সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে সুদানের সেনাবাহিনী। গেল কয়েক দিন আগে সেনাবাহিনীর গুলিতে কয়েকজন বিক্ষোভকারী নিহত হন। এবার দেশটিতে দায়িত্বপালনরত এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ওই সাংবাদিক কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার ব্যুরো চিফ হিসেবে দেশটিতে কাজ করছিলেন। রোববার (১৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা ও ডয়চে ভেলে।
রোববার আলজাজিরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সুদানে তাদের ব্যুরো চিফকে গ্রেপ্তার করেছে সে দেশের সেনা সরকার। এর আগে তার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছিল। কেন তাকে আটক করা হয়েছে, সে বিষয়ে অবশ্য সেনা সরকার কিছু জানায়নি। আলজাজিরাও সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। তবে মনে করা হচ্ছে, গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলার জন্যই আটক হয়েছেন ওই সাংবাদিক।
আটককৃত ওই সাংবাদিকের নাম আল মুসল্লামি আল কাব্বাশি। রোববার তাকে আটক করা হয়। তার বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা। তবে পরিবারের আর কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
মাসখানেক আগে সুদানে সেনা অভ্যুত্থান হয়। শাসনক্ষমতা দখল করেন দেশটির সেনাবাহিনীর জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহান। বেশ কিছু মন্ত্রী এবং নাগরিক সমাজের নেতাকেও সেসময় আটক করা হয়। তবে পরে জাতিসংঘের চাপে চার মন্ত্রীকে মুক্তি দেওয়া হয়।
সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই সুদানে কার্যত নাগিরক আন্দোলন শুরু হয়েছে। নাগরিক সমাজের একটি বড় অংশ গণতন্ত্রের জন্য রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। সুদানের বেশ কিছু গণমাধ্যমও তা সমর্থন করছে।
গত শনিবার ও রোববার রাজধানী খার্তুমসহ একাধিক জায়গায় বিশাল বিক্ষোভ হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। অভিযোগ রয়েছে, নিরস্ত্র মানুষের বিক্ষোভ বন্ধ করতে তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে সেনা এবং পুলিশ। গণতন্ত্রপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন জানিয়েছে, রাজধানীর ঘটনায় অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বহু ব্যক্তি গুলির ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নাগরিক সমাজের একাংশের বক্তব্য, আলজাজিরার ব্যুরো চিফ গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন বলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের চেষ্টা হচ্ছে বলে আগেই অভিযোগ উঠেছিল।
জাতিসংঘ প্রথম থেকেই সেনা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। একাধিক বিষয়ে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়েছে। সাংবাদিককে আটক করা নিয়ে জাতিসংঘ কোনো মন্তব্য করে কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
বিএ/