফ হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত অন্যরা হলেন: অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষী আবুল কালাম তালুকদার ও তার ভাই যশোরে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল গিয়াসউদ্দিন এবং প্রতিবেশী আবুল হোসেন, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল খান ও মিজানুর রহমান।
তবে পুলিশ কনস্টেবল গিয়াসউদ্দিনসহ বাকি পাঁচজন পলাতক থাকায় তাদের এখনও ধরা সম্ভব হয়নি। তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ। এর জের ধরে কনস্টেবল গিয়াসউদ্দিনকে বরখাস্ত করা হতে পারে বলে বাংলাদেশ জার্নালের বরিশাল প্রতিনিধি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানায় মামলা দায়ের করেছেন মোটরসাইকেল চালক হাবিবুর রহমান। তিনি সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের কুলাকানা গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে।
আটক দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে নগরীর এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব-উল আলম জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে হাবিবুরকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন তার দুই সৎ চাচা অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষী কালাম ও কনস্টেবল গিয়াস। এ কাজে তারা ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে স্বাস্থ্য বিভাগের পিওন আলতাফ, মাছ ব্যবসায়ী হালিম এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা বাবুলসহ অন্যান্যদের সম্পৃক্ত করে।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবার বিকেলে হাবিবের মোটরসাইকেল ভাড়া নেন মাছ ব্যবসায়ী হালিম। পথে স্বাস্থ্য বিভাগের পিওন আলতাফ হোসেন তাদের মোটরসাইকেলে ওঠেন। পরে তারা দক্ষিন কড়াপুর পপুলার স্কুল এলাকায় মোটরসাইকেল থামিয়ে হাবিবের পকেটে জোর করে ইয়াবা ঢুকানোর চেস্টা করেন। এতে ব্যর্থ হয়ে তারা আওয়ামী লীগ নেতা বাবুলকে মোবাইল করে জানান হাবিবকে ইয়বাসহ আটক করেছে।
বাবুল ইউপি চেয়ারম্যানকেও বিষয়টি জানায়। ইউপি চেয়ারম্যান এয়ারপোর্ট থানায় খবর দিলে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হাবিব প্রকৃত ঘটনা খুলে বলেন।
পুরো ঘটনা জানার পর পুলিশ হালিম ও আলতাফকে থানায় ডেকে আনে। পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের অসলগ্ন কথাবার্তায় হাবিবকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেস্টার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। এ ঘটনায় বুধবার হালিম ও আলতাফকে আটক করে পুলিশ। আর ছেড়ে দেওয়া হয় হাবিবকে।
মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেস্টায় অভিযুক্ত ওই সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন হাবিব। ওই মামলায় দুইজনকে আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাদের কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদেরও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন