নিজস্ব প্র্র্রতিবেদক :
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর সেই অনেক স্বপ্নই বাস্তবায়ন করছেন তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ দ্রুতই পাল্টে যাচ্ছে, পদ্মা সেতু হচ্ছে, চার লেন বড় বড় রাস্তা হচ্ছে, কর্ণফূলী নদীর নিচ দিয়ে টার্নেল হচ্ছে, ফ্লাইওভার হচ্ছে, শিক্ষার মান বাড়ছে। এজন্য অনেকের হিংসা হচ্ছে, ঈর্ষা হচ্ছে। তাদের মুখে ছাই দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে। আমরা যে কাঙ্খিত লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি, উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা অব্যহত রাখতে হবে। ইনশাল্লাহ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশকে এমন জায়গায় নিয়ে যাবেন, যাতে বাংলাদেশ হবে সারাবিশে^র বিস্ময়। শনিবার সকালে মহানগরীর হেলেনাবাদ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্ণার’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মেয়র আরো বলেন, যে উন্নত বাংলাদেশের জন্য আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিলেন, তারা আজ সেটি দেখতে যাচ্ছেন। এটি কেবল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যেই সম্ভব হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলিঙ্গনের স্মৃতিচারণ করে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হেনার সন্তান মেয়র লিটন বলেন, জীবনে একবার ১৯৭৪ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আলিঙ্গন পেয়েছি। আমার বাবা তখন মন্ত্রী ছিলেন। ঈদের ছুটিতে আমরা দুই ভাই কলকাতা থেকে ঢাকায় এসেছিলাম। সেইবার ঈদের নামাজ পড়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে বঙ্গবন্ধু নিজেই তাঁর সহকর্মী আমাদের বাবা শহীদ কামারুজ্জামানের সরকারি বাসভবনে এসেছিলেন। আমরা বাড়ির সামনে বাইসাইকেল চালাচ্ছিলাম। বঙ্গবন্ধুকে দেখে আমরা দুইভাই দাঁড়িয়ে যাই। বঙ্গবন্ধু গাড়ি থেকে নেমে আমার বাবাকে ডাক দেন, বাবা তখন তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হন। এ সময় বঙ্গবন্ধু আমাদের বলেন, ‘তোরা এদিকে আয়’। আমরা দুইভাই ভয়ে ভয়ে তাঁর কাছে যাই। তিনি তাঁর বিশাল বুকের মধ্যে আমাদের দুইভাইকে জড়িয়ে নেন, আলিঙ্গন করেন। এটি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন।
বঙ্গবন্ধু কর্ণার উদ্বোধন প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, আজ রাজশাহীর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কর্ণার উদ্বোধন করা হলো। এটি ইতিহাসের একটি অংশ হয়ে থাকলো। এখান থেকে শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু সর্ম্পকে অনেক কিছু জানতে পারবে। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ও
বাংলাদেশ সর্ম্পকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কয়েকটি প্রশ্ন করেন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। সঠিক উত্তরাদাতা সাতজন শিক্ষার্থীকে তাৎক্ষনিক অর্থ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি। কুইজে বিজয়ী শিক্ষার্থীরা হলেন, নবম শ্রেণীর ছাত্রী এমজেড মম, সাদিয়া হক, আতিয়া সুলতানা, সিরাজুন মুনিরা, সপ্তম শ্রেণীর নূরে আফসানা প্রিয়, আনিকা মুস্তারিন মৌমিতা, ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ঈশিতা চৌধুরী।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আমিনুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম, আব্দুস সামাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি)
নজরুল ইসলাম, রাজশাহী মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তৌহিদ আরা প্রমুখ। এরআগে ফিতা কেটে বঙ্গবন্ধু কর্ণার উদ্বোধন করেন মেয়র লিটন। অন্যদিকে নগরীর কাদিরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১ নং দড়িখরবোনা প্রাথমিক বিদ্যালয়েও বঙ্গবন্ধু কর্ণার ও স্কাউট বাণী লিপিবদ্ধকণের উদ্বোধন করেন মেয়র লিটন। উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশব, কৈশোর, রাজনৈতিক তথা সমগ্র জীবন সর্ম্পকে বর্তমান প্রজন্মকে ধারণা দিতে রাজশাহী জেলা ও মহানগরের এক হাজার ৯৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ^বিদ্যালয়ে একযোগে আজ বঙ্গবন্ধু কর্ণার উদ্বোধন করা হলো। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর রহমানের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে এর পরিকল্পনায় আছেন জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের।
খবর ২৪ ঘণ্টা/এমকে