নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মহানগরীতে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত হওয়ার ঘটনায় ট্রাক চালক জীবন ও মালিক বাবুর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে হঠাৎ করেই রাস্তার মধ্যে ট্রাক রেখে অবরোধ শুরু করে ট্রাক শ্রমিকরা। মালিক বাবুর বাড়ি মান্দা থানার চৌবাড়িয়া এলাকায় ও চালকের বাড়ি রাজশাহী মহানগরীতে। হঠাৎ করে রাস্তার মধ্যে ট্রাক রেখে নগরীর প্রবেশ পথগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়েন অন্যান্য যানবাহন চালক ও যাত্রীরা। এতে দীর্ঘ সময় প্রচণ্ড গরমের মধ্যে তাদের বাসসহ অন্যান্য যানবাহনে বসে অপেক্ষা করতে হয়। সামান্য কারণে রাস্তা অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রাজশাহী মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ চারটি প্রবেশপথই ট্রাক রেখে অবরোধ করা হয়। এ কারণে দীর্ঘ যানজট লেগে যায়। ওই সময়ের মধ্যে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঢাকা ও নওগাগাঁমী কোন বাস বাইরে বের হতে বা প্রবেশ করতে পারেনি। গতকাল সোমবার দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল পৌনে ৪টা পর্যন্ত ট্রাক শ্রমিকরা একযোগে নগরীর প্রবেশ পথগুলো অবরোধ করে রাখে। পরে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েকদিন আগে রাজশাহীর পবা উপজেলার বালিয়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিশু নিহত হয়। ওই ঘটনায় নিহত শিশুর দাদা আলম বাদী হয়ে নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশ সোমবার সকালে অভিযান চালিয়ে মালিক বাবু ও চালক জীবনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালতের বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ খবর শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা আদালত প্রাঙ্গনেই জড়ো হয়। পরে একাযোগে নগরীর চারটি পয়েন্ট অবরোধ করে। অবরোধের সময় বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতকারী যানবাহনগুলো আঁটকা পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে যাত্রীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। আব্দুল্লাহ নামের এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আদালতের বিচারক যা ভালো মনে করেছেন তা করেছেন। তাহলে কেন জোরপূর্বক এমন করছে শ্রমিকরা। আইনি প্রক্রিয়া তারা লড়তে পারে। পরে ট্রাক শ্রমিক নেতারা অবরোধ তুলে নিতে বললে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়। অবরোধ তুলে নিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। চারটি পয়েন্টে অবরোধ করা হয়। সেগুলো হলো, কাশিয়াডাঙ্গা মোড়,
নওদাপাড়া আমচত্বর মোড়, রেলগেট ও তালাইমারী। এ বিষয়ে নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি রবিউল ইসলাম বলেন, শিশু নিহত হওয়ার ঘটনায় নিহত শিশুর দাদা আলম তিনজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় আদালত তাদের আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ খবর শোনার পরে তারা অবরোধ করে। পরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। রাজশাহী জেলা ট্রাক, ট্যাংক লরী ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আক্কাশ বলেন, প্রথমে শ্রমিকরা না বুঝেই রাস্তা অবরোধ করেছিল। পরে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই শ্রমিকদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
খবর ২৪ ঘন্টা/এমকে
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।