খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘প্রতিরোধের ঘোষণা’ দিয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে মুক্ত খালেদা জিয়াকে নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দলটির নেতারা। শুক্রবার বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে বিএনপি নেতারা এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ডাকা সমাবেশে ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ থেকে বক্তব্য দেন দলের নেতারা।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন করতে চায় সরকার। প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে তারা ক্ষমতায় আসতে চায়।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেয়া হবে না। তার মুক্তি না হলে দেশে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না। বিদেশিরা বলেছেন, দেশের মানুষ বলছেন- বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে না।
আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না ঘোষণা দিয়ে ড. মোশাররফ বলেন, নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে এবং মিথ্যা মামলা তুলে নিতে হবে।
‘এছাড়া নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নির্বাচনে কিছুদিনের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন করতে হবে’ যোগ করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনের এক নম্বর শর্ত হচ্ছে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে কারাগারে রেখে কোনো নির্বাচন হবে না। দেশের মানুষ তা হতে দেবে না।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে আওয়ামী লীগ ২০টা আসনও পাবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামী নির্বাচনের প্রথম শর্ত খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে কারাগারে রেখে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না, জনগণ ওই নির্বাচন হতে দেবে না।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার অনির্বাচিত অবৈধ। এদের হাত থেকে দেশের মানুষ মুক্তি চায়। এরা দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির মাধ্যমে ভয়ের রাজ্য তৈরি করেছে। দেশের প্রতিটি মানুষ অনিরাপদ। তারা স্বাভাবিক মুত্যুর গ্যারান্টি চায়।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, ‘মাদক অভিযানের নামে নিরপরাধ ও ছাত্রনেতাদের হত্যা করা হচ্ছে। কোটা সংস্কারের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের প্রথমে তুলে নেয়া হচ্ছে, সাত-আট দিন গুম রেখে পরবর্তীতে পুলিশি নির্যাতনে নেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে আজকে সরকার একটিমাত্র উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি রেখেছে। সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় পায় বলে তাকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায়। তারা খালেদা জিয়াকে আটকে রেখে ফের নির্বাচনের নামে সাজানো নাটক করতে চায়।
এসময় নবগঠিত ৮টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জোটকে অভিনন্দন জানান এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে জগদ্দল পাথরের ন্যায় বুকে চেপে বসে থাকা সরকারকে সরাতে আন্দোলনে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আমীরুল ইসলাম খান আলীমের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবেদীন ফারুক, আবুল
খায়ের ভুইয়া, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেমহোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর (উত্তর) বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ ) সাধারণ সম্পাদক কাজীআবুল বাশার, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরু, ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, জাতীয় সামাজিক সংস্থা (জাসাস) সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খান, যুবদল ঢাকা মহানগর (উত্তর ) সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর, যুবদল ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) সভাপতি রফিকুল আলম মঞ্জু প্রমুখ।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/জেএন