প্রেস বিজ্ঞপ্তি : রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সিটি কলেজ ছাত্রদল বিবৃতি দিয়েছেন। রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব এমদাদুল হক মিলন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি মুখে পদত্যাগ করেন দুর্নীতিবাজ সাবেক অধ্যক্ষ আমিনা আবেদিন। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই যে, সাবেক অধ্যক্ষ মহোদয় তার দুর্নীতির আমলনামা লুকাতেই সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি কে ভিন্ন খাতাতে প্রবাহিত করতে ছাত্রদলের উপরে দোষারোপের রাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছেন এবং তিনি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের “গড মাদার” হিসেবে শিক্ষাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।
আরও জানানো হয়, আমরা মনে করি, দুর্নীতিগ্রস্ত সাবেক অধ্যক্ষ এখনো ক্ষমতাচ্যুত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের প্রেসক্রিপশনে এসব ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছেন। সাবেক অধ্যক্ষর প্রতি সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগগুলো হচ্ছে:
১) রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সন্ত্রাসী মাহমুদ হাসান রাজীবকে সিটি কলেজে পাওয়ার স্টেশন নির্মাণের কাজ কাজ সহ বিভিন্ন কাজ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দিয়ে দেওয়া।
২) বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার থেকে শুরু করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনে বিভিন্নভাবে খুনি আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে লিঁয়াজো করে তার গদি টিকিয়ে রাখা।
৩) বিগত দিনে সিটি কলেজ ছাত্রলীগকে ছাত্র সংসদ এবং সিটি কলেজ হোস্টেলে একাধিক রুম টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে অধ্যক্ষর প্রত্যক্ষ মদতে ও অনুমতিতেই ।
৪) বিগত সময় ছাত্রলীগের অবৈধ অস্ত্র ভাণ্ডার হিসেবে সিটি কলেজের কমনরুম ব্যবহার হতে দেওয়া, ছাত্রলীগের ব্যক্তিগত ক্লাব ও গ্যারেজ হিসেবে সিটি কলেজ কে ব্যবহৃত হতে দেওয়া সহ নির্যাতন ও জুলুমের শিকার ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে না দাঁড়ানো।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ শাখা বিগত মাস থেকে এখন পর্যন্ত বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার থেকে এক দফার আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ সহ সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। উক্ত পদত্যাগ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা রাজনৈতিক হীন চক্রান্ত ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফসল উপভোগ করছে মুক্তিকামী জনতা এবং রাজশাহী সিটি কলেজ ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার সহ ছাত্র আন্দোলনের অর্জিত যে সাফল্য সে সাফল্যের সাথে শতভাগ সহমত পোষণ করে এবং আন্দোলনের চেতনা, উদ্দেশ্য ও গতিবিধির প্রতি পূর্ণ আস্থা ও শ্রদ্ধা রাখে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়া একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন যা সমসাময়িক সকল সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সকল যৌক্তিক দাবী দাওয়ার সাথে একত্বতা পোষণ করে।
প্রতিষ্ঠানে অভিভাবক হিসেবে বিগত দিনের অন্যায় জুলুমের তোষণকারী এবং দুর্নীতির ফিরিস্তি তার কাছে তুলে ধরলে তিনি সিনক্রিয়েট করা শুরু করেন এবং নিজের ছেলেকে ডেকে নিয়ে এসে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নাম ভাঙ্গান। সাবেক অধ্যক্ষ শুধু একজন শিক্ষক বা অভিভাবক হিসেবেই ব্যর্থ নন সামাজিকভাবেও নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন; নিজ ছেলেকে ও মেয়েকে তিনি নাস্তিকতার ও ইসলামবিদ্বেষীর শিক্ষা দিয়েছেন যার উদাহরণ অতীতের বিভিন্ন ফেসবুক স্ট্যাটাসে আমাদের কাছে প্রমাণ স্বরূপ আছে।
তারপরও, কোন শিক্ষকের অথবা অধ্যক্ষের এমন অপমানজনক বিদায় বা পরিণতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সিটি কলেজ শাখা সমর্থন করে না। বরং আমরা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ঘেরাও এর খবর জানতে পেরে অধ্যক্ষকে শান্তিপূর্ণভাবে বের করে দেওয়ার জন্য বা উদ্ধারের জন্যই পরবর্তীতে দায়িত্বশীলদেরকে প্রেরণ করেছিলাম।
বাংলাদেশের বাকি সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নেয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বা প্রধান আওয়ামী লীগের নিয়োগকৃত তোষণকারী হিসেবে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির মুখে পদত্যাকে বাধ্য হয়েছেন কিন্তু অতীত কর্মকাণ্ড বা দুর্নীতির দায় এড়াতে পারেন না। অচরেই তাদের এই ফ্যাসিবাদের মুখোশ উন্মোচিত হবে ইনশাআল্লাহ।
পরিশেষে রাজশাহী সিটি কলেজ ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ গণমাধ্যমে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চায়, রাজশাহী সিটি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক আজকের ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ বা পরপক্ষভাবে দায়ী নয় এবং গণমাধ্যম সহ বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত নেতৃবৃন্দ সহ সাধারণ অরাজনৈতিক শিক্ষার্থীদের সিম্পেথি পাওয়ার জন্য সাবেক অধ্যক্ষ মহোদয় একটি নাটক মঞ্চস্থ করেছেন। রাজশাহী সিটি কলেজ ছাত্রদল তার অতীত কর্মকান্ডের চুলচেরা বিশ্লেষণ এবং আজকের উদ্ভূত পরিস্থিতি ও ঘটনার জন্য যথাযথ তদন্ত দাবি করছে।
একই সাথে সিটি কলেজ ছাত্রদল এর নাম হেয় প্রতিপন্ন করার সাবেক অধ্যক্ষের বিভিন্ন ফেসবুক স্ট্যাটাস এবং মিথ্যা বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
বিএ..