খবর ২৪ ঘণ্টা ডেস্ক: ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) চলতি মাসেই জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিগেশন) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার। এতে ১৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই তথ্য জানান।
নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলা প্রসঙ্গে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেছেন, তদন্ত কাজ মোটামুটি শেষ। কিছু কাগজপত্র তৈরি করে চলতি মাসের যে কোনো দিন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, নুসরাত হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পিবিআই তদন্ত দল।
পিবিআই প্রধান আরো বলেন, এরকম একটি জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের দায় জড়িত সকলকে নিতে হবে। এ ঘটনার আগে ও পরে যারা মদদ জুগিয়েছে, তারাও যাতে শাস্তি পায়, সেজন্য পুলিশের অন্য সংস্থাগুলোও কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা প্রত্যাহার করতে রাজি না হওয়ায় গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অগ্নিদগ্ধ নুসরাত ১০ এপ্রিল মারা যাওয়ার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মধ্যে মামলার তদন্তভার থানা পুলিশ থেকে নিয়ে দেওয়া হয়েছিল পিবিআইকে।
এর আগে, সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের ছাত্রী নুসরাতের পরিবারের করা যৌন নিপীড়নের মামলায় গত ২৭ মার্চ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ।
কারাগারে থেকেই তিনি নুসরাতের গায়ে অগ্নিসংযোগের নির্দেশনা দিয়েছিলেন বলে পিবিআইর তদন্তে উঠে এসেছে। নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার পর ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান অধ্যক্ষ সিরাজকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। নুসরাতের মৃত্যুর পর তা হত্যামামলায় রূপান্তরিত হয়, যার তদন্ত করছে পিবিআই।
নুসরাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে এই পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ; তাদের মধ্যে নুসরাতের দুই সহপাঠী, ওই মাদ্রাসার কয়েক ছাত্র এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই নেতাও রয়েছেন।
এদিকে নুসরাতের পরিবারের প্রথম মামলার পর সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ জেলা পুলিশের কিছু কর্মকর্তার গাফিলতির বিষয়টি বাহিনীর নিজস্ব তদন্তে উঠে এসেছে। ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাও হয়েছে।
পিবিআই কর্মকর্তা বনজ মজুমদার বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে করা আইসিটি মামলার তদন্ত কাজ শেষ হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। আদালতে তারা সময়ের আবেদন করেছে। তবে ইতিমধ্যে ওসি ও এসআইয়ের মোবাইল ফোন দুটি জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন