ওমর ফারুক :
রাজশাহীর তানোর উপজেলার কলমা-থেকে বিল্লী পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা জরাজীর্ণ অবস্থার মধ্যে পড়ে ভেঙ্গে গিয়ে যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। রাস্তায় বের হলেই যেন ভোগান্তির শেষ নেই। তিন কিলোমিটার রাস্তা যেতে প্রায় ২৫ মিনিট লাগে। রাস্তা ভেঙ্গে ইট, বালি ও পিচ উঠে খানা-খন্দে ভরে গেছে। আর প্রায় সময় যানবাহনের টায়ার লিক হয়ে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন চালক ও পথচারীদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০২-০৩ সালের দিকে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তানোর উপজেলার দেউল থেকে বিল্লী পর্যন্ত কাঁচা থেকে পাকা রাস্তা নির্মাণ করে। তার আগে রাস্তাটি মাটির কাঁচা ছিল।
এর কয়েক বছর পর রাস্তাটি ভেঙ্গে চুরে যায়। রাস্তা ভেঙ্গে গেলে ২০০৯ সালের পর একবার ভাংগা চোরা রাস্তা মেরামত করা হয়। কয়েক বছরের পর আবার রাস্তাটি ভেঙ্গে খানা-খন্দে ভরে যায়। পুনরায় পথচারী ও যানবাহন চালকরা ভোগান্তিতে পড়েন।
এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি ভেঙ্গে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়লেও আর মেরামত করা হয়নি। মেরামত না হওয়ায় ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ ও যানবাহন চালকরা ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। তখন পথচারীদের আরো বেশি ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, কিছুদিন আগে দেউল থেকে কলমা পর্যন্ত ভাংগা রাস্তা মেরামত করা হলো হয়। কিন্তু কলমা থেকে বিল্লী পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা মেরামত করা হয়নি। কর্তৃপক্ষ বলছেন, ফান্ড শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে রাস্তা মেরামত করা সম্ভব হয়নি। যে রাস্তাগুলো মেরামত হয়েছে সেই রাস্তাগুলো আবার পিচ উঠতে শুরু করেছে।
এদিকে, রাস্তাটি দীর্ঘ দিন ধরে মেরামত না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, এ রাস্তা অনেক বছর ধরে অবহেলায় পড়ে রয়েছে। মেরামতের উদ্যোগ কেন নেওয়া হয়না তা বোধগম্য নয়। শুধু এই সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার জন্য চলাচলে অনেক সমস্যা হয়। কম সময়ের মধ্যে স্থানীয় মানুষজন এই রাস্তা মেরামতের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান।রাস্তাটি কলমা থেকে বিল্লী হয়ে মুন্ডমালা, নেজামপুর, নাচোল ও আমনুরা যাওয়ার প্রধান রাস্তা। তারপরও অবহেলা অনাদরে পড়ে রয়েছে।
ওই রাস্তা দিয়ে নাচোলের উদ্দেশ্যে যাওয়া মাহিদুল নামের এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, আমি এই রাস্তা দিয়ে নাচোল যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে রাস্তার উঠে যাওয়া খোয়া টায়ারে ঢুকে ফুটো হয়ে যায়। আড়াই কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে গিয়ে মেরামত করতে পারি। আরেক পথচারী বলেন, আমরা এলাকার মানুষ। এই রাস্তা দিয়ে একবার নয় প্রতিদিনই যাতায়াত করতে হয়। নিত্যদিনই এই একই সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। এই রাস্তাতে আসলেই টায়াল পামচারের ঝুুঁকি থাকে। তাই রাস্তাটি কম সময়ের মধ্যে মেরামতের আহবান জানাচ্ছি। রাস্তাটি দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করে চলাচলের যোগ্য করে তোলার জন্য এলাকাবাসী দাবি জানিয়েছেন।
বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তানোরের সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন, এর আগে রাস্তাটি বিএমডিএ করলেও এখন এলজিইডি কলমা-বিল্লীর রাস্তা মেরামত করবে। দুই তিন মাস থেকে এমন আলোচনা চলছে।
তানোর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রাস্তা মেরামতের জন্য ফাইল ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রাস্তাটি মেরামতের কাজ শুরু করতে সময় লাগবে। ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু হতে পারে।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে