আরো একবার চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ। উভয় লেগেই জয় নিয়ে শেষ চারে পা রাখল লস ব্লাঙ্কোসরা। শেষ আটের দ্বিতীয় লেগে রদ্রিগোর জোড়া গোলে মঙ্গলবার চেলসিকে ২-০ গোলে হারিতেছে তারা। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-০ গোলে জয় নিয়ে ১৬তম বার চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিতে রিয়াল মাদ্রিদ।
নিজেদের মাঠে প্রথম লেগে ২-০ গোলে জয় পাওয়ায় বৃহস্পতিবার স্ট্যাম্পফোর্ড ব্রিজে অনেকটাই নির্ভার ছিল রিয়াল। জয় তো দূর, ড্র কিংবা ১-০ গোলে হারলেও সেমিফাইনালে পা রাখত কার্লো আনচেলেত্তির দল। বিপরীতে পাহাড়সম চাপ মাথায় মাঠে নামে চেলসি। সময়টা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না তাদের। শেষ তারা বিজয়ী হাসি হেসেছিল আজকের ম্যাচসহ সাত ম্যাচ আগে।
অবশ্য প্রথমার্ধের মঙ্গলবার রিয়াল মাদ্রিদে বিপক্ষে বেশ ছন্দময় ফুটবল উপহার দিয়েছে তারা। নিজেদের মাঠে বেশ উজ্জীবিত লেগেছে অল ব্লুজদের। প্রথমার্ধে বেশ সাজানো ফুটবল খেলেই বলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে রেখেছে তারা, আক্রমণেও ছিল আধিপত্য। সেরা সুযোগটা তারা পেয়ে যায় ম্যাচের দশ মিনিটেই৷
দশম মিনিটে হাভার্টেজ এনগুলু কান্তেকে লক্ষ্য করে বল পাঠায়, বলটি নিজের নিয়ন্ত্রণেও নিয়ে নেন কন্তে। তবে এরপর যা করেন, সহজভাবে বললে বলা যায় রিয়াল মাদ্রিদের ডিফেন্ডারদের কাজটাই করে দিয়েছেন তিনি। মাত্র ১২ গজ দূরে থেকে গোল রক্ষককে একা পেয়েও বল পাঠান অনেকটা বাহিরে।
চেলসি আরো একটা দারুণ সুযোগ পায় প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে৷ তবে এই সুযোগ থেকেও গোল আদায় করে নিতে পারেনি ব্লুজরা। মাত্র ছয় গজ দূরে থেকেও মাদ্রিদের গোল রক্ষক কোর্তোয়াকে পরাস্ত করতে পারেনি কুকুরেলা। সুবাদে গোলহীন সমতা নিয়েই শেষ হয় প্রথমার্ধ।
প্রথমার্ধে একাধিক সুযোগ অবশ্য তৈরী করেছিল রিয়াল মাদ্রিদও। ম্যাচের ২০তম মিনিটে কারভাজালের পাস থেকে জায়গামতো বল পেয়েও জালে জড়াতে পারেননি রদ্রিগো। তার শট প্রতিহত হয় ক্রসবারে। ৩২তম মিনিটে কেপার হাতে বল তুলে দেন মডরিক। এর ১০ মিনিট পর সেই মডরিকই সুযোগ তৈরী করে দেয় রিয়াল মাদ্রিদকে, তবে এবার হতাশ করেন ভিনিসিউস জুনিয়র।
দ্বিতীয়ার্ধেই নিজেদের খুঁজে পায় রিয়াল মাদ্রিদ। মাঠে নেমেই বেশ সাজানো আক্রমণ করতে থাকে তারা। ফলাফল স্বরূপ ৫৮তম মিনিটে গোলও পেয়ে যায় লস ব্লাঙ্কোসরা। ভিনিসিউসের পাস থেকে গোল করেন রদ্রিগো। ম্যাচে ১-০ ও দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ।
৮ মিনিট পরই দ্বিতীয় গোলের দেখা পেয়ে যেতে পারতো লস ব্লাঙ্কোজরা। তবে আরো একবার হতাশ করেন করিম বেনজেমা। রদ্রিগো ও ভিনিসিউস মিলে সুযোগ তৈরী করে দেন তাকে, তবে মাত্র ছয় গজ দূরে থেকেও বেনজেমা বল পাঠাতে পারেননি লক্ষ্যে; উঠিয়ে দেন চেলসি গোলরক্ষক কেপার হাতে।
তবে অষ্টদশ মিনিটে নিজেদের দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। এই গোলও আসে রদ্রিগোর পা থেকে। যদিও বলে পা ছুঁয়ে জালের দিশা পাইয়ে দিয়েছেন রদ্রিগো, তবে চেলসির রক্ষণ ভেঙে এখানে বড় অবদান ছিল এন্তোনিও রুডিগার ও ভালভার্দের। বিশেষ করে ভালভের্দে যেভাবে বল সাজিয়ে দিয়েছিলেন রদ্রিগোকে, সেখান থেকে গোল না পেলে অপরাধই হতো বটে।
এরপর আর কোনো গোল না হওয়ায় ০-২ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। যা তাদের পৌঁছে দেয় রেকর্ড ১৬তম বার চ্যাম্পিয়ন লিগের সেমিফাইনালে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২বার করে শেষ চারে উঠেছে বার্সালোনা ও বায়ার্ন মিউনিখ।
বিএ/