নিজস্ব প্রতিবেদক:
আমার নেত্রী আমার মা, বন্দি থাকতে দেবনা, এই স্লোগান নিয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে নগর বিএনপির মালোপাড়াস্থ কার্যালয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে ও নি:শর্ত মুক্তি এবং আশুরোগ মুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের আয়োজনে মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি কেন্ত্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমেটির সদস্য সাইফুল ইসলাম মার্শাল ও জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ স¤পাদক সৈয়দ মহসিন আলি।
অন্যদের মধ্যে বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু, রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সভাপতি শওকত আলী, শাহমখদুম থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ বাবু, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল হক রানা, জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম সমাপ্ত, সাংগঠনিক স¤পাদক জুলফিকার আলী ভুট্টু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমন, সাংগঠনিক স¤পাদক আনন্দ কুমার, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ স¤পাদক ওয়ালিউজ্জামান পরাগ, মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়িক এ্যাডভোকেট রওশন আরা পপি, শামসুন নাহার, লাকি, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামন জনি, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবি, যুগ্ন সাধারণ স¤পাদক আকবর আলী জ্যাকি ও নাহিন আহমেদ সহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিনু বলেন, বাংলাদেশে কোন গণতন্ত্র নাই। গণতন্ত্র না থাকার কারনে এই ফ্যাসিস্ট,অবৈধ ও অনির্বাচিত সরকার ও সরকার প্রধান পুলিশ বিভাগ ও প্রশাসনের মাধ্যমে যা ইচ্ছা তাই করছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে একরে পর এক অন্যায় করে চলছে। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। গত মাসে ৩০ তারিখের সিটি নির্বাচনে আওয়ামী দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার নির্লজ্জভাবে পুলিশ ও প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে। তাদের দিয়ে রাতের অন্ধকারে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছে। নির্বাচনের দিন সকল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে সকল নির্বাচন বুথে মেয়রের ব্যালট পেপার শেষ করে ফেলেছে। এই কাজে শুধু পুলিশ নয় আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা জোর করে নৌকাতে ভোট দিয়েছে এবং সাধারণ জনগণকে জিম্মি করে নৌকায় ভোট দিয়ে নিয়েছে। এইভাবে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে জোর করে সরকার দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করেছে। কিন্তু এই বিজয় আওয়ামী লীগেরে হয়নি। তারা এখন জনগণ ও দেশবাষীর ঘৃনারপাত্রে পরিণত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মিনু আরো বলেন এই সরকারকে আর কেউ বিশ্বাস করেনা। তিনি দ্রুত এই সরকারের পতনের আন্দোলনের জন্য নেতা কর্মীদের প্রস্তুত হওয়ায় আহবান জানান। তিনি বলেন অন্যায়ভাবে গণতন্ত্রের মানষকন্যা, তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এই বৃদ্ধ বয়সে নির্জন কারাগারে রেখেছে। তিনি এখন শারীরিকভাবে অত্যান্ত অসুস্থ্যতার কারণে আদালতে পর্য়ন্ত তিনি আসতে পারছেনা। অথচ এই সরকার তাকে চিকিৎসা না করে কারাগারে তিলে তিলে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে। বেগশ খালেদা জিয়ারন নি:শর্র্ত মুক্তি দাবাী করেন মিনু। সেইসাথে বেগম খালেদা জিয়াকে তাঁর জন্মদিকে শুভেচ্ছা জানান এবং বেগম জিয়ার আশুরোগ মুক্তি কামনা করেন তিনি।
মিলন বলেন, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে আর কোন নির্বাচন সুষ্ঠভাবে হবেনা। তিনি এই আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনে দ্রুত অপসারনের দাবী জানান। মিলন আরো বলেন, এই সরকার জোর করে ক্ষমতায় থেকে দেশের মানুষকে জিম্মি করে ফেলেছে। অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জোর করে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই অবৈধ সরকারের নির্যাতন, অত্যাচার, খুন ও গুমের কারণে মানুষ পথ চলতে ভয় পায়। বাংলাদেশের মানুষ এখন এই ফ্যাসিষ্ট সরকারের কবল থেকে মুক্তি চায়। আর মুক্তির জন্য এই সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলে তিনি বক্তৃতায় উল্লেখ করেন। সেইসাথে বেগম জিয়াকে তাঁর জন্ম দিনের শুভেচ্ছা জানান এবং আশুরোগমুক্তি কামনাসহ দ্রুত নি:শর্ত মুক্তি কামনা করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে বুলবুল বলেন, বর্তমান সরকারের নির্যাতন আর অন্যায় অনাচারের মুখোশ উন্মোচন করতেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছিল বিএনপি। সেই স্বৈরাচারি মুখোশ আজ উন্মোচিত হয়েছে। তারা হায়নার মত আচরণ করে বিএনপি’র বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। জোর করে দলীয় প্রার্থীকে তারা বিজয়ী করেছে। এই সরকারের অধিনে আর কোন নির্বাচন নয়। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচনের জন্য এই সরকারকে বাধ্য করা হবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের সাধারণ মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাদের এই মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে তারা যুদ্ধ শুরু করেছেন। জনগনকে সাথে নিয়েই সে যুদ্ধে জয়ী হবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি দেশের একটি ছোট্ট শিশুরও আশা নেই ।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটি পুতুল নির্বাচন কমিশন। তারা সরকার দলীয় খাচায় আবদ্ধ। তিনি বলেন, দেশে এখন চোরাকারবারিদের প্রাদুর্ভাব বেশী দেখা যাচ্ছে। দেশের অর্থ ও ভূখন্ড বিদেশের হাতে তুলে দিয়ে যারা নিজেদের শক্তিশালী ভাবার অপচেষ্টা করছে তাদের মুখোশ খুলে দিতে হবে। বক্তব্য শেষে বেগম জিয়ার রোগ মুক্তি, তাঁর দীর্ঘ্যায়ু কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে