খবর ২৪ঘণ্টা ডেস্ক: জীবিত অনেক ভোটারের তথ্য ডাটাবেইজে মৃত দেখাচ্ছে। যার কারণে ভোটার বা ব্যক্তি তার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দিয়ে কোনো কাজ করতে পারছেন না। ভোগান্তির শেষ নেই এসব নাগরিকদের।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ নিয়ে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা হওয়ার আশঙ্কায় এমন ভোটারদের তথ্য দ্রুত সংশোধন করার উদ্যোগ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সকল আঞ্চলিক, সিনিয়র জেলা/জেলা ও উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসারের কাছে সম্প্রতি পাঠানো জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সহকারী পরিচালক (গবেষণাও উন্নয়ন) আরাফাত আরা স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, কোনো কোনো উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস থেকে জানানো হচ্ছে যে, ভোটার জীবিত, কিন্তু ডাটাবেইজে মৃত দেখাচ্ছে। এতে করে ভোটার বা ব্যক্তি জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে কোনো কাজ করতে পারছেন না।
এ ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে এতে বলা হয়, জীবিত কিন্তু ডাটাবেইজে মৃত স্ট্যাটাসে রয়েছে এমন ভোটারদের তথ্য ২৫ অক্টোবরের মধ্যে উপজেলা অফিস চিঠি দিয়ে জেলা নির্বাচন অফিসকে, জেলা অফিস জানাবে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসকে। এ সময়ের মধ্যেই আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস তথ্যগুলো সমন্বয় করে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে পাঠাবে। তা না হলে এ ধরনের ভোটারদের নিয়ে নির্বাচনের সময় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে।
আইসিটি বিভাগ এমন আবেদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে। এছাড়াও ইতোপূর্বে এ ধরনের সকল আবেদন ২৫ অক্টোবরের মধ্যে নিষ্পন্ন করবে বলেও ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটারদের আবেদন দ্রুত নিষ্পন্ন করা প্রয়োজন উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য সারাদেশে প্রচুর আবেদন তদন্তাধীন অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে এবং এতে করে মানুষ দীর্ঘদিন জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতোপূর্বে চলতি বছরের ২৫ জুলাই ও ৬ আগস্ট এনআইডি সংশোধনের আবেদন যথাযথ সময়ে আপলোড করা এবং অনিষ্পন্ন তদন্তসমূহ ১৬ আগস্টের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য সময়সীমা বেধে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেক উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তা নির্বাচন ও কাজের ব্যস্ততার কারণে তা পারেনি।
তদন্তের বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়, যেসব আবেদনের তদন্ত চাওয়া হয়েছে সেগুলো ৩০ অক্টোবরের মধ্যে না পাঠালে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে দায়ভার নিতে হবে। বিশেষ কোনো সমস্যা থাকলে, কারও অধিক তদন্ত থাকলে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন না হলে তদন্তের সংখ্যা উল্লেখ করে কত তারিখের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব তা জানাতে হবে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, যেসব আবেদন সংশোধনের জন্য অতিরিক্ত কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে সেগুলোর ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে ফোন করে বা সম্ভাব্য অন্য কোন পন্থায় জানাতে হবে। উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস আবেদনকারীর সাথে যোগাযোগের রেকর্ড সংরক্ষণ করবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদনকারী দলিলাদি না দিলে উক্ত আবেদন বাতিলের ক্ষেত্রে দায় আবেদনকারীকেই নিতে হবে। আর যদি আবেদনকারীর সাথে যোগাযোগ না করে কোনো আবেদন প্লিজ সাবমিট ডকুমেন্ট দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারণে কোনো আবেদন বাতিল হয়, তার দায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নিতে হবে।
এছাড়া জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সহকারী পরিচালক (মানবসম্পদ ও প্রশিক্ষণ) মোছা. সিরাজুম মনিরা চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রন্ত যাবতীয় কার্যক্রম (অন্তর্ভুক্তি, সংশোধন ও স্থানান্তর) বন্ধ থাকবে বিধায় সকল অঞ্চলের অনিষ্পন্ন নথি নিষ্পন্ন করার জন্য অতিরিক্ত কাজ করা প্রয়োজন। এ জন্য ১ নভেম্বর পর্যন্ত সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অফিস খোলা রেখে ভোটার তালিকার সিডি, স্থানান্তর ও সংশোধনের আবেদন নিষ্পন্ন করার জন্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ এবং আইডিইএ প্রকল্পের আদিষ্ট হয়ে অনুরোধ করা হলো।
দীর্ঘদিনেও আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ইসির যুগ্ম-সচিব ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক মো. আবদুল বাতেন বলেন, জনবল সঙ্কটের কারণে যথাসময়ে আবেদন নিষ্পন্ন করা যায়নি।
ইসির ঘোষিত সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী এবার মোট ভোটার ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩২৯ জন ও নারী ৫ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ১৫১ জন।
এই তালিকা তৈরির পর যারা ভোটার তালিকাভুক্ত হবেন অথবা ভোটার এলাকা পরিবর্তন করবেন, তাদের জন্য সম্পূরক ভোটার তালিকা তৈরি করা হবে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
খবর ২৪ঘণ্টা/ নই