1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
টার্গেট নারী যখন নারী যাত্রী - খবর ২৪ ঘণ্টা
বৃহস্পতিবার, ০৯ জানয়ারী ২০২৫, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন

টার্গেট নারী যখন নারী যাত্রী

  • প্রকাশের সময় : বৃস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৯
ছবি : প্রতিকি

খবর ২৪ ঘণ্টা ডেস্ক :

নওগাঁর মেয়ে কুলসুম (ছদ্মনাম)। ঢাকায় নতুন এসেছে। বাইপাইল থেকে সাভারের নবীনগর যাবে। বাসের জন্য অপেক্ষা করছে বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে। এ সময় আশুলিয়া ক্ল্যাসিক নামের একটি বাস তার সামনে এসে থামে। বাসের চালকের সহকারী রাকিব জিজ্ঞাসা করে, ‘আপা কোথায় যাবেন?’ কুলসুম জানায়, নবীনগর যাবে। রাকিব তাকে ওই বাসে তুলে নেয়। ঢাকায় নতুন আসায় রাস্তাঘাট কুলসুমের অচেনা। পরে সে তার ভাইয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলিয়ে দেয় বাসের সুপারভাইজার মেহেদিকে। মেহেদি তার ভাইকে বলে, ‘আচ্ছা, কোনো চিন্তা কইরেন না ভাই। আপনার বোনরে নামায়া দিমু ঠিকমতোন।’ বাস নবীনগর থামে না। যেতে থাকে আবদুল্লাহপুরের দিকে। কুলসুম চুপচাপ সিটে বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। আবদুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে বাস থেমে যায়। এ সময় সুপারভাইজার যাত্রীদের বলে, ‘বাস যাবে না, কাগজপত্রে সমস্যা আছে। সামনে গেলে সার্জেন্ট আটকাবে।’ সবাইকে বাস থেকে নামিয়ে দেয়। এ সময় কুলসুম জানতে চায়, সে কোথায় নামবে? জবাবে সুপারভাইজার বলে, ‘তুমি চিন্তা কইরো না। তোমারে ঠিকমতো নামায়া দিব। সিটে গিয়া বস।’ কুলসুম তার সিটে আবারও ফিরে যায়। বাসটি আবার রওনা হয়। মেহেদি ও রাকিব মেয়েটির পাশে বসে খারাপ আচরণ করতে থাকে। খারাপ কাজ করার ইঙ্গিত দিয়ে তাকে জাপটে ধরে। তখন সে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকারে আবদুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে তারা বাস থামায়। এ সময় তড়িঘড়ি করে মেয়েটি নেমে যায়। কিন্তু তারা আবার তাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয়। ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তবে দৃশ্যটি র‌্যাব সদস্যদের চোখে পড়ে। তারা গাড়ি থামান। চালক, সুপারভাইজার ও হেলপারকে গ্রেফতার করেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব। তাদের কাছ থেকে বেরিয়ে আসে ভয়ঙ্কর তথ্য। র‌্যাব সদস্যরা হতবাক!

র‌্যাব জানতে পারে, এর আগেও এরা অনেক নারী যাত্রীকে যৌন নির্যাতন করেছে। গ্রাম থেকে আসা কম বয়সী নারীদের ধর্ষণ করে তার ভিডিও ধারণ করে ভয়ভীতি দেখাত। লোকলজ্জায় ভুক্তভোগীরা এসব কাউকে জানাত না। এ ছাড়া তারা বাসের যাত্রীদের একা পেয়ে জোরপূর্বক টাকা, মোবাইল ফোন সেট ছিনিয়ে নিত।র‌্যাব জানায়, এরা কাগজপত্রবিহীন বাস সংগ্রহ করে বিভিন্ন রুটে চালায়। চালকেরও কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। বিভিন্ন স্টপেজে গ্রাম থেকে আসা অপেক্ষমাণ একা নারী যাত্রীদের টার্গেট করত। কৌশলে অন্য যাত্রীদের সঙ্গে তাদের বাসে তুলত। একটা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছার পর বিভিন্ন অজুহাতে অন্য যাত্রীদের নামিয়ে দিত। আর টার্গেট নারীদের গন্তব্য পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বসিয়ে রাখত। অন্য যাত্রীরা বাস থেকে নেমে গেলে ওই নারীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করত। শরীরে হাত দিয়ে নানাভাবে যৌন নির্যাতন ও হেনস্তা করত। আবার কোনো কোনো নারীকে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করত।

সেই দৃশ্য ভিডিও করে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিত। আর লুটে নিত নারীদের সঙ্গে থাকা টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোন সেটসহ অন্যান্য সামগ্রী। এরপর নির্জন কোনো স্থানে ভুক্তভোগীকে নামিয়ে দিয়ে চলে যেত। দিনের পর দিন এভাবেই অসহায় নারীদের সঙ্গে তারা এমন আচরণ করেছে।

র‌্যাব জানায়, বেশ কিছু দিন ধরে বাসের নারী যাত্রীদের অপহরণ ও শ্লীলতাহানি করা হচ্ছে- এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গোয়েন্দা টিম মাঠে নামে। আবদুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার তিনজন হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের মনির মিয়ার ছেলে খলিল মিয়া (৩৩), চাঁদপুরের শামসুল হকের ছেলে মেহেদি হাসান বাবু (২২) ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার সায়েদ আলীর ছেলে রাকিব হোসেন (১৯)। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, খলিল মিয়া পেশায় একজন চালক। তিনি এক বছর ধরে আশুলিয়া ক্ল্যাসিক বাসের চালক হিসেবে কাজ করছেন। তার কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। তিনি যে বাস চালান তারও কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এর আগে তিনি সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। ২০১৬ সালে ঢাকায় এসে চালকের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে চালক হন। মেহেদি হাসান বাবু ছয় বছর ধরে আশুলিয়া ক্ল্যাসিক বাসের সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করছেন। এর আগে চার বছর আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া রুটে লেগুনা চালাতেন। চালকের সহকারী ইশারা দিয়ে টার্গেট করা নারী দেখালে তিনি ওই নারীর কাছ থেকে কোনো ভাড়া নিতেন না। পরে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে গল্পগুজব করে সময় কাটাতেন; যাতে তিনি কোন রুটে যাচ্ছেন তা না বোঝেন। আর চালকের সহকারী হিসেবে কর্মরত রাকিব এক বছর ধরে আশুলিয়া ক্ল্যাসিক বাসে কাজ করছেন। এর আগে তিনি বিভিন্ন চায়ের দোকানে কাজ করেছেন। রাকিব মূলত কম বয়সী নারীদের টার্গেট করতেন। বাসে ওঠার সময় চালক ও সুপারভাইজারকে ইশারা করে বিষয়টি জানিয়ে দিতেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নারী যাত্রীদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। সব যাত্রী নেমে গেলে নারী যাত্রীর আর উচিত হবে না একা বাসে বসে থাকা। এ ছাড়া পুরুষ যাত্রীদেরও বিষয়টি খেয়াল করা উচিত। বাসের হেলপার, চালক কোনো নারী যাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে তা পুলিশকে অবহিত করতে হবে বা ৯৯৯ নম্বরে ডায়াল করে পুলিশ পাঠানোর জন্য বলতে হবে।

খবর ২৪ ঘণ্টা/আর

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST