খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: নির্বাচনের পরিবেশ ও সমতল ভূমি এখনো তৈরি হয়নি অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না নির্বাচন একটা প্রহসনের পরিণত হতে চলেছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তো দূরে থাকুক এখন চেষ্টা করা হচ্ছে এটাকে আরো কী করে খারাপ করা যায়। খানা-খন্দক আরো খোঁড়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিমুহুর্তে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) পরিপত্র জারি করছে বিভিন্ন সময়ে। যে পরিপত্রগুলো কখনোই নির্বাচনের সহায়ক নয়। বুধবার দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। এতকিছুর পরও ভোটারদের প্রতি আহ্বান রেখে তিনি বলেন, এই দেশ আপনাদের। আপনারা দেশের মালিক। নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে গিয়ে আপনাদেরকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে-এটা নাগরিক হিসেবে আপনাদের দায়িত্ব- আমরা সেই আহবানই জানাচ্ছি যে, নির্বাচনের দিন বেরিয়ে আসুন, ভোট কেন্দ্রে যান, ভোট নিশ্চিত করুন, ভোট কেন্দ্র সুরক্ষা করুন।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের বিধিতে আছে যে মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরে যতক্ষণ প্রতীক বরাদ্দ করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো সভা-সমাবেশ-মিছিল করা বন্ধ। অথচ সরকারি দল আওয়ামী লীগ প্রতিদিন সভা-সমাবেশ-মিছিল করছে সেখানে তারা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে না। আমি স্পষ্ট করে ইসিকে বলতে চাই, আপনারা যদি দায়িত্ব পালন করতে না পারেন তাহলে মৌলিক নীতিগত অবলিগেশন থাকে দেশবাসীর কাছে বলুন আমরা নিরপেক্ষ, মুক্ত ও স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছি না। তাহলে আপনাদের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করা উচিৎ। অন্যথায় সংবিধান আপনাদের যে দায়িত্ব দিয়েছে সেই দায়িত্ব নিয়ে আপনারা নির্বাচনটাকে নিরপেক্ষ করার সমস্ত ব্যবস্থা করুন।
তিনি বলেন, আমরা কমিশনকে বার বার বলেছি যে, আপনারা দায়িত্ব পালনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। কিন্তু সরকারের মন্ত্রী ও সরকারি দলের নেতা যা বলবেন সেভাবে আপনারা কাজ করবেন তাহলে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সরকারি দলে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ‘একদলীয় ও এক তরফা’ নির্বাচন করার চক্রান্ত করছে বলেও নানা অভিযোগ তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনে এসেছি আমাদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে। একদিকে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আটক করে রেখেছে, হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রেখেছে। আমরা জোর দিয়ে বলছি অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হোক, আটক নেতা-কর্মীদের মুক্ত করা হোক।
প্রতিদিন নতুন মামলা দিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এতো হীনমন্যতা কেনো? এতো ভয় কেনো? তার একটাই কারণ সুষ্ঠু নির্বাচন যদি, জনগণ যদি ভোট কেন্দ্রে যায় তাহলে তারা কোনো মতেই এই নির্বাচনে সফল হতে পারবে না, তাদের ভরাডুবি হবে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৯৭২ নেতা-কর্মীর নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা খবর পেয়েছি, জেলা দায়রা জজদের একটি সভা হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ে। সেখানে স্বনামধন্য সচিব নির্দেশ দিয়েছেন যে নির্বাচনের আগে তারা যেন জামিন না দেন। এই কথাগুলো অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি আনুষ্ঠানিকভাবে বলছি যে, আমরা এখন পর্যন্ত মনোনয়নের তালিকা চূড়ান্ত করতে পারিনি। আশা করছি যে, আজকের মধ্যে করে ফেলতে পারবো। যদি করে ফেলতে পারি তাহলে সন্ধ্যার পরে আমরা আপনাদেরকে জানাবো।
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন