বাগমারা প্রতিনিধি: অবশেষে রাজশাহীর বাগমারায় বহুল আলোচিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী পদে ৪১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিপরীতে ২৫০জন আবেদনকারী ছিলেন। এর মধ্যে ৪১জন আবেদনকারীর নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে আজ শনিবার। নিয়োগ বাণিজ্যে অনেকেই সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন বলে জানা যায়।
সরেজমিনে ও ভুক্তভোগী সুত্রে জানা যায়, রাজশাহীর বাগমারায় তৃতীয় ধাপে ৪১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী পদে ৩বছর আগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে শুরু হয় নিয়োগ বাণিজ্য। একই পদে একই বিদ্যালয়ের নিয়োগের নামে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫-১৩লক্ষ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে বলে জানা যায়। পরবর্তীতে নিয়োগ বোর্ডকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে মামলা করলে ওই সময় বিজ্ঞ উচ্চ আদালত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত ঘোষণা করে।
মূলত তখন থেকেই চাকুরী প্রার্থীরা বেকায়দায় পড়ে যায়। পরবর্তীতে সরকারি প্রজ্ঞাপন সংশোধন পূর্বক পূর্বের নিয়োগ বোর্ডকেই বলবৎ রেখে আদালত রায় প্রকাশ করে। তার পর থেকে বেশ কয়েকবার বাগমারায় নিয়োগ বোর্ডের দিন তারিখ ঘোষণা করার পরেও অজ্ঞাত কারণে স্থগিত হয়ে যায়। এতে চাকুরী প্রার্থীরা দিশেহারা হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাগমারার কার্যালয় হতে দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগের জন্য মৌখিক পরীক্ষার দিন ১৬ ও ১৭ তারিখ ধার্য করা হয়।
তারই প্রেক্ষিতে শুক্রবার ও শনিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৬ তারিখে ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ও গতকাল শনিবার ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী পদে মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষা শেষ চাকুরী প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা ও অতংঙ্ক দেখা দেয়। কারণ একই বিদ্যালয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫-১৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে। বিপদে পড়েছে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। উক্ত নিয়োগ বোর্ড ৬ সদস্য বিশিষ্ট গঠিত হয়।
উক্ত নিয়োগ বোর্ডে সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সদস্য সচিব উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মনোনিত ১জন করে প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক চাকুরী প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদেরকে চাকুরী দিবে বলে ৩বছর আগেই টাকা পয়সা নিয়েছে। অথচ দীর্ঘদিন পর নিয়োগ বোর্ড হওয়ায় পুনরায় মোটা অংকের টাকা যারা দিতে পেরেছে তারাই চাকুরীর দৌড়ে এগিয়ে আছে। আমাদের টাকারও কোন হিসাব নেই চাকুরীরও কোন নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। আমরা ভিটা মাটি জমি বিক্রি করে তাদেরকে চাহিদা মতো টাকা দিয়েছিলাম। এব্যাপারে দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিউল ইসলাম বলেন, কে কাকে টাকা দিয়েছে সেটা আমাদের জানা নেই। আমরা মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি।