খবর২৪ঘন্টা ডেস্ক: সুরেন্দ্র কুমার সিনহা পদত্যাগ করার তিন সপ্তাহেও এই পদে নতুন কাউকে নিয়োগ না দেয়ার সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহদে। তিনি বলেছেন, সরকার বিচার বিভাগ নিয়ে যা খুশি তাই করছে।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন। ‘মহান বিজয় দিবস ও গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি- এনপিপি।
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি, যিনি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করেছেন। আর তার পদত্যাগের পর ২২ দিন চলছে আজ।
প্রায় দেড় মাসের ছুটি শেষে গত ১০ নভেম্বর দেশে না ফিরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে সিঙ্গাপুর দূতাবাসের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। রাষ্ট্রপতি তা অনুমোদন করায় সেই দিন থেকেই প্রধান বিচারপতির পদটি শূন্য।
অর্থপাচার, আর্থিক অনিয়ম, নৈতিক স্খলনসহ ১১টি অভিযোগ থাকা সিনহা গত ২ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির কাছে করা এক মাসের ছুটির আবেদন করেন। এই আবেদন অনুমোদনের পর থেকেই বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিয়াকে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। তিনিই এখন দায়িত্ব পালন করছেন।
সেনা শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় থাকাকালে ১৩ দিন শূন্য ছিল প্রধান বিচারপতির পদ। সিনহার পদত্যাগের আগ পর্যন্ত এটাই ছিল এই পদ শূন্য থাকার সর্বোচ্চ নজির। ১৯৯০ সালের ১ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরী অবসরে যান। এরপর ১৪ জানুয়ারি বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
নতুন প্রধান বিচারপতি কবে নিয়োগ করা হবে সে বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের আছে একাধিক দিন প্রশ্ন করেও সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ পাওয়া যায়নি। আইনমন্ত্রী প্রতিবারই বলেছেন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ রাষ্ট্রপতির একান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়। আর কত দিনের মধ্যে এই পদে নিয়োগ দিতে হবে, সে বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির পদ একদিনের জন্যও শূন্য রাখা অসাংবিধানিক। কিন্তু কোন আইনের তোয়াক্কা না করে সরকার বিচার বিভাগ নিয়ে যা খুশি তাই করছে।’
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায়কে কেন্দ্রকরে সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আইনমন্ত্রী। তার অভিযোগ, সরকার উচ্চ আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করতেই নানা কাজ করছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবসন বিষয়ে চুক্তি নিয়ে মিয়ানমার বাংলাদেশকে ফাঁদে ফেলেছে বলেও দাবি করেন মওদুদ। তার আশঙ্কা, মিয়ানমারের এই নাগরিকদেরকে নিজ দেশে পাঠাতে পারবে না সরকার।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘মিয়ানমারের সাথে চুক্তিতে উনিশটি শর্তের কথা বলা হয়েছে। যা কোন দিন কার্যকর সম্ভব হবে না।’
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার নিশ্চিত করে যে কোনো সময় নির্বাচন দিলেও বিএনপি তাতে অংশ নেবে বলেও জানান মওদুদ। তবে সরকারের আগাম নির্বাচন দেয়ার মতো সাহস নেই বলেও মনে করেন তিনি।
জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্দলীয় সরকারের দাবি ছাড়াও ভোটের ৯০ দিন আগে সংসদ ভেঙে দেয়ারও দাবি জানান বিএনপি নেতা।
খবর২৪ঘন্টা/নই