নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে অটোরিক্সা চালক জসিম উদ্দিন জয়কে তার সবচাইতে কাছের বন্ধু জসিম ছুরি দিয়ে জবাই করে। এ সময় তার অপর এক বন্ধু সুমন হাত-পা ধরে ছিল। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহমখদুম থানায় আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য জানান শাহমখদুম ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার হেমায়েত উল্লাহ। প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরো জানান, নিহত অটোরিক্সা চালক জসিম উদ্দিন জয় চলতি মাসের ৭ তারিখ আনুমানিক সকাল ৭টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে ভাড়া মারার উদ্দেশ্যে অটো নিয়ে বের হয়। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ভাড়া মারে। এরপর বিকেল ৫টার দিকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজিকরে না পেয়ে জয়ের চাচাতো মামা পরদিন ৮ জানুয়ারী শাহমখদুম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তদন্ত করে শাহমখদুম থানা পুলিশ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, মামলার ১ নং আসামী নগরীর শাহমখদুম থানাধীন শেখপাড়া বড়বনগ্রাম এলাকার আবুল কালামের ছেলে জসিম উদ্দিন (২৩) ও ২ নং আসামী গোদাগাড়ী থানার মাটিকাটা গ্রামের মৃত শাহ আলমের ছেলে সুমন আলী (২৬) গত ৭ তারিখ আনুমানিক দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শাহমখদুম থানাধীন নওদাপাড়া বাস টার্মিনালের সামনে থেকে অটোচালক জয়কে অপহরণ করে রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার জলাহার গ্রামস্থ কার্বের মোড়ের দক্ষিণ পাশে জনৈক শফিকুল হাজির পুকুর পাড়ে জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে গিয়ে ৩ নং আসামী মাটিকাটা গ্রামের মরিফুলের ছেলে রাজিব আলী (২৫) ওইদিন সন্ধ্যার পরে জয়কে ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে লাশ পুকুর পাড়ে জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে রাখে এবং অটোটি ১ নং আসামী জসিমের দুলাভাইয়ের বাড়ি নাটোরের আহমদপুরে লুকিয়ে রেখেছে। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের একটি দল জসিম ও সুমনকে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে। পরে তার ময়নাতদন্ত করে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। পরদিন ঘটনাস্থলের পাশ থেকে জবাইয়ের কাজে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি ও জামাকাপড় বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। এরপর ৩ নম্বর আসামী রাজিবকে গ্রেফতার করে। ১০ তারিখ আসামীদের নিয়ে নাটোরে অভিযান চালিয়ে অটোরিক্সাটি উদ্ধার করে। উপ-পুলিশ কমিশনার হেমায়েত উল্লাহ আরো জানান, অটোরিক্সা চালক জয়ের সব থেকে কাছের বন্ধু জসিম তাকে জবাই করেছে ও সুমন তার হাত-পা ধরে ছিল। এর আগে তাকে নেশাদ্রব্য জিনিস খাইয়ে তন্দ্রাচ্ছন্ন করে। রাজিব ও সুমন মেসে থেকে নগরীরএকটি হোটেলে কাজ করতো। কাজের আড়ালে এরা এই ভয়ংকর পরিকল্পনা করে। এমনকি অটোচালক জয়ের বাড়িতে গিয়ে জসিম একাধিকবার দাওয়াতও খেয়েছে। এরপরও এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটায় তারা। এর সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে বা কোনো সিন্ডিকেট আছে কিনা সে বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হবে। আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হবে। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে পারে বলে পুলিশ আশা করছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন, শাহমখদুম ডিভিশনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) তারিকুল ইসলাম, এসি হাফিজুল ইসলাম, শাহমখদুম থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ প্রমূখ।
খবর ২৪ ঘণ্টা/এমকে