সিলেটের সব জায়গায় বন্যার পানি। পানির স্রোত অসহায়ত্বের সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করেছে। ভেঙে যাচ্ছে কাঁচা ঘর-বাড়ি। পানির ওপর ভাসছেন মানুষ, ভাসছে প্রাণীরা। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বন্যার এমন লোমহর্ষক চিত্র দেখেননি সিলেটবাসী। মানবিক সংকটের এই দু:সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সেনাবাহিনী।
এদিকে সিলেট নগরীর ২৫,২৬,২৭ নং ওয়ার্ড সমুহের (দক্ষিণ সুরমা) এলাকায় নতুন করে কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে।দক্ষিণ সুরমার ভার্থখলা, খোজার খলা, মেনিখলা, কদমতলী, বরইকান্দিসহ আশপাশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। সিলেটের পুরাতন রেল স্টেশন ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা এখন পানির নিচে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের বন্যা দেশের আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। উজান থেকে আসা ঢলে সিলেট বিভাগের ৮০ শতাংশ এলাকা এখন পানির নিচে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা ডুবে সোমবারের আগে এই পানি নামার সম্ভাবনা কম। কারণ উজানে আগামী দুই দিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে।
জানা গেছে, বন্যা পরিস্থিতির ভয়ঙ্কর অবনতি হওয়ায় দেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ। অধিকাংশ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। টেলিফোন নেটওয়ার্ক অকার্যকর হয়ে গেছে। বিদ্যুৎবিহীন রয়েছেন সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় ৩ লাখ মানুষ। অর্ধাহারে অনাহারে পানির সঙ্গে যুদ্ধ করছেন সিলেট-সুনামগঞ্জের অন্তত ২০ লাখ মানুষ।
সিলেট নগরের তিরিষটি এলাকার পাশাপাশি জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, সিলেট সদর, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, বিশ্বনাথ ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ২ হাজার গ্রাম বন্যার পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে শুধু সিলেট জেলার কমপক্ষে ১০ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। একইসঙ্গে সুনামগঞ্জেও প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি ।
এদিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির আরটিভি নিউজকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে জিও ব্যাগ ফেলে সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুতের গ্রিড উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ ঠেকাতে কাজ করছেন। তাদের সঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মীরা কাজ করছেন। খাদ্য সংকটের পাশাপশি রয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট।
বিএ/