প্রমত্তা পদ্মার পানি বাড়ার সাথে সাথে চারঘাট উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে। উজান থেকে বেয়ে আসা পানি ও অসময়ের অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারনে পদ্মা নদীর পানি ব্যপকহারে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। এতে উপজেলার পদ্মা নদী তীরবর্তী এলাকা গোপালপুর, পিরোজপুর, রাওথা,চন্দনশহর, ইউসুফপুর, টাঙ্গন এর মানুষেরা ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারছে না। বছরের পর বছর ভাঙ্গনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে টাঙ্গনের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাওথার একটি মসজিদ ও নদীতীরবতী অসংখ্য ঘরবাড়ি। নদী ভাংগনের কবলে পড়ে নদী তীরবতী এলাকায় অনেক মানুষ বাড়িঘর সহায় সম্বল এমনকি ভিটে মাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। সর্বনাশা পদ্মার করাল গ্রাসে প্রতিবছর একটু একটু করে
ভিটে মাটি হারিয়ে অনেকে হচ্ছে গৃহহীন ও ভুমিহীন। ভাঙ্গনের কবলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে হাজরাহাটির পুরো মৌজা, চন্দনশহরের অধিকাংশ এলাকা, রাওথা ও পিরোজপুর মৌজার অনেক এলাকা। এবছর পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙ্গন প্রকট হলে উপজেলার পদ্মার তীরবর্তী এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষগুলো হুমকীর মুখে পড়বে বলে জানান চারঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়াড মেম্বার তজলুল হক।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইউসুফপুর ইউনিয়নের টাঙ্গন ও রাওথা গ্রামের নদীতীরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়ে গেছে। রাওথা চাটাইপাড়ার এলাকার নদীতীরবর্তী বাসিন্দা ফকির মোহাম্মদ (৭০) ও মুনছার (৬০) বলেন আমরা চরম আতংকের মধ্যে আছি, কখন জানি নদীর পানির জোয়ারে কাচাঁবাধ ভেঙ্গে
চাটাইপাড়া জামে মসজিদ ও আমাদের বাড়ীঘর নদী গর্ভে চলে যায়।
উল্লেখ্য যে, চারঘাট সীমানায় পদ্মার প্রায় ২০ কি:মি: দীর্ঘ তীরবর্তী এলাকা রয়েছে যার অধিকাংশ তীরবর্তী জায়গায় মানুষ বসবাস করে। এই তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৮ কি:মি: নদীতীরবর্তী এলাকা বøক দিয়ে পাঁকা বাধ দেয়া আছে এবং বাকি তীরবর্তী এলাকা অরক্ষিত বা কাঁচাবাধ। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলে বাধে ভাঙ্গন ধরলে স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোডের সহায়তায় বালু ভর্তি জিওবি ব্যাগ ফেলে সাময়িকভাবে কাচাঁ বাধ রক্ষার জন্য চেষ্টা করা হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে বাধ রক্ষায় তা অকার্যকর।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম মোতুজা বলেন, চারঘাট ও বাঘা উপজেলার নদী তীরবর্তী মানুষের ঘরবাড়ি ও জমি রক্ষার্থে ৭শত ২২ কোটি ২৪ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় বাঘা উপজেলার ১২ কি:মি: নদী ড্রেজিং এবং চারঘাট ও বাঘা উপজেলার ৫ হাজার ১শত মিটিার ব্লক দিয়ে পাকা বাঁধ তৈরি হবে। নদীর বাধ নির্মান প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সামিরা বলেন, চলমান প্রকল্পের মাধ্যমে টাঙ্গন ও রাওথার কাচাঁ বাধ বøক দিয়ে পাকা বাধ তৈরির কাজ শুরু হবে। পাকা বাধ তৈরি সম্পন্ন হলে এসকল নদীতীরবতী এলাকাগুলো নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে বলে তিনি মনে করেন। তবে সাময়িকভাবে জিওবি ব্যাগ ফেলে ফাটল বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এস/আর