1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ চলে যাওয়ার সাত বছর - খবর ২৪ ঘণ্টা
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানয়ারী ২০২৫, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন

মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ চলে যাওয়ার সাত বছর

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৩ ফেব্ুয়ারী, ২০১৯

খবর২৪ঘণ্টা.কম: কীর্তিমানদের মৃত্যু নেই। শুধুমাত্র শারীরিক সমাপ্তি ঘটে তাদের। কর্ম এদের বাঁচিয়ে রাখে অনন্তকাল। তেমনই এক কীর্তিধন্য অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি। ‘জীবন মানে মৃত্যুর দিকে ক্রমাগত এগিয়ে যাওয়া’- ২০১১ সালের ২৯শে মে বন্ধুদের আয়োজন করা ‘বালাই ষাট’ নামে নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এ কথাটি বলেছিলেন ফরীদি। যেন এ কথার পথ ধরেই এগিয়ে গিয়ে পরের বছর এই দিনটিতে তিনি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন। আজ তার চলে যাওয়ার সাত বছর পূর্ণ হলো। হুমায়ুন ফরীদির জন্ম ১৯৫২ সালের ২৯শে মে ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে ঢাকার নারিন্দায়।
তবে জন্ম ঢাকায় হলেও শৈশব-কৈশোরে স্থায়ীভাবে তার থাকা হয়নি ঢাকায়। বাবার চাকরির সুবাদে ঘুরতে হয়েছে মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া,

চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুরসহ আরও অসংখ্য জেলায়। বাবা এটিএম নুরুল ইসলাম ছিলেন জুটবোর্ডের কর্মকর্তা। মা বেগম ফরিদা ইসলাম গৃহিণী। হুমায়ুন ফরীদির ডাকনাম পাগলা, সম্রাট, গৌতম প্রভৃতি। দুই ভাই দুই বোন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে শিক্ষাজীবন শেষ হলেও প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেছেন বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন স্কুলে। যেমন- প্রাথমিক স্কুল কালীগঞ্জ, হাইস্কুল মাদারীপুর আর চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি। এসএসসি শেষ করেন ১৯৬৮ সালে। এইচএসসি শেষ হয় ’৭০ সালে। একই বছর জৈব রসায়নে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর যুদ্ধ-অস্থিরতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর পড়া হয়নি তাই। পরবর্তীতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে

স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্র্রি নেন ফরীদি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলের ছাত্র ছিলেন তিনি। হুমায়ুন ফরীদির অভিনয় জীবনের শুরু ছাত্রজীবনে, মঞ্চ নাটকের মধ্য দিয়ে। তিন দশক চুটিয়ে অভিনয় করেছেন মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে। যেখানেই গিয়েছেন সাফল্যের বরপুত্র হয়েছেন। সব ক্ষেত্রেই যোগ করেছেন বহুমাত্রিক ব্যঞ্জনা। অভিনয়ের মাধ্যমে সব সময় ছড়িয়েছেন বাঁচার আলো, জীবনের আলো। ফরীদি নাট্যচর্চার পুরোধা ব্যক্তিত্ব নাট্যকার সেলিম আল দীনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। ১৯৭৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম নাট্যোৎসব আয়োজনেরও অন্যতম সংগঠক ছিলেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার দিনগুলোতেই ফরীদি সম্পৃক্ত হন ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে। বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সদস্য হিসেবেও অভিনয়ের আলো ছড়িয়ে বেড়ান সারাদেশে। যদিও এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তনাট্য প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে। এখানে তিনি ‘আত্মস্থ ও হিরন্ময়ীদের বৃত্তান্ত’ নামে একটি নাটক লিখেন, নির্দেশনা দেন এবং অভিনয় করেন। এ নাটকটি পাঁচটি নাটকের মধ্যে সেরা নির্বাচিত

হয় বিচারকদের কাছে। এ নাটকের সুবাদে পরিচয় ঘটে ঢাকা থিয়েটারের নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর সঙ্গে। মূলত এখান থেকে হুমায়ুন ফরীদির অভিনয় যাত্রা শুরু। ঢাকা থিয়েটারের মধ্য দিয়ে হুমায়ুন ফরীদির মঞ্চযাত্রা শুরু হয়। তিনি বলেছিলেন, চা আনা আর কস্টিউম পরিয়ে দেয়া পর্যন্ত তার প্রাথমিক গন্ডি। আর সেলিম আল দীনের ‘চরকাঁকড়ার ডকুমেন্টারি’ নাটকের প্রোডাকশনে কাজ করি। এরপর একই দলের একই লেখক ও নির্দেশকের ‘সংবাদ কার্টুন’-এ ছোট্ট একটি চরিত্রে সুযোগ পাই। তারপর ‘শকুন্তলা’। শকুন্তলার পর ‘ফণীমনসা’, ‘কীত্তনখোলা’, ‘কেরামতমঙ্গল’, ‘মুনতাসীর ফ্যান্টাসি’ এবং ১৯৯০ সালে ‘ভূত’ দিয়ে শেষ হয় হুমায়ুন ফরীদির ঢাকা থিয়েটার জীবন। আর এই ভূতের নির্দেশক ছিলেন তিনি নিজে। মূলত বন্ধু-অভিনেতা আফজাল হোসেনের সাহস এবং উৎসাহে হুমায়ুন ফরীদির টেলিভিশন যাত্রা শুরু হয়। আফজাল হোসেন বন্ধুর কথা

ভেবে পর পর অনেক নাটক লেখেন। যদিও টেলিভিশনে অভিষেকটা ঘটে আতিকুল হক চৌধুরীর মাধ্যমে। সেটাও অবশ্য আফজাল হোসেন ও রাইসুল ইসলাম আসাদের সুবাদে। সেলিম আল দীনের রচনা এবং নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর নির্দেশনায় ধারাবাহিক নাটক ‘ভাঙনের শব্দ শুনি’ দিয়ে বেশ আলোচনায় আসেন ফরীদি। এখানে তার চরিত্রটি ছিল বয়োজ্যেষ্ঠ সেরাজ তালুকদারের। যা ওই বয়সের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। হুমায়ুন ফরীদি টিভি নাটকে প্রথম অভিনয় করেন আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় ‘নিখোঁজ সংবাদ’-এ। তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য টিভি নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘নীল আকাশের সন্ধানে’, ‘দূরবীন দিয়ে দেখুন’, ‘ভাঙনের শব্দ শুনি’, ‘বকুলপুর কতদূর’, ‘মহুয়ার মন’, ‘সাত আসমানের সিঁড়ি’, ‘একদিন হঠাৎ’, ‘চাঁনমিয়ার নেগেটিভ পজেটিভ’, ‘অযাত্রা’, ‘পাথর সময়’, ‘দুই ভাই’, ‘শীতের পাখি’, ‘সংশপ্তক’,

‘কোথাও কেউ নেই’, ‘সমুদ্রে গাঙচিল’, তিনি একজন’, ‘চন্দ্রগ্রস্থ’, ‘কাছের মানুষ’, ‘মোহনা’, ‘বিষকাঁটা’, ‘ভবের হাট’ ও ‘শৃঙ্খল’। প্রথম মঞ্চনাটক কিশোরগঞ্জে মহল্লার নাটকে ১৯৬৪ সালে। প্রথম মঞ্চনাটক নির্দেশনা দেন স্কুল জীবনে ‘ভূত’। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটক-‘মুনতাসীর ফ্যান্টাসি’, ‘ফণীমনসা’, ‘শকুন্তলা’, ‘কীত্তনখোলা’, ‘কেরামত মঙ্গল’ প্রভৃতি। টিভি নাটক অথবা মঞ্চে সেলিম আল দীন এবং নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু জুটির বাইরে হুমায়ুন ফরীদির সর্বাধিক সংখ্যক এবং সর্বাধিক সফল কাজ ছিল হুমাায়ূন আহমেদের সঙ্গে। আর ‘সংশপ্তক’ ধারাবাহিকে তার অভিনীত চরিত্র কানকাটা রমজানের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। প্রথম চলচ্চিত্র অভিনয় তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’।

প্রথম বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘সন্ত্রাস’। এছাড়া উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ছবি হচ্ছে- ‘ভন্ড’, ‘ব্যাচেলর’, ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামলছায়া’, ‘একাত্তরের যীশু’, ‘মায়ের মর্যাদা’, ‘বিশ্বপ্রেমিক ও ‘পালাবি কোথায়’। বাংলা চলচ্চিত্রে খল চরিত্রে তিনি যোগ করেছিলেন এক নতুন মাত্রা। ‘সন্ত্রাস’ ছবির মাধ্যমে খলনায়ক চরিত্র শুরু হয় তার। তিনি ‘মাতৃত্ব’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতা শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ২০০৪ সালে। নিয়মিত অভিনয়ের পাশাপাশি হুমায়ুন ফরীদি তেমন একটা লিখতেন না, তবে কিছু টেলিফিল্ম, ধারাবাহিক ও এক ঘণ্টার নাটক নির্মাণ করেছেন। দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত এবং ওরামান্টিক এই মানুষটি ব্যক্তিগত জীবনে প্রথমে বেলি ফুলের মালা দিয়ে ফরিদপুরের মেয়ে মিনুকে বিয়ে করেন।

তখন এই বিয়ে সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। এ ঘরে তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। নাম দেবযানি। পরে তিনি ঘর বাঁধেন খ্যাতিমান অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফার সঙ্গে। কিন্তু ২০০৮ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। আমাদের সবার প্রিয় অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি চলে গেছেন চেনা, অজানা জগতে। যিনি দীর্ঘদিন ধরে অভিনয়শৈলী প্রদর্শন করে পর্দায় আবিষ্ট করে রেখেছিলেন কোটি কোটি দর্শককে। ফরীদি একজন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাকে অনুকরণ করে আনন্দ পাওয়া যেত। একজন মানুষ কতটা উচ্চমানের অভিনেতা হলে তাকে অনুসরণ করা যায়- ফরীদি ওই উচ্চতার অভিনেতা ছিলেন। যতদিন পর্দায় তার অভিনীত চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে, ততদিন দর্শক তাকে মনে রাখবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম মনে রাখবে তার সৃষ্টিকে।

খবর২৪ঘণ্টা, জেএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST