নাটোর প্রতিনিধি: বড়াইগ্রামে আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ। নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের এমপি অধ্যাপক আব্দুল ক্দ্দুুস নৌকা প্রতীক ও আওয়ামীলীগ সংগঠনকে শক্তিশালী না করে ব্যক্তিগত সুবিধা ও স্বার্থের লোভে বিএনপি ও জামায়েতের পক্ষে মাঠ সাজিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ একাংশের নেতৃবৃন্দ। শনিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। সাবেক চান্দাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আ’লীগের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মো. আতাউর রহমান জিন্নাহ্’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আ’লীগের স্বাস্থ্য-জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী।
এ সময় জেলা পরিষদ সদস্য ও গোপালপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু বকর সিদ্দিক লিখিত বক্তব্যে জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস তার নির্বাচনী এলাকা বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিএনপি-জামায়েত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। তিনি দলীয় প্রভাব ও সাংসদের ক্ষমতা খাটিয়ে প্রিজাইডিং অফিসার ও নিজস্ব ক্যাডার বাহিনীর মাধ্যমে বড়াইগ্রামের গোপালপুর ইউনিয়নের ৫ বার নির্বাচিত ও রাষ্ট্রিয় পদক প্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু বকর সিদ্দিককের নৌকা প্রতীককে পরাজিত করে প্রতিপক্ষ চশমা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ের মালা পড়িয়ে দেন। একই ভাবে তিনি চান্দাই ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা মো. আতাউর রহমান জিন্নাহ্’র বিপরীতে চশমা প্রতীকের প্রার্থীকে, গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক প্রাপ্ত মো. আইয়ুব আলীর বিপরীতে অবস্থান নিয়ে ঘোড়া প্রতীকের প্রাথীকে বিজয়ী করান। এছাড়া জোয়াড়ি ও মাঝগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে বিএনপি-জামায়েত প্রার্থীকে বিজয়ী করার চেষ্টা করেন। যার ফলে মাঝগাঁও ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হন।
এছাড়া বনপাড়া পৌরসভার কাউন্সিলর পদেও মহিলা আ’লীগ নেত্রী শরীফুন্নেছা শিরিণ ও যুবলীগ নেতা মুহিত কুমার সরকারকেও পরাজিত করতে এমপি ও তার অনুসারীরা বিএনপি-জামায়েত সমর্থিত প্রার্থীকে বিজয়ী করার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানে পৌরবাসীরা আ’লীগের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জয়ী করেন। একই ভাবে জেলা আ’লীগের স্বাস্থ্য-জনসংখ্যা সম্পাদক বিশিষ্ট চিকিৎসক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন এনে নৌকার পক্ষে প্রচার চালালে সেখানে এমপি আব্দুল কুদ্দুস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভেন্না কাঠের নৌকা প্রতীক তাকে দিয়েছে বলে উপহাস করে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। কিন্তু ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর ব্যপক গণ-সংযোগ ও নৌকা প্রতীকের প্রচারণা চালিয়ে নির্বাচনী মাঠ দখলে নেন এবং বিপুল ভোটে জয় লাভ করেন।
সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যে আরও জানানো হয়, এমপি কুদ্দুস টাকা ও সম্পদ গড়তেই নিজের ব্যক্তিস্বার্থে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নেন। তিনি নির্বাচন, বিদ্যুৎ, হত্যা, হামলা, মামলা ও নিয়োগ বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে আয় করেছেন বলেও বক্তারা অভিযোগ করেন। তার এই অপকর্ম রুখতে দুই উপজেলাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন বলে দাবি করে আগামী সংসদ নির্বাচনে তাকে দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার অনুরোধ জানান আ’লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আবুল কালাম জোয়ার্দ্দার, বনপাড়া পৌর মহিলা আ’লীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শরীফুন্নেছা শিরিণ, পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও কাউন্সিলর মুহিত কুমার সরকার, গুরুদাসপুরের নাজিরপুর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী প্রমূখ।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ