খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আগামী বৃহস্পতিবার (২১ জুন) সারা দেশে জেলা ও মহানগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ঘোষণা দেন।
রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশে চলছে এক আজব শাসন। এখানে বিরোধী দল, বিরোধী মত ও বিরোধী বিশ্বাসের মানুষরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অবৈধ ক্ষমতার শক্তিতে এখন দেশে দণ্ডমুণ্ডের কর্তা সেজে বসেছে। দেশের সর্বজনপ্রিয় নন্দিত-নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে শুধু অন্যায়ভাবে সাজাই দেওয়া হয়নি, এখন তার ওপর চলছে নানা কায়দায় অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতন।’
দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘তার (খালেদা জিয়া) শারীরিক অসুস্থতার যেন যথাযথ চিকিৎসা না হয় তার জন্য সরকার এমন কোনো ফন্দি নাই যা করছে না। চিকিৎসাকে বিলম্বিত করার জন্য মন্ত্রীদের দিয়ে নানান কাহিনী শোনানো হচ্ছে মানুষকে। এখন শুধু কারা কর্তৃপক্ষই নয় এর সাথে যুক্ত হয়েছে সরকারের বানিজ্যমন্ত্রী, সেতু ও যোগাযোগমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তারা এমন কথা বলছেন, যেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হলে তাতে মনে হয় মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে।’
দলটির জেষ্ঠ্য এই নেতা বলেন, ‘বারবার কারাবিধির কথা বলে মন্ত্রীরা বেগম জিয়াকে তার যথাযথ চিকিৎসা নিতে বিষয়টিকে গায়ের জোরে আটকাতে চাচ্ছে। কারাবিধি নিয়ে মন্ত্রীদের কথায় মনে হয় তারা যেন ধর্মীয় বাণী আওয়াচ্ছেন, যেটির বরখেলাপ হলে মহাপাপ হয়ে যাবে। বেগম খালেদা জিয়া ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চান এইজন্য যে, ইতিপূর্বে তিনি সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, উন্নতমানের পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি-যেগুলো সুযোগ ইউনাইটেড হাসপাতালে রয়েছে বলেই তিনি সেখানে চিকিৎসা করাতে চান। রোগী সাধারণত আস্থাভাজন চিকিৎসকের কাছেই যেতে চান।’
রিজভী বলেন, ‘১৮৯৪ সালে কারাবিধি যখন তৈরি হয় তখন ইউনাইটেড কিংবা স্কয়ার হাসপাতাল ছিল না। কিন্তু এখন বেসরকারি হাসপাতালে সেবার মান উন্নতমানের বলেই মানুষ সেখানে ভিড় করে। সরকারি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকলেও সেবার মান এত নিন্মমানের যে মানুষ জমি-জায়গা বিক্রি করে হলেও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। বিদ্যমান কারাবিধিতেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্কয়ারের ন্যায় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন, এ বিষয়টি আইনমন্ত্রী, সেতুমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এড়িয়ে যান। কারণ শেখানো বুলি ছাড়া মন্ত্রীদের করার কিছু নেই।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বক্তব্যের জের ধরে রিজভী বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘তিনি (বেগম জিয়া) রাজি হলে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তাকে নেওয়া যেতে পারে।’ অর্থাৎ সরকার তাকে হাতের মুঠোর মধ্যে রাখার নিশ্চিত করতে চায় বলেই এর বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে চায় না। সেজন্যই আমরা বলেছি বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে আরও গুরুতর, আরও বিপদজনক অবস্থার দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্যই সরকার গড়িমসি করছে।”
সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি বলতে চাই, এই মুহুর্তে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। ইউনাইটেড হাসপাতালে তার যথাযথ চিকিৎসা দিতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ক্ষমতা থেকে সরে গিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। নইলে লেট ক্লিয়ারিং এর জন্য অনেক বেশি ডেমারেজ দিতে হবে।’
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ