করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সারাদেশের ন্যায় রাজশাহী মহানগর ও আশেপাশের জেলায় চলছে সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন। অপ্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া মানুষকে ঘরে ফেরাতে মাঠে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। পুলিশ ও র্যাবের পাশপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি মাঠে রয়েছে। নগরের প্রবেশ পথগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত ছিল। বিভিন্ন জেলা থেকে নগরের উদ্দেশ্যে আসা যানবাহনকে ফিরিয়ে দেয়া হয় ও নগরের প্রবেশ করা কিছু যানবাহনকে জরিমানাও করা হয়। নগরে শপিংমল ও দোকানপাট এবং মার্কেট বন্ধ রয়েছে। কাঁচা বাজার ছাড়া সবকিছু বন্ধ রয়েছে। নগরের অভ্যন্তরে গাড়ীও কম চলাচল করছে। অটোরিক্সা ও রিক্সাও চলাচল করতে দেয়া হচ্ছেনা। এমনকি মোটরসাইকেল নিয়ে বের হওয়া মানুষকেও ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। রোববার ১৪ দিনের লকডাউনের তৃতীয় দিন ছিল। পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপনের পরে কর্মমুখী মানুষজন কর্মস্থলে ফিরতে ব্যাপক বিপাকের মধ্যে পড়েছেন। অনেক মানুষকেই চাকুরী বাঁচানোর জন্য ছোট ছোট যানবাহনে দূরের গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস্তা ও মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
জানা গেছে, করোনা করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৭ দিনের সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করা হয় গত শুক্রবার (১১ জুন) বিকেল ৫টা থেকে। লকডাউন চলে ১৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত। লকডাউন ঘোষণার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাইরে না বের হওয়ার জন্য মাইকিং ও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। ঘরে থাকার জন্য নগরবাসীকে অনুরোধ জানানো হয়। অন্যান্য বারের লকডাউনে কিছু দোকানপাট ও যানবাহন চলাচল করলেও এবার ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। সকাল থেকেই নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচাবাজার ও ফার্মেসী ছাড়া সবকিছুই বন্ধ ছিল। পুলিশের পক্ষ থেকেই বাজার এলাকা এবং পাড়া-মহল্লায় মনিটরিং করা হয়। এরপরও সংক্রমণ না কমায় দ্বিতীয় দফায় আরো ৭ দিন লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়া হয়। তারপরও তৃতীয় দফায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর পর সারাদেশেই লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
ঈদুল আযহা উপলক্ষে কয়েকদিন লকডাউন শিথিল করা হলেও আবার ২৩ জুলাই থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। রোবার ছিল ছিল তৃতীয় দিন। এদিন বাইরে থেকে শহরে প্রবেশ করা তেমন মানুষজনকে দেখা যায়নি। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ছাড়া তেমন দোকানপাট খোলা রাখতে দেখা যায়নি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত লকডাউন কঠোর থাকলেও বিকেলে অনেকটা ঢিলেঢালা হয়ে যায়। এ পর্যন্ত রাজশাহীতে করোনায় ২২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহী জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ২২ হাজার ৭২৪ জনের। শনাক্তের বেশির ভাগ রাজশাহী মহানগর এলাকায় ১৮ হাজার ৩২০ জন। বাঘা উপজেলায় ৫৪৬ জন, চারঘাট উপজেলায় ৬৩৩ জন, পুঠিয়া উপজেলায় ৫৮৭ জন, দুর্গাপুর উপজেলায় ৪৬৫ জন, বাগমারা উপজেলায় ৪৩১ জন, মোহনপুর উপজেলায় ৩৩৯ জন, তানোর উপজেলায় ৩৮১ জন, পবা উপজেলায় ৫৭৮ জন ও গোদাগাড়ীতে ৪৩০ জন। রাজশাহী জেলায় শনাক্তের হার ১৬ শতাংশ। রাজশাহী জেলায় প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ১২ এপিল ও নগরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১৫ মে। রাজশাহী জেলায় করোনায় মোট ১৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এস/আর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।