দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খাবারের মান তদারকিতে মাঠে নামছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
এ জন্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে প্রধান করে ৬ সদস্যের একটি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে।এ টিমের সদস্যরা প্রথম পর্যায়ে রাজধানীতে অভিযান শুরু করবেন এবং পরে তাদের নেতৃত্বে সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হল থেকে শুরু করে ক্যান্টিন ও হাসপাতালে কোনো ধরনের অস্বাস্থ্যকর খাবার পেলেই সংশ্লিষ্টদের ভোক্তা আইনের আওতায় শাস্তি প্রদান করা হবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মনজুর মো. শাহরিয়ার রোববার এ বিষয়ে যুগান্তরকে বলেন, আমরা সম্প্রতি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেলের ক্যান্টিনে অভিযান চালাই।
সেখানে খাবারে পোকা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করতে দেখি। এ জন্য তাদের জরিমানা করা হয়। এই চিত্র দেখার পর অধিদফতরের পক্ষ থেকে ৬ সদস্যের একটি মনিটরিং টিম করা হয়েছে।টিমের সদস্যরা প্রথমে ঢাকার সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে অভিযান চালাবে। অভিযানের সময় অস্বাস্থ্যকর বা ক্ষতিকারক কিছু পেলেই ভোক্তা আইনে শাস্তি দেয়া হবে।
মনজুর মো. শাহরিয়ার আরও বলেন, স্কুলেও অভিযান চালানো হবে। বিশেষ করে শিশুদের খাবারে যাতে কোনো ধরনের ঝামেলা না থাকে তা সবার আগে তদারকি করা হবে। শুধু অভিযান নয়, হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খাবারের মান ভালো না হলে উপযুক্ত প্রমাণসহ যে কেউ অধিদফতরে অভিযোগ করতে পারবে। প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্টদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এ ছাড়া সরকারি হাসপাতালগুলোর রোগীদের যে খাবার সরবরাহ করা হয় সেগুলোর মানের দিকেও বিশেষ নজর দেয়া হবে বলে জানিয়েছে অধিদফতর সূত্র। রোগীদের জন্য তৈরি করা খাবারের মানে কোনো ধরনের অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসব বিষয় জানতে চাইলে বিষয়ে কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বেশকিছু ভালো উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এর মধ্যে হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খাবারের মান তদারকি করা ভালো উদ্যোগ। তবে এই তদারকি যেন লোক দেখানো না হয়। তদারকি যেন থেমে না যায়- সেদিকে অধিদফতরের নজর দিতে হবে।কারণ ভোক্তার অধিকার রক্ষাই এ অধিদফতরের কাজ। আর এ বিষয়টাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে যেখানে ভোক্তা অধিকার ক্ষুণœ হয় সেখানে অভিযান পরিচালনা করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।
অধিদফতর সূত্র জানায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি অস্বাস্থ্যকর, মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যপণ্য রাখায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় দোকানিকে ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
রাজশাহী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ ও অপূর্ব অধিকারী এ অভিযান পরিচালনা করেন।
১৪ মার্চ খাবারে পোকা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশসহ বিভিন্ন অভিযোগে দেশের সরকারি চিকিৎসাসেবার সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের তিনটি ক্যান্টিনসহ পাঁচ খাবারের প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।এ ছাড়া রাজধানীর নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে অভিযান চালিয়ে দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং এ্যাপোলো হাসপাতালের ক্যান্টিন ‘ফুড ভিলেজে’ অভিযান চালিয়ে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। সুত্র: যুগান্তর