বাঘা প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘায় নিজ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি ও বহিস্কারের দাবিতে ছাত্রী ও অভিভাবকরা একজোট হয়ে আন্দোলন শুরু করেছে। শনিবার উপজেলার এমএইচ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের রাস্তায় মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে ওই দাবি করেন তারা। মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি রুস্তম মোল্লা, মাসুম,মাহাবুব,আব্দুল কুদ্দুস,নজরুল ইসলাম ও এলাকার ব্যাক্তিবর্গসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তারা জানান, ধরাছোয়ার বাইরে থেকে কোচিংয়ে পড়ানোর নাম করে ওই শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরেই অনৈতিক কর্মকান্ড করছিল। দুই সন্তানের জনক হয়েও ছাত্রীদের কাছে পরিচয় দিতেন অবিবাহিত বলে। গত সোমবার (৩০ এপ্রিল) বিদ্যালয় ছুটির পর নিজ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যান ইংরাজি শিক্ষক জাকির হোসেন । এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই শিক্ষকের লাম্পট্যের কথা প্রকাশ পায়।
জানা গেছে, শুধু ওই ছাত্রীকেই নয়, বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রীকে বশ করার চেষ্টা করেছিলেন বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক। তার মূল টার্গেটে ছিল কোচিং করতে যাওয়া ছাত্রীরা। লোভ দেখাতেন বেশি নম্বরের। যেসব ছাত্রী তার ফাঁদে পা দিতো, তাদের কাছে নিজের স্ত্রী ও ২ সন্তানের কথা গোপন করে ভাব জমাতো। পডানোর নাম করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিতো। এমন কলাকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তাদের বশে নিয়ে সুযোগমতো ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করতেন।
এমএইচ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরাজি শিক্ষক জাকির হোসেনের বাড়ি জেলার চারঘাট উপজেলার কালুহাটি গ্রামে। তার ব্যাক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে বলেন,আমি ষড়যত্রের শিকার। মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি তার। মানব বন্ধন কর্মসূচির পর ওই ছাত্রীর বাড়িতে গেলে তার মা বিউটি বেগমও বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেন। এ সময় ছাত্রীর সাথে কথা বলতে চাইলে বাড়িতে নেই বলে জানান তিনি। তবে ওই দিন স্কুল ছুটির পর তার মেয়ে বাড়িতে ফেরার সময় ওই শিক্ষক একই রাস্তায় মটোর সাইকেল চালিয়ে গেছেন বলে স্বীকার করেছেন তিনি।
এদিকে ছাত্রী অভিভাবকের সাথে শিক্ষকের সমাঝোতায় কোন অভিযোগ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক জানান, স্কুল ছুটির মধ্যে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী কে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন শোনার পর, তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করেছেন। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অবগত করেন এবং স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাইরে থাকায় এলাকার লোকজন নিয়ে বসেছেন। সভাপতি এলে পরিচালনা কমিটিকে নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন। শিক্ষকের গুরুত্বপূর্ণ পদে তার দোষ প্রমানিত হলে তাকে বহিস্কার করা হবে বলে জানান প্রধান শিক্ষক। একই সাথে আরও কোন শিক্ষক অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছে কিনা, সেটাও তদন্ত কওে দেখা হবে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার শাহিন রেজা জানান, প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছেন। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ