বিনোদন ডেস্ক: বলিউডের অটোবায়োগ্রাফি সিনেমাগুলোর মধ্যে একটি রীতি চলে এসেছে, সেটি হচ্ছে ‘জাস্টিফিকেশন’। সমালোচিত যেকোনো মানুষকে নিয়ে সিনেমা বানানো হবে আর সেই সিনেমায় মানুষটিকে অনেকাংশেই পূতপবিত্র হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করা হবে।
ইমরান হাশমি অভিনীত ‘আজহার’ সিনেমার পর সাঞ্জুও তেমনই একটি জাস্টিফিকেশন। পুরো সিনেমাজুড়ে সঞ্জয় দত্তকে একজন ভালো ও পরিস্থিতির শিকার অসহায় মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সঙ্গদোষে মাদক সেবন আর ৩০০-এর অধিক নারীর সঙ্গে রাত কাটানো ছাড়া আর কোনো অপরাধেই তাকে দোষী বলা যাবে না। এক মহৎ কারণের সঙ্গে একে-৫৬ রাইফেল রাখা, নিজেকে বাঁচাতে আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা, জেল না খাটার প্রস্তাব পেয়েও বোমা হামলার কনফেশনে সাইন না করা, যতভাবে জুনিয়র দত্তকে অসাধারণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রমাণ করা যায়, ঠিক সেটিই করেছেন গল্পকার ও পরিচালক। আর তাতে পুরোপুরি সফলই হয়েছেন।
রাজকুমার হিরানী ও অভিজাত জোশি সাঞ্জু সিনেমার মাধ্যমে ভারতের সংবাদমাধ্যম, বিচারব্যবস্থা ও পাবলিক সেন্টিমেন্টকে রীতিমতো অপমান করে ছেড়েছেন। একপর্যায়ে মনে হয়েছে জীবনে হাজার পাপ করলেও একসময়ে এসে একটি আত্মজীবনী বানালেই একেবারে ধোয়া তুলসী পাতা হয়ে যাওয়া সম্ভব। এ রকম জাস্টিফিকেশনের আড়ালে আত্মজীবনীমূলক সিনেমা কতটা যুক্তিযুক্ত, সেটিই এখন প্রশ্ন।
সবকিছুর বাইরে পরিচালনা, সম্পাদনা আর অভিনয়ের দিক থেকে সাঞ্জু অসাধারণ। সঞ্জয় দত্তের চরিত্রে রণবীর কাপুর আর সুনীল দত্তের চরিত্রে পরেশ রাওয়াল ছিলেন অনবদ্য। এই দুজনের বাইরে সঞ্জয়ের বন্ধুর অভিনয় করা ভিকি কৌশালও বেশ ভালো ছিলেন। ছোট ছোট চরিত্রে সোনম কাপুর, আনুশকা শর্মা, জিম শার্ভ, দিয়া মির্জাও বেশ সাপোর্টিভ ছিলেন।
পরিচালক রাজকুমার হিরানী আগের মতোই সফলতার সঙ্গে দর্শকের আবেগ নিয়ে কাজ করতে সক্ষম হয়েছেন। সিনেমার বেশ কিছু দৃশ্য ছিল চোখে পানি আনার মতো।
কাহিনি আর সঞ্জয় দত্তের জীবনের ঘটনাগুলো নিয়ে অনিশ্চয়তা বাদ দিলে ‘সাঞ্জু’ সিনেমা ‘পিকে’ আর ‘থ্রি ইডিয়টসে’র মতোই আরেকটি মাস্টারপিস।
খবর ২৪ঘণ্টা/ নই