সবার আগে.সর্বশেষ  
ঢাকাশুক্রবার , ৩১ মে ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রাজশাহীতে প্রচণ্ড ঝড় ও বৃষ্টি: বজ্রপাতে কিশোরসহ নিহত ৪, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

omor faruk
মে ৩১, ২০১৯ ৮:৩৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মহানগর ও আশেপাশের উপজেলায় প্রচন্ড ঝড় ও বৃষ্টি হয়েছে। এতে রাজশাহীর কাটাখালি, বাঘা ও গোদাগাড়ীতে পৃথক বজ্রপাতে কিশোরসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ে গাছের ডালপালা ভেঙ্গে ও টিনের ঘরের চালা উড়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড় শুরু হওয়ার সাথে সাথে সাথেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টা থেকে রাত প্রায় পৌনে ১১টা পর্যন্ত টানা ঝড় ও বৃষ্টি হয়। চলতি মৌসুমে রাজশাহীর উপর দিয়ে এটি সর্বোচ্চ ঝড় ও বৃষ্টি। ঝড়ের সময় বজ্রপাতে চারনের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলো, রাজশাহীর গোদাগাড়ী

উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের জমসেদ আলী (৫৫), একই উপজেলার সারেংপুর পুলিশপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মুসাউল হক (১৫) ও বাঘা উপজেলার ফতেপুর বাউসা গ্রামের ছলেমান হোসেনের ছেলে বাছা হোসেন (২৮) ও রাজশাহীর কাটাখালি থানার কাপাসিয়া এলাকার বাসিন্দা মনি (১৩)। রাজশাহী মহানগর: গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিক থেকে রাজশাহী মহানগরীর আকাশে ঘন কালো মেঘ জমতে শুরু করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশে বিদ্যুৎ চমকাতে শুরু করে। রাত পৌনে ১০টার দিকে হালকা বৃষ্টি ও বাতাস শুরু হয়। বাতাস শুরু হলে নগর জুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হলে পুরো নগরী অন্ধকারে ঢেকে যায়।

ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয় রাজশাহী। রাত ১০টার দিক থেকে প্রচন্ড বেগে ঝড় ও বৃষ্টি শুরু হয়। ধীরে ধীরে ঝড়ের গতিবেগ বাড়তে থাকে। প্রচন্ড বেগে ঝড় শুরু হলে বিভিন্ন গন্ত্যব্যে যাতায়াতকারী মানুষজন নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়। অনেককে আবার ভিজতে দেখা যায়। ঝড়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকার গাছপালা ভেঙ্গে যায় ও টিনের বাড়ি ঘর উড়ে যায়। নগরীর কাপাসিয়া এলাকার ব্যাপক গাছপালা ভেঙ্গে যায়। ঝড়ে আকাশে ঘন ঘন বজ্রপাত চমকাচ্ছিলো। প্রচুর বৃষ্টিপাতে রাস্তা ও পাড়া-মহল্লার ড্রেনে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। প্রায় ঘন্টাখানেক সময় বৃষ্টি ও ঝড় চলার পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে থেমে যায়। তবে ঝড় কমলেও বৃষ্টি প্রায় রাত ১১টা পর্যন্ত চলে। বৃষ্টি থেমে গেলে পথচারীরা নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বের হয়। নগরীতে গাছের ডালপালা ও বাড়িঘর উড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেলেও কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। প্রায় সারা রাত ধরে আকাশে মেঘের গর্জন ছিলো। রাত ২টার দিক নগরীর কোনো কোনো এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হয়।

গোদাগাড়ী: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় বজ্রপাতে দুই জন নিহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, গোদাগাড়ী উপজেলার দক্ষিণ বাসুদেবপুর গ্রামের জমসেদ আলী (৫৫) ও সারাংপুর পুলিশপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মুসাউল হক (১৫)। গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে ঝড়-বৃষ্টির সময় জমসেদ আলী নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় হঠাৎ বিকট শব্দে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এদিকে, ঝড়-বৃষ্টির সময় মুসাউল হক আম বাগানে ঝড়ে পড়া আম কুড়াচ্ছিলেন। এ সময় বিকট শব্দে বজ্রপাত হয়়। এতে ঘটনাস্থলেই মুসাউলও মারা যায়। বাঘা: রাজশাহীর বাঘায় আম

কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে মোহাম্মদ বাছা হোসেন (২৮) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় বজ্রপাতে তার এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মৃত ব্যক্তি উপজেলার ফতেপুর বাউসা গ্রামে সলেমান হোসেনের ছেলে। মৃত বাছা হোসেনের খালু আবুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে ফতেপুর বাউসা স্কুলের পিছনে বাড়ির পাশে ঝড় বৃষ্টির সময় বাগানে আম কুড়াতে যায়। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতে তার মৃত্যু

হয়েছে। তবে গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টায় জানাজা শেষে অমরপুর কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে। এ বিষয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মহসীন আলী বলেন, ঘটনা শুনেছি। কাটাখালি : রাজশাহীর কাটাখালি থানার কাপাসিয়া এলাকায় বজ্রপাতে মনি (১৩) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। সে কাটাখালি থানার কাপাসিয়া এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে। কাটাখালি খানার অফিসার ইনচার্জ ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মন জানান, রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালি থানার কাপাসিয়া এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত

১০টার দিকে বজ্রপাতে মনি নামের এক কিশোর নিহত হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টির সময় মনি আম বাগানে আম কুড়াছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে ২৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় হয়েছে।

আর/এস

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।