খবর২ ৪ঘণ্টা,ডেস্ক:সরকার মানুষ হত্যার জন্য ব্যয়বহুল আধুনিক যন্ত্রপাতি কিনেছে কিন্তু মানুষ বাঁচানোর জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতির কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে দমন করার জন্য কত যে আধুনিক মারণাস্ত্র নিয়ে আসা হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। নিয়ে আসা হয়েছে সর্বাধুনিক বিপজ্জনক টিয়ারশেল, স্মোক গ্রেনেড, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট, গোলমরিচ-স্প্রেসহ নানা ধরণের আধুনিক অস্ত্র। বিএনপিসহ বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য, মানুষ হত্যার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে ৩০ হাজার আধুনিক মরণঘাতি ১২
বোর শর্টগান। শর্টগানের জন্য ৩০ লাখ কার্তুজ আমদানী করা হয় হাজার কোটি টাকা শ্রাদ্ধ করে। স্বীকারোক্তি আদায় বা নির্যাতনের জন্য আনা হয়েছে ইলেকট্রিক চেয়ার ও ইলেকট্রিক শক দেয়ার অত্যাধুনিক ডিভাইস। বিরোধী দলের ফোনে আড়িপাতার জন্য বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত যন্ত্রপাতি নিয়ে আসা হয়েছে। গোপনে অডিও-ভিডিও করার উন্নতমানের ডিভাইস নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু মানুষ বাঁচানোর আধুনিক যন্ত্রপাতির কোন খবর নেই।
শনিবার (৩০ মার্চ) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, যে সরকার দাবি করে মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠিয়ে মহাকাশ জয় করেছে, অথচ মানুষ বাঁচানোর জন্য সেই সরকারের কোন আগ্রহ নেই। দেশের জনগণ মনে করে এই আগুনে পুড়ে মানুষগুলো মরার দায় শেখ হাসিনার সরকারের। বিশ্বের মধ্যে দুষিত শহর ঢাকা, ধুলাবালির শহর ঢাকা, ধোঁয়ার শহর ঢাকা, বসবাসের অযোগ্য শহর ঢাকা। যারা মধ্যরাতে ভোট করে তারা গণবিরোধীই হয়। সেজন্য মানুষ বাঁচাতে তারা কোন দায়বোধ করে না।
জবাবদিহীবিহীন সরকার থাকার কারনেই মৃত্যুর মিছিল অভিযোগ করে রিজভী বলেন, সরকার বিভিন্ন দূর্ঘটনায় মৃত্যুর সঠিক সংখ্যাটিও প্রকাশ করে না। এরা ক্ষমতার মোহে এতটাই পাগল যে, মানুষের নিরাপত্তা দেয়ার কথা বেমালুম ভুলে যায়। সুশাসন থাকলে এই অব্যবস্থাপনা চলতো না। বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা হয়নি, উঁচু তলার ভবনগুলোর কোন নির্গমন পথ নেই, ভবনগুলোতে অগ্নিপ্রতিরোধক ব্যবস্থা নেই-সেটা তদারকির দায়িত্ব সরকারের। শুধু লোভ ও লাভের জন্যই বেআইনীভাবে এই
ভবনগুলি নির্মান করা হয়েছে। আর এই কারনেই আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বিশ্বে বসবাসের অযোগ্যের তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীদের মুখে উন্নয়নের মহাসড়কের বুলি শুনতে শুনতে সাধারণ মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। ২২ তলা ভবনে আগুন নেভানোর সরঞ্জাম নেই অথচ দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে বলে চাপাবাজি চলছে সপ্তকন্ঠে তারস্বরে। আসলে দুর্নীতির মহাসড়কেই এই সরকার হাঁটছে বলেই সাধারণ মানুষের এতো লাশের স্তুপ।
অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতির অভাবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এফআর টাওয়ারে অগ্নিনির্বাপন ও হতাহতদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসসহ উদ্ধারকর্মীরা প্রানান্তকর চেষ্টা চালিয়েছেন, তাদেরকে আমরা আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আগুন নেভাতে ও মানুষ উদ্ধারে সরকার আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও দূর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার কোন লেটেষ্ট ডিভাইস
নেই। দূর্ঘটনা স্থলে উদ্ধারকর্মীদের দ্রুত পৌঁছানোর জন্য কোন উন্নতমানের বিকল্প ব্যবস্থা নেই। আগুন নেভাতে উন্নত ও স্বয়ংক্রিয় মই পর্যন্ত নেই। সবই সেকেলে ও মান্ধাতার আমলের। হেলিকপ্টারের সাথে ঝোলানো বালতিতে হাতিরঝিল থেকে পানি নিয়ে বিল্ডিংয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে সেই বালতির সমস্ত পানি ফুটো তলানী দিয়ে ঝরে গেছে। অথচ উন্নত দেশে আগুন নেভাতে ও মানুষ উদ্ধারে কত আধুনিক সরঞ্জাম ও ব্যবস্থাপনা দেখতে পাওয়া যায়। এর আগে আগুনে অসংখ্য মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর পরেও বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ফায়ার সার্ভিসকে আধুুনিক যন্ত্রপাতিতে উন্নত করেনি। যদি করতো তাহলে এতো মানুষের আগুনে পুড়ে প্রাণ যেতো না।
খবর ২৪ঘণ্টা/ জেএন