খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: দুনিয়াতে আল্লাহর পথে আহ্বানের জন্যই নবি-রাসুলদের আগমন। আর এ কারণেই একজন মুমিনের জীবনের অন্যতম মিশন হলো মানুষের প্রতি দ্বীনের দাওয়াত দেয়া। নিজেদের জীবনে কুরআন-সুন্নাহর বিধি-বিধান বাস্তবায়নের পাশাপাশি পরিবার ও পাশ্ববর্তীদেরকে আল্লাহর দ্বীনের প্রতি আহ্বান করা মুমিন বান্দার আবশ্যক কর্তব্য।
এ কারণে আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে মুমিনদের একটি বড় দায়িত্বের নির্দেশ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘ন্যায় কাজের আদেশ দেয়া এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করা।’ ন্যায় কাজে আদেশ এবং অন্যায় কাজে নিষেধকে একত্রে বুঝায় ‘আল্লাহর পথে আহ্বান’।
কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা এ দাওয়াতের নির্দেশনা দিয়েছেন। বিভিন্ন ভাষায় এ দাওয়াতের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। কোথাও সরাসরি দাওয়াতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আবার কোথাও সৎ কাজের আদেশের কথা বলা হয়েছে; কোথাও অসৎ কাজের নিষেধ করেছেন। আর দ্বীন প্রতিষ্ঠা, প্রচার, তাবলিগ, নসিহত ও ওয়াজ বলেও দাওয়াতকে অভিহিত করা হয়েছে।
দাওয়াতকে যে নামেই বুঝানো হোক; মানুষের প্রতি দ্বীনের দাওয়াত পৌছানোও আবশ্যক করণীয় ইবাদত। আল্লাহ তাআলা মানুষকে লক্ষ্য বলে বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা জাহান্নামের আগুণ থেকে নিজে বাঁচ এবং তোমার আহল বা পরিবার-পরিজনকে বাঁচাও।’
মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে দ্বীনের দাওয়াত দেয়া হলো নবুয়তি কাজ। নবুয়তি কাজের আঞ্জাম দেয়া মুমিন মুসলমানের জন্য আবশ্যকীয় কাজ। সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ, তাবলিগ, প্রচার, নসিহত ও ওয়াজ করা ছিল নবি-রাসুলদের ওপর ফরজ দায়িত্ব। এ কারণে সব নবি-রাসুলই তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন। শিরক, কুফর ও পাপ কাজ থেকে নিষেধ করেছেন।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে ইরশাদ করেন, ‘হে রাসুল! আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে (কুরআনের বিধি-নিষেধ) তা আপনি প্রচার করুন। যদি আপনি তা না করেন তবে আপনি আল্লাহর বার্তা প্রচার করলেন না। (সুরা মায়েদা : আয়াত ৬৭)
আয়াতে বুঝা গেল আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াতের প্রচারই ছিল নবি-রাসুলদের প্রধান দায়িত্ব। আল্লাহ বলেন, ‘রাসুলগণের দায়িত্ব তো শুধু সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’ (সুরা নাহল : আয়াত ৩৫)
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আমি আমার প্রতিপালকের (পক্ষ থেকে) রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদেরকে (দ্বীনের) নসিহত করছি।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৬২)
ইসলামের বিধি-বিধানের এ দাওয়াতি মিশন পালনের বর্তমান দায়িত্ব হচ্ছে মুমিন মুসলমান, আলেম-ওলামাদের ওপর। যারা এ দায়িত্ব পালন করবে তারাই সফলতা লাভ করবে। আর দাওয়াত, আদেশ, নিষেধ, নসিহত ও ওয়াজ করা হলো উম্মতে মুহাম্মাদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য।
আল্লাহ তাআলা এ দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে কুরআনে উল্লেখ করেন, ‘আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম।’ (সুরা আল-ইমরান : ১০৪)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম জাতিকে সম্বোধন করে বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণে) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায় কাজের আদেশ এবং অন্যায় কাজের নিষেধ কর এবং আল্লাহকে বিশ্বাস কর।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১১০)
পরিশেষে,মানুষের প্রতি দাওয়াত দেয়া মুমিন মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। এ দায়িত্ব পালনে নবি-রাসুলদের ওয়ারিশ মুসলমানকেই এগিয়ে আসতে হবে। কুরআনের নির্দেশনাও তাই।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দ্বীনের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌছে দেয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ