খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: নির্বাচনের মাত্র মাস পাঁচেক বাকি, অথচ কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি। এ অবস্থায় দলের করণীয় নির্ধারণে তৃণমূল নেতাদের মত জানতে জেলা নেতাদের ঢাকায় ডেকেছে বিএনপি। গত সপ্তাহেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, মূলত ভবিষ্যতের করণীয় সম্পর্কে মতামত জানতে তৃণমূল নেতাদের ঢাকায় ডাকা হয়েছে। তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে জেলা নেতাদের ঢাকায় আসতে বলা হয়েছে।
দলের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সর্বশেষ গুলশানে দলের স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যের বিশেষ বৈঠকে তৃণমূল নেতাদের ঢাকায় ডাকার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। এক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকদের পূর্ব গৃহীত কোনও সিদ্ধান্তও তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে। দলের ঐক্যবদ্ধ শক্তির বহিঃপ্রকাশে স্থানীয় নেতাদের পরামর্শ দেওয়া হবে। যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন কোনও কৌশলের গ্রহণ হতে পারে আসন্ন বৈঠকের কারণ।
সভাটি আয়োজন হতে পারে ঈদুল আযহার আগে ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর। ঢাকার বিশেষ কোনও হোটেল বা হলরুম ভাড়া করে সভাটি অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে ভেন্যু ও দিনক্ষণ জানাতে পারেনি সূত্র। প্রত্যেক জেলা কমিটির সভাপতি, সেক্রেটারি, সিনিয়র সহসভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা বিশেষ এ বৈঠকে ডাক পাচ্ছেন।
দুই ভাগে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বসবেন নীতিনির্ধারকরা। ৩ আগস্ট নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ এবং ১০ আগস্ট ঢাকা, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা বিভাগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হবে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে।
বিএনপি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সর্বশেষ ২২ জুলাই সম্পাদকম-লীর নেতাদের নিয়ে পৃথক বৈঠক করেছে স্থায়ী কমিটি। বৈঠকে মূল এজেন্ডা ছিল আন্দোলন ও নির্বাচন। এতে প্রায় সব নেতাই চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনো নির্বাচনে যাওয়া ঠিক হবে না বলে মত দেন। সে ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে দ্রুত আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার পক্ষে বক্তব্য দেন।
খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার আগে রাজধানীর একটি হোটেলে নির্বাহী কমিটির নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন। ওই বৈঠকেও সিদ্ধান্ত হয়েছিল খালেদা জিয়াকে ছাড়া জাতীয় কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না।
খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর পর এই প্রথম তৃণমূল নেতাদের ঢাকায় তলব করা হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরামর্শে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু জানান, খুলনা বিভাগের নেতাদের ৩ জুলাই ডাকা হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, এরশাদের সময়ও আন্দোলন বা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তৃণমূলের মতামত নিতেন। এখন তিনি ভিত্তিহীন মামলায় রাজনৈতিক কারণে কারাবন্দি। তাকে মুক্ত করাই হচ্ছে আমাদের মূল লক্ষ্য। আর যেহেতু সামনে নির্বাচন, সে বিষয়েও আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ বিষয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মতামত দেবেন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন কেমন হবে, তা জানার পরও খুলনা এবং গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আমরা অংশ নিয়েছি। অনেকেই বলেছিলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশ না নেওয়া ছিল বিএনপির ভুল সিদ্ধান্ত। তারা কিন্তু এখন চুপ। এখন আবার নতুন কথা চালু হয়েছে- রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়া ঠিক হয়নি। কারণ এই সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সরকারের মুখোশ উন্মোচন করতে এবং মানুষের এই বক্তব্য শুনতেই এই তিন সিটিতে অংশ নিয়েছি। বিদেশি কূটনীতিকরাও বাস্তব চিত্র বুঝতে পেরেছেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/জেএন
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।